বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে দেশে ক্ষমতার পালাবদলের পর কুষ্টিয়ায় খোলস ছেড়ে বের হওয়ার চেষ্টা করছে দীর্ঘদিন ঘাপটি মেরে থাকা চরমপন্থি সন্ত্রাসীরা। বিশেষ করে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের ঠিকাদারি কাজ নিয়ন্ত্রণে নিতে মরিয়া হয়ে উঠছে তারা। সম্প্রতি সরকারি দপ্তরে গুলিবর্ষণ ও প্রকল্পের সাইটে বোমা হামলার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও সাধারণ ঠিকাদারদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ঠিকাদারি কাজের নিয়ন্ত্রণ, কমিশন ও চাঁদা আদায় করতেই এসব হামলার মতো ঘটনা ঘটছে বলে মনে করছেন তারা।

গত ৩ ফেব্রুয়ারি দুপুরে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কার্যালয়ের সামনে দুই রাউন্ড গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ সময় পাউবো কার্যালয়ের প্রাচীর ঘেঁষে ডিউটি করছিলেন আনসার সদস্য মামুন। দুপুর দেড়টার দিকে তিনি পরপর দুই রাউন্ড গুলির শব্দ শুনতে পান। এতে ভয় পেয়ে দৌড় দেন তিনি। গুলির শব্দ শুনে পরে অন্যেরা ছুটে আসেন। তারা প্রাচীরের বাইরে তাকিয়ে কাউকে দেখতে না পেলেও রাস্তা থেকে গুলির খোসা উদ্ধার হয়।

আনসার সদস্য মামুন হোসেন জানান, সেদিন দুপুরে তিনি ডিউটি শুরু করার পর যখন লোকজন নামাজ আদায় করছিল ঠিক তখন পরপর দুই রাউন্ড গুলির শব্দ শুনতে পান। পাউবোর অফিস লক্ষ্য করে বাইরে থেকে গুলি ছোড়া হয়। এতে লোকজনের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে পড়ে।

এ ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ফুটেজে দেখা গেছে, গুলি ছুড়ে বন্দুক হাতে বেশ কয়েকজন পালিয়ে যাচ্ছে। তাদের মুখ বাঁধা ছিল। পাউবো কার্যালয়ের উত্তর দিকে গড়াই নদী। সন্ত্রাসীরা দৌড়ে গিয়ে একটি নৌকায় ওঠে। নৌকায় থাকা এক ব্যক্তিকে তারা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দ্রুত পালিয়ে যায়। এ সময় তাদের একজনের হাতে ছিল বন্দুক। প্রত্যক্ষদর্শীরা ৩ জনকে দৌড়াতে দেখেছে। আর মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায় অপর একজন। 

পাউবোর কয়েকজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, যারা গুলি ছুড়েছে তারা একটি নিষিদ্ধ চরমপন্থি দল গণবাহিনীর সন্ত্রাসী বলে জানতে পেরেছেন। জিকের (গঙ্গা-কপোতাক্ষ) প্রকল্পের একটি কাজকে কেন্দ্র করে ভয়ভীতি দেখানোর জন্য তারা এ কাজ করেছে বলে তারা ধারণা করছেন। হঠাৎ এমন ঘটনায় সবার মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রশিদুর রহমান বাপ্পি বলেন, সেদিনের ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করছে। চরমপন্থি সন্ত্রাসীরা এমন কাজ করতে পারে বলে তারা ধারণা করছেন। ঠিক কী কারণে তারা এ ঘটনা ঘটাল, জানার চেষ্টা করছেন তারা।

এদিকে পাউবো কার্যালয় লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণের ঘটনার আগে গত ২২ ডিসেম্বর রাতে গড়াই নদীতে ড্রেজিং প্রকল্পের একটি ড্রেজারে হানা দেয় চরমপন্থি সন্ত্রাসীরা। তারা চাঁদার দাবিতে কাজ বন্ধ করে দেয়। অস্ত্রের মুখে সবাইকে জিম্মি করে হুমকি দিয়ে বলে, তাদের অনুমতি না নিয়ে কাজ করা যাবে না। কয়েক দিন কাজ বন্ধ থাকার পর চরমপন্থিদের সঙ্গে সমঝোতা করেই আবার কাজ শুরু করা হয়েছে বলে জানা গেছে।   

গড়াই খনন প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈকত বিশ্বাস বলেন, গত ডিসেম্বরে কাজ শুরু করার পর এক দল লোক রাতের বেলা ড্রেজারে হামলা করে কাজ বন্ধ করে দেয়। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিয়ে কয়েক দিন পর কাজ শুরু করা হয়েছে। পরে আর সমস্যা হয়নি। সবাই আতঙ্কে আছে।

এদিকে গত ৩১ জানুয়ারি রাতে জেলার দৌলতপুর উপজেলায় একটি সেতু নির্মাণকাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের থাকার ঘরে বোমা হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। পরপর ৪ থেকে ৫টি হাতবোমা নিক্ষেপ করলে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আরও দুটি বোমা উদ্ধার করে। সেতু নির্মাণের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারকে ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে প্রকল্প কাজের অংশীদারি পেতে এ কাজ করা হয়েছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির এক নেতার ছেলে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে এ হামলা চালায় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। 

এ বিষয়ে স্থানীয় ঠিকাদার ও ব্যবসায়ী কাজল মাজমাদার বলেন, আওয়ামী লীগ আমলের ঠিকাদাররা এখনও তাদের লাইসেন্সে কাজ করছেন। বিএনপির অনেকে ঠিকাদারি লাইসেন্স থাকার পরও কাজ করতে পারছেন না। এর মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা চরমপন্থি সন্ত্রাসীরা সরকারি প্রকল্পের কাজ বাগিয়ে নেওয়ার জন্য অপতৎপরতা চালাচ্ছে। 

জেলা সচেতন নাগরিক কমিটির সাবেক সভাপতি রফিকুল আলম টুকু মনে করেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে নতুন করে মাথাচাড়া দিচ্ছে চরমপন্থিরা। এদের কঠোর হাতে দমন করতে না পারলে জেলায় উন্নয়ন কাজ থমকে যাওয়াসহ ভীতিকর অবস্থা তৈরি হতে পারে।

এসব ঘটনা আমলে নিয়ে তদন্ত করছে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেহাবুর রহমান বলেন, পাউবো কার্যালয় লক্ষ্য করে গুলির ঘটনায় বেশ কয়েকজনের নাম-পরিচয় মিলেছে। তাদের ধরতে কাজ করছে পুলিশ। চরমপন্থি গ্রুপের সদস্যদের অবস্থান ও গতিবিধি পুলিশের নজরে আছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রকল প র ক জ কর করছ ন ঘটন য় র ঘটন আতঙ ক

এছাড়াও পড়ুন:

রাজধানীতে পরপর তিন দিনে তিন জনসমাবেশ

আগামীকাল বৃহস্পতিবার ১ মে থেকে শুরু হচ্ছে তিন দিনের সরকারি ছুটি। এই তিন দিনে রাজধানী ঢাকায় তিনটি দল ও সংগঠন পৃথক জনসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এসব কর্মসূচি ঘিরে ছুটির তিন দিনে রাজধানীতে ব্যাপক জনসমাগমের সম্ভাবনা রয়েছে।

১ মে বৃহস্পতিবার ঢাকার নয়াপল্টনে শ্রমিক সমাবেশ করবে বিএনপি। পরদিন ২ মে শুক্রবার আওয়ামী লীগের বিচারসহ বিভিন্ন দাবিতে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটকে সমাবেশ করবে। ৩ মে শনিবার নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলসহ বিভিন্ন দাবিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করবে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।

ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে আগামীকাল বেলা দুইটায় ঢাকার নয়াপল্টনে শ্রমিক সমাবেশ করবে বিএনপি। এতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রধান অতিথি থাকবেন। তিনি লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হবেন। এ ছাড়া বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা সমাবেশে বক্তব্য দেবেন। এই সমাবেশ আয়োজনে যুক্ত রয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের প্রধান উপদেষ্টা নজরুল ইসলাম খান ও শ্রমিক দলের প্রধান সমন্বয়ক শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস। ঢাকা মহানগরের বাইরে নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইলসহ আশপাশের জেলা থেকে বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা সমাবেশে অংশ নেবেন।

নজরুল ইসলাম খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি, সমাবেশটি অনেক বড় করার। আশা করি, আপনারা সেদিন উপস্থিত থাকলে দেখতে পাবেন।’

পরদিন শুক্রবার বেলা তিনটায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটকে সমাবেশ করবে গণ–অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের দল এনসিপি। দলটির ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে এই সমাবেশ হবে।

এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, এই কর্মসূচি থেকে গণহত্যার দায়ে ফ্যাসিস্ট দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার, এর রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করা এবং নিবন্ধন বাতিল করার দাবি জোরালোভাবে জানানো হবে। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের গত ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি ২০১৩ সালের শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ড, জুলাই-আগস্ট গণহত্যা ও ২০২১ সালে নরেন্দ্র মোদির আগমনবিরোধী আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের মতো বড় হত্যাকাণ্ডগুলোর বিচারও দাবি করা হবে।

২১ এপ্রিল থেকে দলগতভাবে আওয়ামী লীগের বিচার, দলটির নিবন্ধন বাতিল ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় বিক্ষোভ, সমাবেশ ও মশালমিছিলের মতো কর্মসূচি করছে এনসিপি। শুক্রবারের সমাবেশে ১০ থেকে ১৫ হাজার মানুষের জমায়েত হতে পারে বলে জানান এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন শিশির।

এনসিপির সমাবেশের পরদিন শনিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশের দিকে অনেকের দৃষ্টি। এক মাস ধরে সংগঠনটি সমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

সংগঠনটি আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে, ‘নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের কোরআন-সুন্নাহবিরোধী প্রতিবেদনসহ কমিশন বাতিল, সংবিধানে আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনর্বহাল, ফ্যাসিবাদের আমলে দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও শাপলা চত্বরে সংঘটিত গণহত্যাসহ সব হত্যার বিচার এবং ফিলিস্তিন ও ভারতে মুসলিম গণহত্যা ও নিপীড়ন বন্ধের’ দাবিতে এই মহাসমাবেশ ডাকা হয়েছে। এ উপলক্ষে গতকাল সকালে খিলগাঁও জামিয়া ইসলামিয়া মাখজানুল উলুম মাদ্রাসায় মহাসমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির সভা হয়।

হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় সংগঠনের কেন্দ্রীয়, মহানগর ও আঞ্চলিক কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন। পরে বেলা ১১টায় মহাসমাবেশের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে নেতারা সংবাদ সম্মেলন করেন।

হেফাজতে ইসলামের দায়িত্বশীল নেতারা জানিয়েছেন, এই মহাসমাবেশে তাঁদের মুখ্য দাবি হবে মূলত চারটি। এর মধ্যে প্রধান দাবি হচ্ছে, অনতিবিলম্বে হেফাজত নেতাদের নামে থাকা সব মামলা প্রত্যাহার। কারণ, বিগত আওয়ামী লীগ সরকার এই মামলাগুলোকে পুঁজি করে হেফাজতকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছে। ভবিষ্যতে যে সরকার আসবে, তারাও একই কাজ করতে পারে। তাই মামলা প্রত্যাহার হচ্ছে তাঁদের মুখ্য দাবি। সংগঠনটির হিসাবমতে, সারা দেশে হেফাজত নেতাদের নামে প্রায় ৩০০টি মামলা রয়েছে।

এ ছাড়া ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হত্যাকাণ্ড, ২০২১ সালের মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফর ঘিরে হত্যাকাণ্ড, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার। এরপর যথাক্রমে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল, সংবিধানের প্রস্তাবনায় আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনর্বহাল করা, ফিলিস্তিন ও ভারতে মুসলিম গণহত্যা ও নিপীড়ন বন্ধের দাবিগুলো থাকবে।

উল্লেখ্য, এক যুগ আগে ২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে যৌথ বাহিনীর রক্তক্ষয়ী অভিযানের ঘটনা ঘটে।

আগামী ৫ মে সোমবার সরকারি কর্মদিবস। সপ্তাহের মাঝখানে রাজধানীতে সমাবেশ করলে বড় ধরনের জনদুর্ভোগে সৃষ্টি হয়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সে জন্য হেফাজতে ইসলাম ছুটির দিনে মহাসমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ছাড়া হেফাজত ৫ মে বিশেষ দিবস হিসেবে পালন করে না। এ ধরনের দিবস পালন ইসলামের নীতিবিরোধী। তাই সবকিছু বিবেচনা করে ৩ মে মহাসমাবেশ করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সংগঠনের নেতাদের নামে থাকা অতীতের মামলা-মোকদ্দমাগুলো প্রত্যাহারে সরকারের ওপর চাপ তৈরি, একই সঙ্গে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের রাজনৈতিক প্রভাব দৃষ্টিগ্রাহ্য করারও একটি লক্ষ্য রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কাশ্মীরে সংঘাতের আসল সমস্যা কী
  • রাজধানীতে পরপর তিন দিনে তিন জনসমাবেশ