আমরা কোনো রাজনীতিতে ঢুকতে চাই না: সিইসি
Published: 9th, February 2025 GMT
অতীতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন না করতে পারার জন্য নির্বাচন কমিশনে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রভাবকে দায়ী করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, “আমরা কোনো রাজনীতিতে ঢুকতে চাই না।”
রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে ‘সাংবাদিক হোসাইন জাকির বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড-২০২৪’ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এমন কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশন বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
নাসির উদ্দিন বলেন, “আমরা কমিশনে যারা আছি, আমরা কোনো রাজনীতিতে ঢুকতে চাই না। আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে দাঁড়াতে চাই না। আমরা নিরপেক্ষ থাকতে চাই। আপনারা আমাদের সাহায্য করবেন।”
তিনি বলেন, “আমরা নিরপেক্ষ থাকতে চাই। ইলেকশন কমিশনের এত বদনাম, এত গালি দেয়, এটা কেন হল? ১০০টি কারণ বলতে পারবেন, ২০০টি কারণ বলতে পারবেন! কিন্তু আমার কাছে এক নম্বর কারণ হল, পলিটিকাল কন্ট্রোল অফ দ্য ইলেকশন কমিশন (নির্বাচন কমিশনে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ)।”
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, “এটি আমার কাছে মনে হয়েছে সবচাইতে বড় কারণ। রাজনীতির কাছে নির্বাচন কমিশনকে সঁপে দেওয়া, এটি হচ্ছে সবচেয়ে বড় কারণ।”
তিনি আরো বলেন, “রাজনীতিবিদদের ইনফ্লুয়েন্স অন দ্য ইলেকশন কমিশন বন্ধ করা না যায়, আবার সেই পুরনো জিনিস রিপিট হবে বলে আমি মনে করি। দে আর থাউজেন্ড রিজন, তবে আমার বিবেচনা সবচেয়ে বড় কারণ দেওয়ার মে বি পলিটিকাল কন্ট্রোল অন দ্য ইলেকশন কমিশন। এটি আমার কাছে সবচেয়ে বড় কারণ মনে হয়েছে অতীতে।” বাসস
ঢাকা/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চুরির অপবাদে ব্যবসায়ীকে গাছে বেঁধে পেটালেন মহাজন
শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলায় সুদের টাকা দিতে না পারায় এক ব্যবসায়ীকে গরু চুরির অপবাদ দিয়ে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে মহাজনের বিরুদ্ধে। এর একটি ভিডিও সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। উপজেলার খরিয়া কাজীরচরের ভাটি লঙ্গরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, খরিয়া কাজীরচরের ভাটি লঙ্গরপাড়া গ্রামের মাদ্রাসা পিয়ন ও ব্যবসায়ী নূর আমিন (৩৮) একই এলাকার সুদে কারবারি আব্দুল জলিলের কাছ থেকে মাসিক ১০ হাজার টাকা সুদের শর্তে ১ লাখ টাকা নেন। তিনি ১০ হাজার টাকা করে চার মাস সুদ দিয়ে আর দিতে পারছিলেন না। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। লাঞ্ছিত করা হয় ব্যবসায়ীকে।
জলিল মারধরের অভিযোগ এনে নূর আমিনের বিরুদ্ধে আদালতে নালিশও করেন। যদিও নূর অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন। কিছুদিন পর ভুক্তভোগীর একটি মোটরসাইকেল আটকে রাখেন জলিল। এ নিয়ে নূর আমিন থানায় অভিযোগ দেন। এর পর তাদের সম্পর্কের আরও অবনতি হয়। এরই মধ্যে রোববার কয়েকজনকে পাঠিয়ে তাঁকে লঙ্গরপাড়া বাজার থেকে ধরে আনেন জলিল।
এক পর্যায়ে গরু চুরির অপবাদ দিয়ে তাঁকে বাড়ির গাছে বেঁধে ব্যাপক নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, বাড়ির সবাই মিলে তাঁকে লাঠিপেটা করেন। শরীরের কাপড়ও ছিঁড়ে ফেলা হয়। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, দুই হাত গাছে বাঁধা নূরের। এক নারী জামার কলার ধরে তাঁকে নির্যাতন করছেন।
নূর আমিনকে মারধরের সময় বলতে শোনা যায়, ‘এ ... একটা গরু চোর, তাই ধইরি (ধরে) বান্ধিছি। মাইনষের টাইন (কাছ থেকে) ট্যাহা নিছে। আংগর টাইন ৬ লাখ ট্যাহা নিছে।’
ঘটনা জানাজানি হলে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আশরাফুল কবীর রূপা ঘটনাস্থলে যান। তিনি দু’পক্ষের মধ্যে আলোচনা করে বিষয়টি সুরাহা করেন। বিএনপি নেতা বলেন, ‘সেখানে শত শত মানুষ ছিল। দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে আগামী আগস্ট মাসে টাকা ফেরত দেওয়ার শর্তে নূরকে মুক্ত করি।’
অভিযুক্ত আব্দুল জলিলের ভাষ্য, ‘অনেক দিন ধরে দেড় লাখ টাকা পাই। তাঁকে বাজার থেকে ধরে এনেছিলাম, নির্যাতন করা হয়নি। বাড়ি আনার পর খারাপ আচরণ করায় বেঁধে রেখেছিলাম। নেতারা সমঝোতা করে দেওয়ায় ছেড়ে দিয়েছি।’
ভুক্তভোগী নূর আলম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘জীবনে কোনোদিন এত অপমান কেউ করেনি। মারধর করেছে, অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেছে। সুদের টাকার জন্য এক বছর ধরে আমার মোটরসাইকেল আটকে রেখেছে। টাকাও দাবি করছে। মাসে ১০ হাজার করে চার মাস টাকা দিয়েছি। এখন আসল টাকা পাবেন ৬০ হাজার।’
এ বিষয়ে শ্রীবরদী থানার ওসি মো. আনোয়ার জাহিদ বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তার আগেই স্থানীয় নেতারা সমঝোতা করেন। ভুক্তভোগীকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।