শেষ ওভারে চিটাগাং কিংসের প্রয়োজন ছিল ১৫ রান, ক্রিজে দুই টেলএন্ডার। হাতে ছিল দুই পেসার মুশফিক হাসান ও জেসন হোল্ডার। কিন্তু অভিজ্ঞ হোল্ডারের বদলে মেহেদী হাসান মিরাজ বল তুলে দেন তরুণ মুশফিকের হাতে, আর তাতেই ম্যাচ ফসকে যায় খুলনা টাইগার্সের। শেষ বলে হারের পর মুশফিককে শেষ ওভার করানোর ব্যাখ্যা দিয়েছেন খুলনা অধিনায়ক, পাশাপাশি হোল্ডারকেই দোষ দিয়েছেন তিনি।  

বুধবার রাতে মিরপুরে বিপিএলের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে ২ উইকেটে জিতে ফাইনালে উঠেছে চিটাগাং কিংস। অথচ ম্যাচের বেশিরভাগ সময়ই এগিয়ে ছিল খুলনা। কিন্তু শেষ ওভারে ভুল সিদ্ধান্তের কারণে দলকে হারতে হলো বলে সমালোচনা হচ্ছে।  

শেষ ওভারে মুশফিককে বল দেওয়া নিয়ে মিরাজ বলেন, ‘পরিকল্পনা অনুযায়ী হোল্ডারকে বল দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ১৮তম ওভারে সে এক ছক্কা ও এক চার খেয়ে ১২ রান দিয়ে দিয়েছে। এমন একজন অভিজ্ঞ বোলার যদি এমন পরিস্থিতিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে দলের জন্য কাজটা কঠিন হয়ে যায়।’  

১৮তম ওভারে আলিস আল ইসলামের ছক্কা ও চারে ১২ রান দিয়ে বসেন হোল্ডার। পরের ওভারে হাসান মাহমুদ মাত্র ৬ রান দিয়ে ভালো করেন। ফলে শেষ ওভারে ১৫ রানের লক্ষ্য দাঁড়ায়, যা ডিফেন্ড করা সম্ভব ছিল বলে মনে করেন অনেকে। হোল্ডারের আগের ওভার ভালো না হওয়ায় তার ওপর ভরসা রাখতে পারেননি মিরাজ, ‘যদি মুশফিককে ১৯তম ওভারে বল দিতাম আর সে ১২-১৩ রান দিয়ে দিত, তাহলে শেষ ওভারেও ১৫ রান লাগত। এজন্য হোল্ডারের ওপর ভরসা করতে পারছিলাম না।’  

তবে মুশফিককে বল দেওয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কারণ শেষ ওভারে ১৫ রান প্রয়োজন হলেও, উইকেটে ছিল দুই টেলএন্ডার। ম্যাচ তখনও খুলনার দিকেই হেলে ছিল। কিন্তু মুশফিক ১৫ রান দিয়ে বসেন এবং খুলনাকে বিদায় নিতে হয় বিপিএল থেকে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ১৫ র ন

এছাড়াও পড়ুন:

যে কারণে ইরানের তেল ও গ্যাস স্থাপনায় হামলা

ইরানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তেল ও গ্যাস স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। মধ্যপ্রাচ্যের এ দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের মধ্যে কয়েক দশক ধরে বৈরিতা চলছে। তবে এবারই প্রথম ইসরায়েল ইরানে হামলা চালানোর পর দুই পক্ষ সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। দুই পক্ষে পাল্টাপাল্টি হামলা তীব্র হতে থাকায় বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের বাজারে অস্থিরতা তৈরির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

গত শনিবার গভীর রাতে ইরানের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েল একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি ডিপোতে হামলা চালিয়েছে। একই সঙ্গে রাজধানী তেহরানে একটি তেল শোধনাগারেও আগুন ধরে যায়। সেখানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছেন।

বিশ্বের অন্যতম বড় গ্যাসক্ষেত্র ‘সাউথ পার্স’-এ ইসরায়েলের হামলায় আগুন লাগার পর ইরান আংশিকভাবে এ ক্ষেত্রে উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। ইরান কাতারের সঙ্গে ভাগাভাগি করে এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন করে থাকে।

ইসরায়েল নজিরবিহীনভাবে ইরানের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানোয় মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম আরও বাড়তে পারে। দুই দেশই একে অন্যের ভূখণ্ডে আরও বড় ধরনের হামলার হুমকি দিচ্ছে।

ইরান বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাস ও তৃতীয় বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল মজুতের অধিকারী– এই তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তথ্য প্রশাসনের (ইআইএ) দেওয়া। ফলে দেশটির জ্বালানি অবকাঠামো দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তু ছিল। তবে এতদিন ইসরায়েল ইরানের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা এড়িয়ে চলছিল, বিশেষ করে তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের চাপ ছিল। কিন্তু এবার তা বদলে গেছে।

গত শনিবার রাতে তেহরানের উত্তর-পশ্চিমে শাররান জ্বালানি ডিপো ও শহরের দক্ষিণে শার-রে অঞ্চলে অবস্থিত দেশের অন্যতম বৃহৎ তেল শোধনাগারে বড় ধরনের আগুন লাগে।  এ ছাড়া ইরানের দক্ষিণ বুশেহর প্রদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় গ্যাসক্ষেত্র সাউথ পার্স লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। 

হামলায় সাউথ পার্সের ‘ফেইজ ১৪’ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে আগুন লাগে। ফলে এখানে দৈনিক ১ দশমিক ২ কোটি ঘনমিটার গ্যাস উৎপাদনকারী একটি অফশোর প্ল্যাটফর্ম বন্ধ হয়ে গেছে।

ইসরায়েলের হামলার প্রথম দিনে তেল ও গ্যাস স্থাপনা বাদ পড়লেও বাজারে তেলের দাম প্রায় ৯ শতাংশ বেড়ে যায়। সোমবার  বিশ্ববাজারে তেলের দামে আরও বড় উল্লম্ফন হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

মধ্যপ্রাচ্য ইনস্টিটিউটের গবেষক অ্যালান এয়ার বলেন, ইসরায়েল চায়, ইরানের ওপর হামলায় যুক্তরাষ্ট্রও জড়িয়ে পড়ুক। তাদের লক্ষ্য, ইরানের এই সরকারের পতন ঘটানো। ইরানের সামরিক প্রতিক্রিয়া ছাড়া উপায় নেই। কারণ, দেশের অভ্যন্তরে সম্মান রক্ষার বিষয় আছে। কিন্তু ইসরায়েলে বড় ধরনের ক্ষতি করার মতো ক্ষমতা ইরানের নেই। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইরানের বন্ধুর সংখ্যা কম। আর থাকলেও ইসরায়েল পরিষ্কারভাবে দেখিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক মতামতকে পাত্তা দেয় না– বলেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ