Samakal:
2025-05-01@11:20:23 GMT

দ্বিধা নহে, সরকারের দৃঢ়তা চাহি

Published: 9th, February 2025 GMT

দ্বিধা নহে, সরকারের দৃঢ়তা চাহি

বুধবার রাত্রি হইতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশব্যাপী যেই নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি চলিতেছে, উহা শুভবুদ্ধিসম্পন্ন কেহই সমর্থন করিতে পারে না। ইহারই প্রতিফলন ঘটাইয়া বিএনপিসহ দেশের প্রায় সকল রাজনৈতিক দল ইতোমধ্যে এহেন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টিকারীদের নিন্দা জানাইবার পাশাপাশি দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ দাবি করিয়াছে। আমরা দেখিয়াছি, বিলম্বে হইলেও অন্তর্বর্তী সরকারও বিগত সরকারসংশ্লিষ্ট যেই কাহারও স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ হইতে বিরত থাকিবার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানাইয়াছে।

দুর্ভাগ্যবশত, সরকারের সেই আহ্বান উপযুক্ত সাড়া পায় নাই। সমকালসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনসূত্রে জানা যাইতেছে, শুক্রবার রাত্রিতেও ধসাইয়া দেওয়া হইয়াছে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় এবং মনিরামপুর এলাকায় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে স্থাপিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি। পাশাপাশি শক্তিপুর এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার সড়কের নামফলকসহ উপজেলা সদরের কয়েকটি সড়কের নামফলকও ভাঙিয়া ফেলা হইয়াছে।

অন্যদিকে গাজীপুরে সাবেক এক মন্ত্রীর বাড়িতে কথিত হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘিরিয়া উদ্ভূত সংঘাতময় পরিস্থিতি শনিবারও স্বাভাবিক হয় নাই। এই আশঙ্কা অমূলক নহে যে, সরকার চলমান বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারিলে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি আরও ছড়াইয়া পড়িবে। উহা কাহারও জন্য কল্যাণকর হইবে না। আমরা জানি, গত ছয় মাসে একাধিক ঘটনায় সিদ্ধান্তহীনতা কিংবা শক্ত পদক্ষেপ গ্রহণে দ্বিধার কারণে ইতোমধ্যেই প্রশ্ন দেখা দিয়াছে। বিভিন্ন অপরাধে জড়িতরা অনেকাংশে দায়মুক্তি পাইবার কারণে জানমালের নিরাপত্তা দুর্বলতর হইতেছে। এই অবস্থায় সংকটগ্রস্ত অর্থনীতির পুনরুদ্ধারও কঠিন হইয়া পড়িতে পারে। বিশেষত দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বন্ধ হইবার কারণে সামাজিক অস্থিরতার শঙ্কা বৃদ্ধি পাইতে পারে। সর্বোপরি, বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হইবার নেতিবাচক প্রভাব বৈদেশিক বাণিজ্যকে সংকুচিত করিতে পারে।

আমরা জানি, চলমান নৈরাজ্য আরম্ভ হয় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের ঐতিহাসিক ভবনটি গুঁড়াইয়া দেওয়ার মধ্য দিয়া। ঘটনার অন্তত কয়েক ঘণ্টা পূর্বে উক্ত ধ্বংসযজ্ঞ চালাইবার ঘোষণা দেওয়া হয়। এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে বুলডোজার ব্যবহার করিয়া উক্ত কলঙ্কজনক ঘটনা ঘটানো হয়। স্পষ্টত সরকার যথেষ্ট সময় পাইবার পরও উহা রক্ষায় ইতিবাচক ও দৃঢ় পদক্ষেপ লয় নাই। এই পরিপ্রেক্ষিতে উক্ত নৈরাজ্য বন্ধে সরকারের সদিচ্ছা লইয়া বিভিন্ন মহলে যেই প্রশ্ন উঠিয়াছে উহা উড়াইয়া দিবার অবকাশ নাই।

ইতোপূর্বে অত্র সম্পাদকীয় স্তম্ভে আমরা বলিয়াছি, যদি ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীর ‘উস্কানিমূলক’ বক্তব্য উক্ত ক্ষোভের জন্ম দিয়া থাকে, তাহা হইলেও কাহারও আইন স্বীয় হস্তে তুলিয়া লইবার অধিকার নাই। অন্তত কোনও সরকার এহেন নৈরাজ্য অনুমোদন করিতে পারে না। ওই বক্তব্যের ধারাবাহিকতায় আমরা পুনরায় বলিতে চাহি, আইনের শাসনের মৌলিক এই দিকটি প্রতিষ্ঠা করিতে সরকার এখনও উদ্যোগী হইতে পারে। উপরন্তু, ইহা কেবল তখনই সম্ভব হইবে যখন চলমান নৈরাজ্যের সহিত যুক্ত দলমত নির্বিশেষে সকলকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হইবে।

আমরা মনে করি, এই ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলিরও দায়িত্ব কম নহে। এই প্রসঙ্গে শুক্রবার দলের স্থায়ী কমিটির সভার সিদ্ধান্ত হিসেবে বিএনপি নেতাকর্মীকে বিশৃঙ্খলা ও হিংসাত্মক কর্মকাণ্ডে জড়িত না হইবার যেই নির্দেশনা দিয়াছে, উহাকে আমরা সাধুবাদ জানাই। শনিবার সমকালের এক প্রতিবেদনে বলা হইয়াছে, এই বিষয়ে ইতোমধ্যে বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ে জরুরি নির্দেশনা পাঠাইয়া বলা হইয়াছে, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বিরোধী পক্ষের বাড়িঘরে আগুন ও ম্যুরাল ভাঙচুরসহ হিংসাত্মক কর্মকাণ্ডে জড়ানো যাইবে না।

দেশ ও দলের বৃহত্তর স্বার্থে এই নির্দেশ প্রত্যেক নেতাকর্মী অক্ষরে অক্ষরে পালন করিবেন বলিয়া দলীয়ভাবে প্রত্যাশা করা হইয়াছে। আমাদের বিশ্বাস, যদ্রূপ বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব এই নির্দেশনার যথাযথ প্রতিপালন নিশ্চিত করিবেন তদ্রূপ অন্য দলগুলিও অনুরূপ পদক্ষেপ গ্রহণ করিবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর স থ ত পদক ষ প সরক র হইয় ছ ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

পুলিশ পরিচয়ে ঘরে ঢুকে বেঁধে মারধর, ভাঙচুর ও লুটপাট

ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলায় পুলিশ পরিচয়ে ঘরে ঢুকে পরিবারের সবাইকে বেঁধে মারধর করে স্বর্ণালংকার ও মুঠোফোন লুট করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় ছয়টি দোকান ভাঙচুর ও মালামাল লুট করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার দক্ষিণ অনইলবুনিয়া গ্রামের বটতলা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

ভুক্তভোগী পরিবারের প্রধান হারুন অর রশিদ (৬৫) থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা বলছেন, ৯৯৯–এ ফোন করা হলেও এক কিলোমিটার দূরের কাঁঠালিয়া থানা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসেছে আড়াই ঘণ্টা পরে।

হারুন অর রশিদ বলেন, ২০০৭ সালে বটতলা বাজারে ছয় শতাংশ জমি কিনে ছয়টি টিনের দোকানঘর তৈরি করে ব্যবসা শুরু করেন তিনি ও তাঁর দুই ছেলে। এর পেছনেই বসতঘর তৈরি করে তাঁরা বসবাস করছেন।

হারুন অর রশিদের ছেলে মেহেদী হাসান বলেন, ভোরে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র হাতে বাড়িতে প্রবেশ করে অন্তত ১৫ জন দুর্বৃত্ত। প্রথমেই তারা পরিবারের সব সদস্যকে মারধর করে হাত–পা বেঁধে ফেলে। পরে ঘরের মধ্যে থাকা ৫টি মুঠোফোন ও ১০ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। এ সময় বাইরে অবস্থান করা ৫০ জনের একটি দল তাঁদের ছয়টি দোকান ভেঙে গুঁড়িয়ে মালামাল, টিন ও কাঠ ট্রাক ভরে নিয়ে গেছে। ছয়টি দোকানের মধ্যে ছিল মুদির দোকান, চায়ের দোকান, কসমেটিকসের দোকান ও মুরগির দোকান। ঘটনার সময় ভোরের আলো ফোটেনি, কেবল ফজরের আজান হচ্ছিল। দুর্বৃত্তরা তাঁর ছোট দুই বোনকে ব্যাপক মারধর করেছে।

মেহেদী হাসান বলেন, সম্প্রতি ফয়সাল আহম্মেদ নামের একজনের কাছ থেকে বটতলা বাজারে ছয় শতাংশ জমি কেনেন নাসির খান নামের ঢাকার এক ব্যবসায়ী। গত ২২ এপ্রিল জমির দলিল করেই তাঁদের জমিকে নিজের কেনা সম্পত্তি দাবি করে উচ্ছেদের জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছিলেন নাসির খান। তাঁর ভাড়া করা লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নাসির খানের মুঠোফোনে কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।

কাঁঠালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মং চেনলা বলেন, ঘটনা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, জনবল কম থাকায় ঘটনাস্থলে যেতে দেরি হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ