বাবার সঙ্গে কৃষিকাজ করা আশার মেডিকেলে ভর্তির সংগ্রাম
Published: 10th, February 2025 GMT
ভাই নেই, তাই মেয়ে হয়েই বাবার সঙ্গে করতেন কৃষিকাজ। সাতসকালে কাঁচি হাতে বেরিয়ে পড়তেন ক্ষেতের উদ্দেশে। কাজ শেষ করেই আবার যেতে হতো কলেজে। কখনও একবেলা খেয়ে আবার কখনও না খেয়েই পড়ালেখা চালিয়ে গেছেন আশা আক্তার। এত প্রতিকূলতা স্বত্ত্বেও এবার ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন গোপালগঞ্জ মেডিকেলে। কিন্তু চরম দারিদ্রতায় মাঝে মাঝে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন তিনি। কীভাবে এখন পড়বেন মেডিকেলে, কীভাবে মেটাবেন হোস্টেল ও পড়াশোনার খরচ। এসব দুশ্চিন্তায় আধাঁর যেন কাটছেই না আশার।
আশা ফরিদপুর সদর উপজেলার অম্বিকাপুর ইউনিয়নের চরজ্ঞানদিয়া গ্রামের কৃষক আলমগীর বিশ্বাস (৪৮) ও সোনিয়া বেগম (৩৮) দম্পত্তির ছোট মেয়ে।
আশার বাবা আলমগীর বিশ্বাস বলেন, ছোটবেলা থেকেই আশার স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। তাই মেয়েকে পড়ানোর জন্য সর্বোচ্চ পরিশ্রম করি। অভাবের সংসারে খেয়ে না খেয়েই মেয়ে দুইজনকে পড়ালেখা করিয়েছি। তারা খুব কষ্ট করে। এখনও আমার সঙ্গে ক্ষেতে কৃষিকাজ করে। কাজ শেষ করে আবার পড়তে বসতো তারা। এভাবেই এতে পরিশ্রম করে মেয়ে আমার চান্স পেয়েছে মেডিকেলে। তারপরও দুশ্চিন্তায় থাকি পড়াশোনার খরচ মেটাবো কীভাবে।
আশার মা সোনিয়া বেগম বলেন, মেয়ে আমার প্রাইমারি থেকেই মেডিকেল ভর্তি কোচিং পর্যন্ত অনেকগুলো বৃত্তি পেয়েছে। কোচিংয়ে সর্বোচ্চ মার্ক পাওয়ায় তার ফি কম নিয়েছে। স্যারেরা তার সৌজন্য বইয়ের ব্যবস্থা করেছে। মানুষের এতো সহযোগিতা না পেলে আমার মেয়ের স্বপ্ন পূরণ হতো না। আমাদের এমন অবস্থা নেই যে, আশার আগামী চার বছরের পড়াশোনার খরচ চালাবো। কেউ যদি আমাদের সাহায্য করতো, তাহলে আমাদের এই যাত্রা সহজ হতো।
আশা বলেন, চলতি মাসের ২ তারিখে গোপালগঞ্জ মেডিকেলে আমার ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু হোস্টেলের ব্যপারে কোন সিদ্ধান্ত দেয় নি। ক্যান্টিন থেকে দুই বেলা খাবার দেওয়ার কথা বলেছে। প্রতিদিন তার জন্য ৮০ টাকা দিতে হবে বলে জানিয়েছেন।
ছোটবেলা থেকে ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছে জানিয়ে আশা বলেন, একাডেমিকের ৪ বছরের কোর্স শেষ করে ইন্টার্ন করার সময় ডাক্তারির সাবজেক্ট চুজ করতে হয়। তবে আমি ছোটবেলা থেকেই সার্জারি করার খুব ইচ্ছা। বিশেষ করে কার্ডিওলজি সার্জন। তা না হলে নিউরোলজি সার্জন হওয়ার আগ্রহ রয়েছে আমার।
সংসারে সংগ্রামের বিষয়ে আশা বলেন, আমি পরিশ্রম করতে শিখেছি আমার মায়ের কাছ থেকে। বাবার আয় কম দেখে মা সংসারে বাড়তি আয় করতে হাস মুরগি ছাগল লালন পালন করতো। সাথে বাবার কৃষি কাজে সহায়তা। তাছাড়া আমার মানুষকে সাহায্য করতে ভালো লাগে।
তিনি বলেন, বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে আমি আরও কঠোর পরিশ্রম করব।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ ষ কর
এছাড়াও পড়ুন:
শিল্পী-নির্মাতাকে না জানিয়ে নাটক রিলিজ, নিলয়ের ক্ষোভ
নাটক কিংবা সিনেমার প্রচার নিয়ে নির্মাতা, প্রযোজক ও অভিনয়শিল্পীদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ নতুন কিছু নয়। এবার ঈদের একটি নাটকের প্রচার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিনেতা নিলয় আলমগীর। নির্মাতা ও অভিনয়শিল্পীদের না জানিয়ে ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করা হয়েছে ‘আপন পর’ নামের একটি নাটক।
ঈদের তৃতীয় দিন দীপ্ত টিভিতে প্রচারের পর শুক্রবার দীপ্ত নাটক ইউটিউব চ্যানেলে কোনো রকম প্রচার ছাড়াই প্রকাশ পেয়েছে নাটক ‘আপন পর’। ইউটিউবে নাটক প্রচারে আসার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে নির্মাতা রাখি ও অভিনেতা নিলয় জানান, নাটকটি রিলিজের বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না।
ফেসবুকে নিলয় আলমগীর লিখেছেন, ‘দীপ্ত টিভির ইউটিউব চ্যানেলে আমার একটি নাটক রিলিজ হয়েছে আজকে (গতকাল)। কিন্তু রিলিজের ব্যাপারে আমরা কোনো আর্টিস্ট জানি না, পরিচালক নিজেও জানেন না। হয়তো এই নাটকের প্রযোজক আলী বশির সাহেব জানেন।’
নিলয় লিখেছেন, ‘যেহেতু ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে রিলিজ হয়েছে, তাহলে নিশ্চয়ই কিছু প্রচার-প্রচারণার দরকার আছে। কিন্তু দীপ্ত টিভির হয়তো সেটির দরকার নেই।’
এ বিষয়ে দীপ্ত টিভির ডিজিটাল ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তার দিকে প্রশ্ন তুলেছেন অভিনেতা।
নিলয় আলমগীরের পোস্ট শেয়ার করে নির্মাতা হাসিব হোসেন রাখি লিখেছেন, ‘একটা নাটক আপলোড করার আগে নাটকের ডিরেক্টর, আর্টিস্টদের সঙ্গে কথা বলা উচিত।’
‘আপন পর’ নাটকে নিলয় আলমগীরের স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন তানিয়া বৃষ্টি। আরও আছেন আশরাফুল আলম সোহাগ, হানিফ পালোয়ান, শর্মী প্রমুখ।