বইমেলায় হট্টগোল, উপদেষ্টা ফারুকীর কড়া বার্তা
Published: 11th, February 2025 GMT
অমর একুশে বইমেলায় সব্যসাচীর স্টলে ঘটে যাওয়া ঘটনায় ‘কড়া বার্তা’ দিয়েছেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা চলচ্চিত্রকার মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘‘এ ধরনের ঘটনা মেলাপ্রাঙ্গণে আর ঘটতে দেওয়া যাবে না। দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।’’
এদিকে, ঘটনার প্রায় ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পর তার প্রতিক্রিয়া বিস্মিত করেছে মানুষকে। যদিও ফেসবুকে তিনি জানিয়েছেন, ঘটনার সময় ফ্লাইটে ছিলেন।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ফেসবুকে ফারুকী লিখেছেন, ‘‘গতকাল বাংলা একাডেমিতে যে ঘটনা ঘটেছে, এটা অত্যন্ত নিন্দনীয়। ঘটনার সময় আমি ফ্লাইটে ছিলাম। নামার পর থেকে এ বিষয়ে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। ঘটনার সব রকম ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ সংগ্রহ করেছি। একাডেমি ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটি তিন কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দেবে। দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।’’
আরো পড়ুন:
বইমেলায় হট্টগোল: ঘটনা তদন্তে ৭ সদস্যের কমিটি
বইমেলায় হট্টগোল: ‘তৌহিদী জনতা’র প্রতি মাহফুজের ‘শেষ অনুরোধ’
এ বিষয়ে সরকারের বক্তব্য স্পষ্ট করে উপদেষ্টা লিখেছেন, ‘‘এ ধরনের ঘটনা মেলাপ্রাঙ্গণে আর ঘটতে দেয়া যাবে না। আসুন আমরা সবাই সব রকম উস্কানিমূলক আচরণ থেকে বিরত থাকি।’’
সোমবার সন্ধ্যায় বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে থাকা সব্যসাচীর স্টলে তসলিমা নাসরিনের বই ‘চুম্বন’ পরিবেশন নিয়ে বাগবিতণ্ডা ও হট্টগোলের ঘটনা ঘটে। পরে ওই স্টল বন্ধ করে দেয় পুলিশ। সব্যসাচীর প্রকাশক শতাব্দী ভবকে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ কন্ট্রোল রুমে নেওয়া হয়।
হট্টগোল শুরু হওয়ার আগে স্টলটির বিরুদ্ধে ‘নাস্তিকতা প্রচার’-এর অভিযোগ এনে সেটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আগের দিন রবিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পোস্ট দেওয়া হয়েছিল। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা বেশ কিছু ভিডিও থেকে দেখা গেছে, প্রকাশক ভব একদল তরুণকে উত্তেজিত করার চেষ্টা করছিলেন। তাদের মুখে দাড়ি ও মাথায় টুপি ছিল।
গতকালের ঘটনায় বাংলা একাডেমির পরিচালক মোহাম্মদ হারুন রশিদকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি প্রতিবেদন পেশ করার পর তার ওপর ভিত্তি করে ঘটনা নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ঢাকা/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বইম ল বইম ল য় র ঘটন ঘটন র
এছাড়াও পড়ুন:
দোয়ার ফজিলত ও আদব
দোয়া শব্দের আভিধানিক অর্থ আহ্বান করা বা প্রার্থনা করা। পরিভাষায় দোয়া হলো কল্যাণ ও উপকার লাভের উদ্দেশ্যে এবং ক্ষতি ও অপকার রোধে মহান আল্লাহকে ডাকা এবং তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা।
প্রিয় নবীজি (সা.) বলেন, ‘দোয়াই ইবাদত।’ (বুখারি ও মুসলিম) ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে কিছু চায় না, আল্লাহ তাআলা তার প্রতি অসন্তুষ্ট হন।’ (তিরমিজি: ৩৩৭৩)
আল–কোরআনের বর্ণনা, ‘আর তোমাদের রব বলেন, “তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের জন্য সাড়া দেব। নিশ্চয় যারা অহংকারবশত আমার ইবাদত থেকে বিমুখ থাকে, তারা অচিরেই লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে প্রবেশ করবে।”’ (সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ৬০)
মুমিনের পরিচয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তাদের পার্শ্বদেশ শয্যা থেকে আলাদা থাকে। তারা তাদের পালনকর্তাকে ডাকে ভয়ে ও আশায় এবং আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা থেকে ব্যয় করে। কেউ জানে না তার কৃতকর্মের জন্য তাদের কী কী চোখজুড়ানো প্রতিদান লুকায়িত আছে।’ (সুরা-৩২ সাজদা, আয়াত: ১৬-১৭)
‘আর আমার বান্দাগণ যখন আমার সম্পর্কে আপনাকে জিজ্ঞাসা করে, (তখন বলে দিন যে) নিশ্চয় আমি অতি নিকটে। আহ্বানকারী যখন আমাকে আহ্বান করে, আমি তার আহ্বানে সাড়া দেই। কাজেই তারাও আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমার প্রতি ইমান আনুক, যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৬)
দোয়া কবুলের অন্যতম শর্ত হলো হালাল উপার্জন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎকাজ করো; তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ৫১)দোয়া ও আমল কবুল হওয়ার মূল শর্ত হলো ইখলাস। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনি চিরঞ্জীব, তিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। অতএব, তাঁকে ডাকো খাঁটি ইবাদতের মাধ্যমে।’ (সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ৬৬)
দোয়া কবুলের অন্যতম শর্ত হলো হালাল উপার্জন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎ কাজ করো; তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ৫১) ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা পাক পবিত্র বস্তুসামগ্রী আহার করো, যেগুলো আমি তোমাদের রিজিক হিসেবে দান করেছি।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৭৩)
নবীজি (সা.) বলেন, ‘উষ্কখুষ্ক ধুলায় ধূসরিত অবস্থায় দীর্ঘ সফরকারী একজন যে স্বীয় দুই হাত আকাশের দিকে প্রসারিত করে বলে, “হে প্রভু! হে প্রভু!” অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক হারাম এবং সে হারাম দ্বারা লালিত, তার দোয়া কীভাবে কবুল হবে?’ (মুসলিম: ১৬৮৬)
নির্জনে নীরবে বিনয়ের সঙ্গে দোয়া করা উত্তম। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা স্বীয় প্রতিপালককে ডাকো কাকুতি মিনতি করে এবং সংগোপনে। তিনি সীমা অতিক্রমকারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৫)। ‘পৃথিবীকে কুসংস্কারমুক্ত ও ঠিক করার পর তাতে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করো না। তাকে আহ্বান করো ভয় ও আশাসহকারে। নিশ্চয় আল্লাহর করুণা সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৫-৫৬)
দোয়ার আদব হলো দৃঢ়সংকল্প ও আকুতির সঙ্গে দোয়া করা, দোয়া কবুলে প্রবল আশাবাদী হওয়া।
হজরত জাকারিয়া (আ.) তাঁর দোয়ায় বলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! আপনার কাছে দোয়া করে আমি কখনো ব্যর্থ হইনি।’ (সুরা-১৯ মারিয়াম, আয়াত: ৪) হজরত ইব্রাহিম (আ.) বলেন, ‘আশা করি, আমার প্রতিপালকের নিকট দোয়া করে আমি বিফল হব না।’ (সুরা-১৯ মারিয়াম, আয়াত: ৪৮)
মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী
যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম
[email protected]