পুনর্বাসনের ব্যবস্থা, দুবাইতে নো এন্ট্রি তুলে নেওয়া, ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের জন্য ফাউন্ডেশন গঠন করাসহ ছয় দফা দাবিতে বিক্ষোভ  সমাবেশ করছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ফেরত প্রবাসী শ্রমিকেরা।

আজ সোমবার বেলা দেড়টার দিকে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের কাছে টিঅ্যান্ডটি ভবনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তাঁরা।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে জড়ো হন প্রবাসী শ্রমিকেরা। পরে ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে রওনা দেন।

প্রবাসী শ্রমিকেরা বলেন, জুলাই মাসে বাংলাদেশে যখন আন্দোলন শুরু হয়, তখন প্রবাসে থেকে তাঁরাও আন্দোলন করেছিলেন। এ কারণে তাঁদের জেলে যেতে হয়েছে। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে দেশে ফিরে এসেছেন। এতে তাঁদের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে, পরিবার নিয়ে কষ্টে আছেন। কষ্টের কথাগুলো জানাতেই এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছেন।

আন্দোলনকারীদের একজন ছগির তালুকদার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তাঁকে দুবাই বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আন্দোলন করার কারণে তাঁর যাবজ্জীবন শাস্তি হয়েছিল। পরে দেশে ফিরে এসেছেন। এখন আর দুবাই ফিরতে পারছেন না। দুবাইতে নো এন্ট্রি তুলে না নিলে তিনি আর দুবাই ফিরতে পারবেন না।

প্রবাসীদের ছয় দফা দাবিগুলো হলো—

১.

আরব আমিরাতসহ অন্যান্য দেশ থেকে আসা ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। যারা বিদেশ যেতে চান, সরকারি উদ্যোগে বিনা খরচে তাদের বিদেশ পাঠানোর ব্যবস্থা করা। যাদের দেশে চাকরি দেওয়ার সুযোগ আছে, যোগ্যতা অনুযায়ী তাদের চাকরির ব্যবস্থা করা। বিভিন্ন দেশে যারা ব্যবসায়ী ছিলেন এবং নতুন করে যারা উদ্যোক্তা হতে চান, তাদের ব্যাংক বা যেকোনো সংস্থার মাধ্যমে বিনা সুদে প্রয়োজনীয় লোন দেওয়ার ব্যবস্থা করা। যারা বয়স্ক তাদের বিভিন্ন ধরনের সরকারি ভাতার আওতায় নিয়ে আসা।

২. সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশ–ফেরত প্রবাসীদের নো এন্ট্রি দেওয়া হয়েছে। নো এন্ট্রি তুলে নিতে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ নেওয়া।

৩. একই মামলায় সংযুক্ত আরব আমিরাতে এখনো গ্রেপ্তার চলমান রয়েছে। কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত গ্রেপ্তারি প্রক্রিয়া বন্ধ করা। এ ছাড়া ওই মামলায় এখনো সংযুক্ত আরব আমিরাতের কারাগারে যেসব বাংলাদেশি প্রবাসী বন্দী আছেন, তাঁদের অতি দ্রুত মুক্ত করে দেশে ফিরিয়ে আনা।

৪. যাঁরা প্রবাসীদের নামের তালিকা বিভিন্ন দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে দিয়েছিলেন, তাঁরাসহ সে সময়ের কূটনৈতিক, কনস্যুল জেনারেল বি এম জামালসহ জড়িত সবাইকে চিহ্নিত করে অতি দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচার করা।

৫. ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের জন্য জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের মতো একটি ট্রাস্ট গঠন করা, যাতে দেশের স্বার্থে ক্ষতিগ্রস্ত যেকোনো প্রবাসী একটি ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তরের তালিকায় কারা নির্যাতিত হয়ে দেশে আসা প্রবাসীদের অন্তর্ভুক্ত করা।

৬. বিপদগ্রস্ত প্রবাসীদের মুক্ত করার ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার ভূমিকার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশের লক্ষ্যে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে চান প্রবাসীরা। সেই অনুষ্ঠানের জন্য সম্মতি দেওয়া ও আমন্ত্রণ পৌঁছানোর জন্য সাতজনের প্রতিনিধিদলকে সাক্ষাৎকারের অনুমতি দেওয়া।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ব যবস থ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

সায়েমের অলরাউন্ড পারফরম‌্যান্সে পাকিস্তানের জয়ে শুরু

জয়ের ধারাবাহিকতায় পাকিস্তান। বাংলাদেশের বিপক্ষে ঢাকায় শেষ টি-টোয়েন্টি জয়ের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম‌্যাচ সিরিজের প্রথমটিতেও জয় পেয়েছে তারা।

অলরাউন্ড পারফরম‌্যান্সে পাকিস্তানের জয়ের নায়ক সায়েম আইয়ুব। তার ৩৮ বলে ৫৭ রানের ইনিংসে ভর করে পাকিস্তান লাডারহিলে ৬ উইকেটে ১৭৮ রান করে। জবাব দিতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৭ উইকেটে ১৬৪ রানের বেশি করতে পারেননি। দারুণ ব‌্যাটিংয়ের পর বোলিংয়ে সায়েম ২০ রানে ২ উইকেট নেন। ১৪ রানের জয়ে সিরিজে ১-০ ব‌্যবধানে এগিয়ে পাকিস্তান।

টস হেরে ব‌্যাটিংয়ে নেমে পাকিস্তান শুরুতে শাহিবজাদা ফারহানের উইকেট হারায়। ১২ বলে ১৪ রান করে আউট হন ডানহাতি ব‌্যাটসম‌্যান। তিনে নেমে ফখর সায়েমকে সঙ্গ দেন। দুজন ৮১ রানের জুটি গড়েন। এ সময়ে ফখর ২ চার ও ১ ছক্কায় ২৪ বলে ২৮ রান করেন। বাকি রান আসে সায়েমের ব‌্যাটে।  এ সময়ে তিনি তুলে নেন ক‌্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি। হোল্ডারের বলে এলবিডব্লিউ হলে থেমে যায় তার ইনিংস।

এরপর হাসান নওয়াজের ১৮ বলে ২৪, সালমান আগার ১০ বলে ১১, ফাহিম আশরাফের ৯ বলে ১৫ রানে পাকিস্তান লড়াকু পুঁজি পায়। শেষ দিকে ১ বল খেলার সুযোগ পান হারিস। ছক্কায় উড়িয়ে পাকিস্তানের শেষটা ভালো করেন তিনি।
বোলিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সেরা ছিলেন শামার জোসেফ। ৩০ রানে নেন ৩ উইকেট।

লক্ষ‌্য তাড়ায় উদ্বোধনী জুটিতে ৭২ রান পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর হঠ‌্যাৎ ছন্দপতন। ৫ রান পেতেই ৩ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। ওই ধাক্কার পর তারা আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। জনসন চার্লস ও জুয়েল অ‌্যান্ড্রু ৩৫ রানের দুটি ইনিংস খেলেন। শেই হোপ (২),  গুদাকেশ মোটি (০), শেফরন রাদারফোর্ড (১১) ও রস্টন চেজ (৫) দ্রুত আউট হন। শেষ দিকে পরাজয়ের ব‌্যবধান কমান হোল্ডার ও জোসেফ। হোল্ডার ১২ বলে ৪ ছক্কায় ৩০ রান করেন। ১২ বলে ১ চার ও ২ ছক্কায় ২১ রান করেন জোসেফ ।

পাকিস্তানের বোলারদের মধ‌্যে সেরা ছিলেন হাসান নওয়াজ। ২৩ রানে ৩ উইকেট নেন বাঁহাতি স্পিনার। সায়েমের ২ উইকেট বাদে ১টি করে উইকেট পেয়েছেন শাহীন শাহ আফ্রিদি ও সুফিয়ান মুকিম।
আগামীকাল একই মাঠে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি অনুষ্ঠিত হবে।

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ