শিশিরের মতো নির্মল হও প্রাণ, কুয়াশায় ভিজে মুক্ত অনির্বাণ এ প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে ২ দিনব্যাপী কুয়াশা উৎসব-১৪৩১।

শুক্রবার সকালে রাগ সংগীত ও পিঠা পুলির আসরের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চতুর্থবারের মতো শুরু হয় এ উৎসব।

উৎসব আয়োজকরা জানান, ২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মিলে কুয়াশা উৎসবের পরিকল্পনা করেন। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রয়োজন পড়ে অনেক টাকার। আয়োজনে সহযোগিতা করতে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত, চারুকলা, নাট্যকলা, ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগসহ সব বিভাগের শিক্ষার্থীরা। আলাদা আলাদা টিম গঠন করে ক্যাম্পাসসহ বিভিন্ন হাটবাজারে সাধারণ মানুষকে গান শুনিয়ে সংগ্রহ করেন টাকা। সেই টাকায় প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি কেনেন তারা।

মাসভর শ্রম দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশালাকার খেলার মাঠজুড়ে কুঁড়েঘর, গরুর গাড়িসহ একটি মনোরম গ্রামীণ পরিবেশ গড়ে তোলেন শিক্ষার্থীরা। সফল হয় তাদের শ্রম। অসাধারণ গ্রামীণ চিত্রে সজ্জিত কুয়াশা উৎসবের আয়োজন মন কাড়ে দর্শনার্থীদের। ব্যাপক সাড়া ও প্রশংসা কুড়ায় ওই আয়োজন। মাঝের দুই বছর করোনা ভাইরাসের প্রভাবে বন্ধ থাকে কুয়াশা উৎসবের আয়োজন। গত বছরও বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে জাঁকজমকপূর্ণভাবে শিক্ষার্থীদের নিরলস পরিশ্রমের সফল হয় দুই দিনব্যাপী কুয়াশা উৎসব।

এবারের দুই দিনব্যাপী কুয়াশা উৎসব আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি মেলেনি বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে। তাই চুরুলিয়া মঞ্চ, নজরুল বেদি, জয়ধ্বনি মঞ্চ ও ক্যাম্পাসের কয়েকটি সড়ক ব্যবহার করেন আয়োজকরা। তবে এ উৎসব ছড়িয়ে পড়ে পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে। প্রতিবারের মতো এবারও কুয়াশা উৎসবে থাকছে চিত্রকলা, চলচ্চিত্র ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী, রাগ সঙ্গীত, লোকনৃত্য, সাহিত্য আলোচনা, অভিক নৃ, ঘাটু গানসহ রস উৎসব, পিঠা পার্বণ ও নানা আয়োজন। উৎসব বন্ধুদের অর্থায়নে আয়োজন হয়েছে এই উৎসবের।

শুক্রবার বিকেলে ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, প্রাণের স্পন্দনে হাতের ছোঁয়ায় নানারূপে সেজেছে চুরুলিয়া মঞ্চ, নজরুল বেদি, জয়ধ্বনি মঞ্চ ও ক্যাম্পাস সড়কের গাছগুলোও। উপজাতি সম্প্রদায়ের কুঁড়েঘর। বসেছে বাহারি পিঠা ও বইয়ের স্টল। চুরুলিয়া মঞ্চে চলছিল সাহিত্য আড্ডা “ভয়” তাতে অংশ নেন গায়ক ও লেখক অরুপ রাহী, লেখক ও শিক্ষক উম্মে ফারহানা ও রবীন্দ্র কুমার রায়। নজরুল বেদিতে বসে গানের আসর।

সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী অন্যন্যা বলেন, প্রতি বছর আমরা এ উৎসবটির জন্য অপেক্ষা করে থাকি। প্রতি বছর পালিত হোক এ উৎসব।   

সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থী সানজিদা জানান, শুরু থেকেই উৎসব বন্ধুদের আর্থিক সহযোগিতায় চার বছর ধরে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে কুয়াশা উৎসব পালিত হয়ে আসছে। এ উৎসব আমাদের প্রাণের উৎসব।

কুয়াশা উৎসবের উপদেষ্টা ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক উম্মে ফারহানা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এ আয়োজনটি ভিন্নধর্মী ও ভিন্ন আমেজের।

কুয়াশা উৎসবের আরেক উপদেষ্টা ফিল্ম অ্যান্ড স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মনোজ কুমার প্রামাণিক জানান, কোনোপ্রকার স্পন্সর ছাড়াই শিক্ষার্থীদের আগ্রহ এবং আমাদের উৎসাহ ও সহযোগিতায় এ উৎসব চতুর্থবারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ছাড়াও বিভিন্নস্থান থেকে এসেছে দর্শনার্থীরা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ ত র আম জ নজর ল ব এ উৎসব উৎসব র

এছাড়াও পড়ুন:

গোলের উৎসবের ম্যাচে বার্সা-ইন্টারের রুদ্ধশ্বাস ড্র

চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল মানেই তো উত্তেজনার চূড়ান্ত রূপ। আর মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দিবাগত রাতে কাতালোনিয়ার মন্টজুইকে যা দেখা গেল— তা যেন শুধুই একটি ফুটবল ম্যাচ নয়, বরং ছয় গোলের অনির্দেশ্য গল্প। যেখানে বার্সেলোনা ও ইন্টার মিলান মিলে একসঙ্গে রচনা করল রোমাঞ্চ আর বীরত্বের এক অপূর্ব মহাকাব্য। দুইবার পিছিয়ে পড়েও অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনে ৩-৩ গোলে সমতা টানল কাতালান জায়ান্টরা।

ম্যাচ শুরুই হলো যেন বজ্রপাত দিয়ে। সময়ের কাঁটায় মিনিটও পেরোয়নি। এর মধ্যেই ইন্টারের মার্কুস তুরাম এক চতুর ব্যাকহিল ফিনিশে বল ঠেলে দেন জালে। সেই মুহূর্তে স্তব্ধ হয়ে পড়ে পুরো কাতালান রক্ষণভাগ। এরপর ২১ মিনিটে কর্নার থেকে ডেনজেল ডামফ্রিসের অ্যাক্রোবেটিক ভলিতে যেন বার্সার হৃদয়েই ঘা লাগে, ইন্টারের লিড তখন ২-০ গোলে।

তবে ইতিহাস বলে—  বার্সেলোনার যখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায়, তখনই তারা সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। সেই ধারাতেই, ডানদিক থেকে দুরন্ত ছন্দে এগিয়ে এসে বক্সে ঢুকে বল জালে পাঠালেন কিশোর বিস্ময় লামিনে ইয়ামাল। ইন্টারের দ্বিতীয় গোলের মাত্র তিন মিনিট পর আসে এই গোল, যা এই ম্যাচে বার্সার ফেরার না বলা প্রতিশ্রুতি হয়ে উঠেছিল।

সেই ইয়ামাল পরে আরও একবার প্রায় গোল করে ফেলছিলেন। কিন্তু ভাগ্য মুখ ফিরিয়ে নেয়। বল লাগে পোস্টে। তবে কাতালান আশা তখনও নষ্ট হয়নি। ৩৮ মিনিটে ফেরান তোরেস ডানদিক থেকে আসা পাসে ওয়ান-টাইম ফিনিশে বল জড়ান জালে, ফিরিয়ে আনেন সমতা। ম্যাচ তখন যেন টানটান থ্রিলারে রূপ নেয় এবং শেষ হয় প্রথমার্ধ।

দ্বিতীয়ার্ধে বলের দখলে ও খেলার ছন্দে এগিয়ে থাকলেও ৬৪ মিনিটে আবারও হোঁচট খায় বার্সা। কর্নার থেকে হেডে ডামফ্রিস করেন তার দ্বিতীয় গোল। ইন্টার আবারও এগিয়ে যায়। কিন্তু বার্সা মানেই তো ক্ষণিকের বিশ্রামে আবার অগ্নি হয়ে ওঠা। দ্রুতই আসে জবাব। রাফিনহার দূরপাল্লার গর্জে ওঠা শট প্রথমে লাগে পোস্টে, এরপর ফিরে এসে লেগে যায় গোলরক্ষক ইয়ান সমারের পিঠে, এরপর বল ঢুকে পড়ে জালে। ম্যাচ আবারও ৩-৩। যদিও এটি আত্মঘাতী গোল হিসেবে গণ্য হয়, কাতালানদের জন্য তা যেন নবজন্মের এক চুম্বন।

শেষ বাঁশি পর্যন্ত দুই দলই তীব্রভাবে চেষ্টা করেছে জয় ছিনিয়ে নিতে। কিন্তু ভাগ্য সেদিন ছিল ভারসাম্যপন্থী।

এখন সব অপেক্ষা দ্বিতীয় লেগের। আগামী ৬ মে মিলানের ঐতিহাসিক সান সিরো স্টেডিয়ামে লেখা হবে এই নাটকের অন্তিম অঙ্ক। এক ম্যাচ, এক ফলাফল, এক জয়ী— আর সেই জয়ীর জন্য অপেক্ষা করছে মিউনিখের আলো-আড়ম্বরের রাত। ইউরোপীয় ফুটবলের মঞ্চে চূড়ান্ত পরীক্ষার দিন।

সান সিরোর আকাশে হয়তো আবার জ্বলে উঠবে এক নতুন রূপকথার তারা।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গোলের উৎসবের ম্যাচে বার্সা-ইন্টারের রুদ্ধশ্বাস ড্র
  • জবি ছাত্রীর আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় আটক তরুণ
  • সুইডেনে বন্দুকধারীর হামলায় নিহত ৩
  • চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরও লিভারপুলের কোন খেলোয়াড়েরা পদক পাবেন না
  • বিশ্বের বড় বড় উৎসব কোথায় হয়
  • প্রাগে পুরস্কৃত ‘নট আ ফিকশন’,অনলাইনে মুক্তি ১ মে
  • ফসলের ক্ষেতে আশার আলো
  • কানে ‘আলী’, দায়িত্ব নিলো সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়
  • এবার লন্ডনে পুরস্কার জিতল ‘প্রিয় মালতি’
  • আকাশ থেকে ঝরে পড়ছে চকলেট