ধর্মসভায় অতিথি করা নিয়ে বিরোধে বিএনপি কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা
Published: 11th, February 2025 GMT
ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলায় বিএনপি সমর্থিত দুটি সামাজিক দলের মধ্যে সংঘর্ষে মোশাররফ হোসেন (৪২) নামে এক বিএনপি কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার হাকিমপুর গ্রামে এ ঘটনায় উভয়পক্ষের অন্তত ৭ জন আহত হয়েছেন।
নিহত মোশাররফ হোসেন হাকিমপুর গ্রামের খবির উদ্দীনের ছেলে। আহতরা হলেন- ওই গ্রামের খবির মণ্ডলের ছেলে নাসির উদ্দিন, হানেফ আলী, আব্দুল খালেক, বিলাত আলীর ছেলে আরব আলী, আব্দুল খালেকের ছেলে রবিন, আব্দুস সোবাহানের ছেলে কাওছার মণ্ডল ও তার ভাই আব্দুল আলীম। আহতরা ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের মধ্যে নাসির উদ্দিন ও কওছার আলীর অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আশরাফ উদ্দীন স্বপন সমকালকে জানান, নানা বিষয়ে দ্বন্দ্বের জেরে সোমবার রাতে বিএনপির দেলোয়ার হোসেন দলু ও সাঈদ সমর্থক সামাজিক দলের মধ্যে মারামারি হয়। এ ঘটনার জেরে ধরে আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে হাকিমপুর গ্রামের ব্রিজের ওপর দুই গ্রুপের মধ্যে সংর্ঘষ হয়। এতে মোশাররফ হোসেন নিহত হন। আহত হন ৭ জন। আহতদরে মধ্যে দলু গ্রুপের ৫ জন ও সাঈদ গ্রুপের দুইজন রয়েছেন।
গ্রামবাসী জানায়, ধর্মসভায় অতিথি করা নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে এই সংর্ঘষের ঘটনা ঘটে। তবে নিহতের ভাই দবির উদ্দিন দাবি করেন, সকালে তার ভাইয়েরা নিজেদের ক্ষেতের গাছ থেকে কলা কাটতে গেলে তাদের ওপর প্রতিপক্ষ সাঈদের নেতৃত্বে আক্রমণ করে এই হতাহতের ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে সাঈদ হোসেনের বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
হরিণাকুণ্ডু থানার ওসি এম এ রউফ খান জানান, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে একই পরিবারের মধ্যে বিরোধ ছিল। এ ঘটনায় মোশাররফ হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে আহত করা হলে হাসপাতালে তিনি মারা যান। তিনি বলেন, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঝ ন ইদহ ম শ ররফ হ স ন ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
গোদাগাড়ীতে সন্ত্রাসী হামলায় নারীসহ ৬ জন আহত
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছে একটি পরিবার। এতে ছয়জন আহত হয়েছেন। এছাড়া তাদের বাড়িঘরে ভাঙচুর করা হয়েছে। ধানের পালায় অগ্নিসংযোগ এবং খেতের পেয়ারা বাগান কেটে দেয়া হয়েছে। এতে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
গোদাগাড়ী উপজেলার চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের পানিপার গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার (১১ জুন) প্রথমে পেয়ারা বাগানের ৪১টি গাছ কেটে ফেলা হয়। এরপর দিন হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। আহত ছয়জন এখন গোদাগাড়ী ৩১ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
হাসপাতালে ভর্তিরা হলেন, চর আষাড়িয়াদহ পানিপার গ্রামের আল্লাম হোসেন, তার ছেলে গোলাম মোস্তফা বাবু, মেয়ে ফাতেমা বেগম, নাতি জিহাদ (১৪), ইয়াকুব আলী এবং তাদের প্রতিবেশী বকুল ওরফে কান্দু। তাদের মধ্যে আল্লামের পায়ের রগ কেটে দেয়া হয়। ফাতেমার গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করা হয়। এছাড়া তাকে শ্লীলতাহানিও করা হয়।
আরো পড়ুন:
বগুড়ায় আসামির ছুরিকাঘাতে ২ পুলিশ আহত
আড়াইহাজারে জামায়াতের পথসভায় বিএনপির হামলা, আহত ৫
আহতরা জানান, দিয়াড় মহব্বতপুর গ্রামের জামিলুর রহমানের কাছ থেকে আল্লাম হোসেনের স্ত্রী ও ছেলে গোলাম মোস্তফা ২০১৬ সালের ১৮ মে শন্য দশমিক ৪৯৫০ একর ও তার আরেক ছেলে মুরশালীন ইসলাম ২০১৮ সালের ৯ মে শূন্য দশমিক ১১০০ একর জমি কেনেন। এর দলিলও করা হয়। জামিলুর রহমান আরএস রেকর্ডমূলে জমি বিক্রি করেন। পরে বিডিএস রেকর্ডে দলিলের কথা গোপন করে এসব জমি আবার নিজেদের নামে রেকর্ড করা হয়। এরপর থেকে তারা জমিগুলো আবার দখলের চেষ্টা করছিলেন।
তারা আরো জানান, জমি কেনার পর প্রায় পাঁচ বছর আগে সেখানে পেয়ারা বাগান করা হয়। গত ১১ জুন সকালে জামিলুর রহমান ও তার ভাই আদিল হোসেনের নেতৃত্বে তাদের ছেলেরা গিয়ে পেয়ারা বাগানের ৪১টি গাছ কেটে ফেলে। এ ঘটনায় আল্লাম হোসেন গ্রামের লোকজনের কাছে নালিশ করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে পরদিন জামিলুর রহমান, তার ভাই আদিল হোসেন এবং তাদের ভাড়াটে সন্ত্রাসী বাহিনী ধারালো হাঁসুয়া, চাইনিজ কুড়াল, বল্লম ও বাঁশের লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আল্লাম হোসেনের বাড়িতে হামলা চালান। বাড়িটিতে ভাঙচুর করা হয়। অগ্নিসংযোগ করা হয় ধানের পালায়। দুই দিনের হামলায় প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন তারা।
আহত আল্লাম হোসেন জানান, হামলাকারীরা তার পায়ের রগ কেটে দিয়েছে। ধানের পালার আগুন নেভাতে গেলে হামলাকারীরা তার নাতি জিহাদকে ধাক্কা দিয়ে আগুনের ভেতর ফেলে দেয়। এতে তার পা পুড়ে যায়। তার আরেক নাতি ইয়াকুবকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। তাদের বাঁচাতে গেলে মেয়ে ফাতেমার গলায় হাঁসুয়া দিয়ে আঘাত করা হয়। তাকে শ্লীলতাহানিও করা হয়। ছেলে গোলাম মোস্তফা বাবুকে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করা হয়। তাকে বাঁচাতে গেলে প্রতিবেশী বকুলকেও পিটিয়ে আহত করা হয়।
ভুক্তভোগী আল্লাম আরো জানান, হামলাকারীরা তাদের আহত অবস্থায় ফেলে গেলে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। হামলাকারীরা এখনো তাদের বাড়ি ঘিরে রেখেছেন। জমির দাবি করলে তাদের মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন। তারা নিরাপত্তাহীনতায় আছেন। হাসপাতাল থেকে তাদের ছুটি দেয়া হলে এ ঘটনায় তারা মামলা করবেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত জামিলুর রহমানকে কয়েকদফা ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন জানান, ঘটনা তিনি শুনেছেন। আহতরা থানায় অভিযোগ করতে চেয়েছেন। অভিযোগ করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঢাকা/কেয়া/বকুল