দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর বন্ধ থাকার পর বেসরকারি উদ্যোগে চালু হচ্ছে কুড়িগ্রাম টেক্সটাইল মিলস। কুড়িগ্রাম পৌর শহরের নাজিরাপাড়ায় অবস্থিত বস্ত্রকলটি দীর্ঘ মেয়াদে নবায়নযোগ্য লিজ পদ্ধতিতে পরিচালনা করবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেড। বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশন (বিটিএমসি) আজ শুক্রবার কারখানাটি নতুন উদ্যোক্তার কাছে হস্তান্তর করেছে। এ উপলক্ষে কুড়িগ্রাম টেক্সটাইল মিলস চত্বরে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

কুড়িগ্রাম টেক্সটাইল মিলস কর্তৃপক্ষের সূত্রে জানা গেছে, চুক্তি অনুযায়ী ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনয়ারিং লিজ পদ্ধতিতে ৩০ বছর মেয়াদে কুড়িগ্রাম টেক্সটাইল মিলস পরিচালনা করবে। তারা বস্ত্রকলটিতে চারটি পণ্য উৎপাদন করবে। নতুন উদ্যোগে পরিচালনার ফলে এ কারখানায় স্থানীয় প্রায় দুই হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

বিটিএমসির কর্মকর্তারা জানান, ১৯৮৬ সালে তৎকালীন সরকার এ অঞ্চলের বেকার সমস্যা দূরীকরণ ও আর্থসামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে বস্ত্রকলটি স্থাপন করে। শুরুর দিকে এটি ভালোভাবে চললেও পরে সমস্যা দেখা দেয়। ২০০৭ সালে উৎপাদন জটিলতার কারণে কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং লিজ পদ্ধতিতে এটি পরিচালনা করবে।

কুড়িগ্রাম টেক্সটাইল মিলসের হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বিটিএমসির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার এস এম জাহিদ হোসেন, মহাব্যবস্থাপক (জিএম) কাজী ফিরোজ হোসেন, ওয়েস্টার্ন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বসির আহমেদসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বসির আহমেদ বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের মতো ভালো মানুষ বাংলাদেশের আর কোথাও আছে কি না, আমার জানা নেই। এখানকার মানুষকে আমি খুব পছন্দ করি। এখানে শিল্পপ্রতিষ্ঠান করলে খুব একটা লাভজনক হবে বলে আমরা মনে করি না। তবু এ অঞ্চলের মানুষের প্রতি ভালোবাসা থেকে এখানে আমরা কাজ করতে চাইছি।’

বসির আহমেদ আরও বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, এ অঞ্চলের মানুষের কাছ থেকে আমরা সহযোগিতা পাব। আমি এখানে এমন কিছু শিল্প করতে চাই, যাতে স্থানীয় লোকদের জন্য বিশাল কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার

প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা। 

কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।

মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ। 

এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা। 

কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে। 

কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। 

ঢাকা/ইমরান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ