মহিষ এমনিতেই মোটামুটি বিশাল দেহী প্রাণী। তবে কিং কংয়ের কথা আলাদা। অন্য সব মহিষের সঙ্গে আপনি এটিকে মেলাতে পারবেন না। থাইল্যান্ডের একটি খামারে বেড়ে ওঠা তিন বছর বয়সী এই মহিষের উচ্চতা ১৮৫ সেন্টিমিটার (৬ ফুট ৮ ইঞ্চি)!
সাধারণত একটি পূর্ণবয়স্ক মহিষের গড়পড়তা উচ্চতা যা হয়, কিং কংয়ের উচ্চতা তার চেয়ে প্রায় ৫০ সেন্টিমিটার বেশি। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে কিং কংই এখন বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা মহিষ। গত সোমবার কিং কংকে নিয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের ওয়েবসাইটে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
আকারে যত বিশালই হোক, কিং কং কিন্তু দারুণ আদুরে। মহিষটির জন্ম ২০২১ সালের ১ এপ্রিল, নিনলানি ফার্ম নামে থাইল্যান্ডের একটি খামারে। জন্মের সময়ই সেটি অন্যান্য মহিষ শাবকের চেয়ে আকারে বড় ছিল। এ কারণে খামারের মালিক নাম রাখেন কিং কং।
ওই খামারে কাজ করেন চেরপাত্ত উত্তি। এই নারী বলেন, ‘প্রথম থেকেই বোঝা যাচ্ছিল এটির (কিং কং) উচ্চতা অন্য রকম হবে। ওর বয়স মাত্র তিন বছর এবং তখনই আকারে অনেক বড়। তবে ও খুব বাধ্য; মানুষের চারপাশে খেলতে, মাটিতে লাফালাফি করতে এবং দৌড়াতে ভালোবাসে।’
কিং কং খুবই বন্ধুসুলভ আচরণ করে জানিয়ে চেরপাত্ত আরও বলেন, ‘কিং কং থাকাতে মনে হয় যেন আমাদের খামারে বিশাল আর শক্তিশালী একটি কুকুরছানা রয়েছে।’
কিং কংয়ের জন্য প্রতিদিন ৩৫ কেজি খাবারের প্রয়োজন হয়। মহিষটি খড় এবং ভুট্টা খেতে পছন্দ করে। আর ভালোবেসে খায় কলা।
চেরপাত্ত বলেন, ‘কিং কংকে কিং কং বানাতে যা যা করতে হয়, তার সবকিছু করতে আমি পছন্দ করি। ও অনন্য। সবাই ওকে পছন্দ করে।’
আকারে সবচেয়ে উঁচু মহিষের স্বীকৃতি পাওয়ায় খামারের প্রত্যেকে কিং কংকে নিয়ে গর্বিত। তাঁদের দাবি, এই প্রথম কোনো মহিষ এ ধরনের রেকর্ড গড়েছে।
নিনলানি ফার্মে মহিষের পাশাপাশি ঘোড়াও পালন করা হয়। মূলত ঘোড়ার খামার হিসেবে এটির যাত্রা শুরু হয়েছিল। কিন্তু এখন মহিষ উৎপাদনে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে।
থাইল্যান্ডের ইতিহাস ও সংস্কৃতিতে মহিষ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রাচীনকাল থেকে সেখানে কৃষিকাজে এবং পণ্য পরিবহনে মহিষ বড় অবদান রেখে আসছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি