ভালোবাসা প্রকাশ, প্রাপ্তি ও অনুভবকে আরও রাঙিয়ে দিতে বিভিন্ন দিন উদযাপন করা হয়। আর সেই দিন শুরু হয় ফেব্রুয়ারির ৭ তারিখ থেকে ১৪ তারিখ পর্যন্ত। কোন তারিখে কোন দিন উদযাপন করা হয় চলুক আরেকবার মনে করা যাক।
৭ ফেব্রুয়ারি: ভ্যালেন্টাইন্স সপ্তাহের প্রথম দিন ৭ ফেব্রুয়ারি। এই দিনটি রোজ ডে। এই দিনে প্রিয়জনকে গোলাপ দিয়ে ভালোবাসা প্রকাশ করার দিন। রোজ ডে-তে শুধুমাত্র প্রেমিক-প্রমিকারাই তাদের সঙ্গীকে ফুল দেন না, যে কেউ তার প্রিয় মানুষটিকে লাল গোলাপ দিয়ে ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারেন। কারণ লাল গোলাপ ভালোবাসার প্রতিনিধিত্ব করে।
৮ ফেব্রুয়ারি: দিনটি প্রোপোজ ডে। ভ্যালেন্টাইন্স সপ্তাহের দ্বিতীয় দিনটিতে প্রেমের প্রস্তাব দেওয়ার দিন হিসেবে উদযাপন করা হয়। প্রোপোজ ডেতে ভালোবাসার মানুষকে মনের কথা জানিয়ে দিতে পারেন।
৯ ফেব্রুয়ারি: এই দিনটি চকোলেট ডে। শুধুমাত্র সঙ্গীরাই একে অপরকে নয়, চকোলেট ডে-তে যে কেউ তার ভালোবাসার মানুষকে চকোলেট উপহার দিতে পারেন।
১০ ফেব্রুয়ারি: মজার একটি দিবস হচ্ছে টেডি ডে। এই বিশেষ দিনে পছন্দের মানুষকে টেডি বিয়ার উপহার দিতে পারেন। ছোট বড় নানা মাপের টেডি বিয়ার পাওয়া যায় বাজারে। পছন্দ মতো কিনে নিন আর উপহার দিয়ে প্রিয় মানুষের মন জয় করে নিন।
১১ ফেব্রুয়ারি: সপ্তাহের এই দিনটি প্রমিস ডে। যা ভালোবাসার জন্য খুব জরুরি। এই দিনে প্রিয়জনকে কোনো কথা দিতে পারেন। আগামী বছরের পরিকল্পনার কথা জানাতে পারেন। তার জন্য আমার সাধ্যের মধ্যে কি কি করতে পারেন, সেগুলো কীভাবে করবেন ; এই সব কিছু জানাতে পারেন। এতে সম্পর্ক মজবুত হবে।
১২ ফেব্রুয়ারি: ভালোবাসা প্রকাশের একটি মাধ্যম হচ্ছে প্রিয়জনকে জড়িয়ে ধরা। ১২ ফেব্রুয়ারি হাগ ডে। যদি আপনি কাউকে ভালোবাসেন, এই বিশেষ দিনে তাকে একবার জরিয়ে ধরতে পারেন।
১৩ ফেব্রুয়ারি: ভ্যালেন্টাইন সপ্তাহের অন্যতম একটি দিন হচ্ছে ‘কিস ডে’। এটিও ভালোবাসা প্রকাশের আরেকটি আন্তরিক অঙ্গভঙ্গি।
১৪ ফেব্রুয়ারি: অবশেষে সেই বিশেষ দিন ভ্যালেন্টাইন্স ডে।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
গোপালগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন নামঞ্জুর
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পথসভাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ১৮ জন শিশু রয়েছে। এর মধ্যে গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
গতকাল বৃহস্পতিবার সাত শিশুর জামিন আবেদনের শুনানি হয়। গোপালগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) সৈয়দ আরাফাত হোসেন তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এর আগে সোম ও মঙ্গলবার পাঁচ শিশুর জামিন আবেদন করা হয়। তাদের জামিন নামঞ্জুর করা হয়। ওই পাঁচজনের জামিন আবেদন করা হয়েছিল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে।
কারাগার সূত্র জানায়, গত ১৬ জুলাই সংঘর্ষের পর ১৭ ও ১৮ জুলাই জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৮ শিশুকে আটক করে পুলিশ। ১৮ জুলাই তাদের আদালতে হাজির করে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। পরে ২১ জুলাই তাদের যশোরের পুলেরহাট শিশু-কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।
আদালতের নথি অনুযায়ী, গ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বয়স, ঠিকানা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ নেই। তবে গতকাল পর্যন্ত ১২ শিশুর নাম ও পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে চার পরিবারের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। অভিভাবকদের অভিযোগ, তাদের সন্তানদের কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই আটক করা হয়েছে।
আরও পড়ুনগ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ২৭ জুলাই ২০২৫একজন শিশুর বাবা বলেন, ‘সংসারে অভাব–অনটন, নিজেরাই সংসার চালাইতে পারি না। আমার কষ্ট দেখে ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজে যোগ দেয়। সে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রমজান শেখ নামের একটা রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করে। কাজের সময় পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে যায়।’
আরেক শিশুর ভ্যানচালক বাবা বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, কোথাও কোনো কাইজের মধ্যে নেই। তিনডা ছেলে, বড়টা একটা মাদ্রাসার শিক্ষক। ছোট দুইডা এখনো পড়ে। যারে ধরছে, সে সবার ছোট। ওই দিন সকালে আমার মাদ্রাসায় গেছে, পরীক্ষা ছিল। পরে দুপুরের আগে আমি নিজে যাইয়ে নিয়ে আসছি। সেদিন বাড়িতেই ছিল। পরের দিনও সারা দিন বাড়ি ছিল, সেদিন তো কারফিউ ছিল। আসরের নামাজের পর আমার কাছ থেকে ২০ টাকা নিয়ে গেছে চটপটি খাইতে। পাশে মাদ্রাসার সামনেই চটপটির দোকান বসে। সেই হান দে ওরে ধইরে নিছে।’
ওই ব্যক্তি আরও বলেন, ‘ধরার ঘণ্টাখানেক পর থানা থেইকা ফোন দিছে, কয় ছেলে ধরা হইছে। আমরা থানায় গিয়া অনেক কইছি, ও তো কোথাও যায় না, কোনো গ্যাঞ্জামের ছেলে না। মাদ্রাসায় পড়ে। কিন্তু কেউ কিছুই শুনল না। ছেলেরে ছাড়ায় আনতে অনেক জায়গায় দৌড়াইছি।’ তিনি জানান, এ ঘটনার পর থেকে তাঁদের প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
এ ছাড়া জামিনের আশ্বাস দিয়ে কয়েকজন লোক তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন একজন অভিভাবক।
আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলা, আসামি ৪৭৭ জন৩১ জুলাই ২০২৫গ্রেপ্তার এক শিশুর আইনজীবী ফিরোজা বেগম বলেন, ১৬ জুলাই সহিংসতার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় এই শিশুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩ ধারায় দ্রুত তদন্ত করে নির্দোষ প্রমাণিত হলে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে সরকারি কৌঁসুলি তৌফিকুল ইসলাম বলেন, শিশুরা অল্প সময় আগে গ্রেপ্তার হয়েছে, এখনো তদন্ত চলছে। তাই হয়তো বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেছেন। এ মামলায় এখনো কারও জামিন হয়নি।
আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে সংঘাতের ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট, নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন ১৮ জুলাই ২০২৫