নড়াইলে জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার ২৪ ঘণ্টা পার হতে না হতেই স্থগিত করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার কৃষক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল হাসান বাবুলের সই করা বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। জেলা কৃষক দলের নতুন আহ্বায়ক হিমায়েত হুসাইন ফারুকের বিরুদ্ধে কৃষক লীগের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে কমিটি স্থগিত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। 

এ বিষয়ে জেলা কৃষক দলের সদ্য বিদায়ী আহ্বায়ক নবির হোসেন বলেন, হিমায়েত হুসাইন ফারুক টানা দুইবার জেলা কৃষক দলের সভাপতি ছিলেন। ৩ বছর আগে কৃষক দল থেকে পদত্যাগ করে কৃষক লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে তিনি দল থেকে পদত্যাগ করেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সোমবার নড়াইল জেলা কৃষক দলের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে নড়াইল সদর উপজেলার বিছালী ইউপি চেয়ারম্যান হিমায়েত হুসাইন ফারুককে আহ্বায়ক, শোয়েব মিনাকে সদস্য সচিব ও ইঞ্জিনিয়ার রবিউল ইসলাম রুবেলকে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়। কমিটি ঘোষণার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে কয়েকটি ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে দেখা যায়, গত পবিত্র ঈদ-উল ফিতর উপলক্ষে বিছালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ঈদ শুভেচ্ছা জানান ঘোষিত কমিটির আহ্বায়ক ফারুক। সেই ছবিতে উপরের দিকে শেখ মুজিবুর রহমান ও সজীব ওয়াজেদ জয়, ডানে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা ও নড়াইল-১ আসনের সাবেক এমপি বিএম কবিরুল হক মুক্তির ছবি রয়েছে। ভাইরাল হওয়া আর একটি ছবিতে কৃষক লীগের ব্যানারে মিটিং করতে দেখা যায় হিমায়েত হুসাইন ফারুকে। সেই মিটিংয়ে বেশ কয়েক জন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতা উপস্থিত ছিলেন।
  
জেলা কৃষক দলের সাবেক সদস্য সচিব এনামুল কবীর চন্দন বলেন, বাতিল হওয়া কমিটির আহ্বায়ক হিমায়েত হুসাইন ফারুক ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর। বিষয়টি জানতে পেরে কমিটি বাতিল হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, নড়াইল-১ আসনের সাবেক এমপি কবিরুল হক মুক্তির আর্শীবাদে ফারুক বিছালী ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তাকে জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক করায় আমরা হতাশ হয়েছিলাম। আগামীতে কমিটি করার সময় ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে হিমায়েত হুসাইন ফারুকের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যাওয়া যায়।

জেলা বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম বলেন, হিমায়েত হুসাইন ফারুক আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তা প্রমাণিত হওয়ায় কমিটি স্থগিত হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কম ট হ ম য় ত হ স ইন ফ র ক আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

মানুষের ‘দ্বিতীয় ঘুম’এর যুগ সম্পর্কে কতটা জানেন

তেলের বাতি, গ্যাসের বাতি এবং বৈদ্যুতিক বাতি ক্রমে সভ্যতায় যোগ হয়েছে। এর আগে মানুষ প্রাকৃতিক আলোর সঙ্গে মানিয়ে জীবন যাপন করতো। প্রাক-শিল্প যুগের সমাজে ‘দ্বিতীয় ঘুম’-এর অভ্যাস ছিলো মানুষের। 

দ্বিতীয় ঘুম বলতে ঐতিহাসিকভাবে প্রচলিত এমন এক ধরনের ঘুমের ধরণকে বোঝায়, যেখানে মানুষ রাতে একটানা আট ঘণ্টা না ঘুমিয়ে ঘুমকে দুটি ভাগে ভাগ করে নিত। একে দ্বি-পর্যায়ের ঘুম বা খণ্ডিত ঘুম বলা হয়। দেখা যেত যে— সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পর মানুষজন বিছানায় যেত এবং প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত। 

আরো পড়ুন:

রক্তস্বল্পতা দূর করতে এই শাক খেতে পারেন

টানা ৬ মাস রাতের খাবার দেরিতে খেলে যা হয়

প্রথম ঘুমের পর তারা প্রায় এক ঘণ্টা জেগে থাকত। এই সময়ে বাড়ির হালকা কাজ করা, প্রার্থনা করা, পড়াশোনা করা, প্রতিবেশীদের সাথে গল্প করা বা অন্তরঙ্গ কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার মতো কাজগুলো করতো।

তারা আবার বিছানায় ফিরে যেত এবং ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত আরও ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত, যাকে ‘দ্বিতীয় ঘুম’ বা ‘ভোরের ঘুম’ বলা হত।

গত দুই শতাব্দী ধরে সামাজিক জীবনে আসা পরিবর্তনের কারণে মানুষের দ্বিতীয় ঘুমের অদৃশ্য হয়ে গেছে। যেসব কারণে মানুষ দ্বিতীয় ঘুমের অভ্যাস হারিয়ে ফেলেছে, তার একটি হলো ‘কৃত্রিম আলো ব্যবহার।’
১৭০০ এবং ১৮০০ এর দশকে, প্রথমে তেলের বাতি, তারপর গ্যাসের আলো এবং অবশেষে বৈদ্যুতিক আলো রাতকে আরও ব্যবহারযোগ্য করে তুলেছে। ফলে রাতও মানুষের কাছে জাগ্রত সময়ে পরিণত হতে শুরু করে। 

সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পরে ঘুমাতে যাওয়ার পরিবর্তে, মানুষ প্রদীপের আলোতে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেগে থাকতে শুরু করে। জৈবিকভাবে, রাতে উজ্জ্বল আলো আমাদের অভ্যন্তরীণ ঘড়িগুলোকে (আমাদের সার্কাডিয়ান ছন্দ) পরিবর্তন করে এবং কয়েক ঘণ্টা ঘুমের পরে আমাদের শরীরকে জাগ্রত করার প্রবণতা কমিয়ে দেয়। 

ঘুমানোর আগে সাধারণ ‘ঘরের’ আলো মেলাটোনিনকে দমন করে এবং বিলম্বিত করে। শিল্প বিপ্লব কেবল মানুষের কাজ করার পদ্ধতিই নয় বরং তারা কীভাবে ঘুমায় তাও বদলে দিয়েছে। 

২০১৭ সালে বিদ্যুৎবিহীন মাদাগাস্কান কৃষি সম্প্রদায়ের ওপর করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে লোকেরা এখনও বেশিরভাগ সময় দুই ভাগে ঘুমায়, প্রায় মধ্যরাতে ঘুম থেকে ওঠে।

সূত্র: ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস অবলম্বনে

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ