নিজের বাড়ি পোড়ানো নিয়ে ক্ষোভ উগ্রে দিলেন কাফি
Published: 12th, February 2025 GMT
নিজের বাড়ি পোড়ানো নিয়ে ক্ষোভ উগ্রে দিয়েছেন দেশের জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজ্জামান কাফি। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার রজপাড়া গ্রামে নিজ পোড়া বাড়ির সামনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। এ সময় অন্তর্বর্তী সরকারকে সাত দিনের আল্টিমেটাম দেন তিনি।
নুরুজ্জামান কাফি বলেন, ‘‘আগামী সাত দিনের মধ্যে আমার ঘর পুনর্নির্মাণ এবং দোষীদের গ্রেপ্তার করা না হলে আমি একাই এই পোড়া বাড়ির সামনে রাস্তায় দাঁড়াব। বিপ্লবী ছাত্রজনতা আমার সঙ্গে আছে। এই পোড়া বাড়ির সামনে দাঁড়ালে টিএসসি পর্যন্ত জ্যাম লেগে যাবে।’’ প্রয়োজনে বিপ্লবী সরকারের ডাক দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
৩২-এর বাড়ি পোড়ানোর জেরে তার বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে অভিযোগ করে বলেন, ‘‘স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কথা বলেছি, মানুষের পক্ষে কথা বলেছি। শেখ হাসিনা বলেছেন, ধানমন্ডি যারা পুড়িয়েছে তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হবে। আর ঠিক সেই প্রতিশোধ হিসেবে প্রথমে আমার বাড়ি পুড়েছে।’’
অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর সাধারণ মানুষ আস্থা হারিয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘‘দেশের ৬০ শতাংশ মানুষ ইতোমধ্যে বর্তমান সরকারের ওপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। আমরা আন্দোলন করলেও সরকারের কাছ থেকে কোনো সুবিধা চাইনি, উপদেষ্টা হতে চাইনি। শুধু দেশের মানুষের নিরাপত্তা চেয়েছি। অথচ আজ আমার নিজের ঘরই নেই।’’
কাফি আরো বলেন, ‘‘আমার বাড়িতে আগুন হাসিনা লাগায়নি। লাগিয়েছে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ। দেশে এখনো ৭০ শতাংশ আওয়ামী লীগ একটিভ। এই ফ্যাসিস্টদের বিষদাঁত উপরে ফেলতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষে অবশ্যই অপরাধীদের খুঁজে বের করা সম্ভব।’’
সংবাদ সম্মেলনে কাফির বাবা এবিএম হাবিবুর রহমান ও বড় ভাই নুরুল্লাহ আল-মামুন উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, মঙ্গলবার গভীর রাতে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের রজপাড়া গ্রামে কনটেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজ্জামান কাফির বাড়িতে আগুন দেয় দুর্বত্তরা। অগ্নিকাণ্ডে বাড়ির বেশিরভাগ অংশ পুড়ে গেছে। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।
ঢাকা/ইমরান/রাজীব
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মানুষের ‘দ্বিতীয় ঘুম’এর যুগ সম্পর্কে কতটা জানেন
তেলের বাতি, গ্যাসের বাতি এবং বৈদ্যুতিক বাতি ক্রমে সভ্যতায় যোগ হয়েছে। এর আগে মানুষ প্রাকৃতিক আলোর সঙ্গে মানিয়ে জীবন যাপন করতো। প্রাক-শিল্প যুগের সমাজে ‘দ্বিতীয় ঘুম’-এর অভ্যাস ছিলো মানুষের।
দ্বিতীয় ঘুম বলতে ঐতিহাসিকভাবে প্রচলিত এমন এক ধরনের ঘুমের ধরণকে বোঝায়, যেখানে মানুষ রাতে একটানা আট ঘণ্টা না ঘুমিয়ে ঘুমকে দুটি ভাগে ভাগ করে নিত। একে দ্বি-পর্যায়ের ঘুম বা খণ্ডিত ঘুম বলা হয়। দেখা যেত যে— সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পর মানুষজন বিছানায় যেত এবং প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত।
আরো পড়ুন:
রক্তস্বল্পতা দূর করতে এই শাক খেতে পারেন
টানা ৬ মাস রাতের খাবার দেরিতে খেলে যা হয়
প্রথম ঘুমের পর তারা প্রায় এক ঘণ্টা জেগে থাকত। এই সময়ে বাড়ির হালকা কাজ করা, প্রার্থনা করা, পড়াশোনা করা, প্রতিবেশীদের সাথে গল্প করা বা অন্তরঙ্গ কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার মতো কাজগুলো করতো।
তারা আবার বিছানায় ফিরে যেত এবং ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত আরও ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত, যাকে ‘দ্বিতীয় ঘুম’ বা ‘ভোরের ঘুম’ বলা হত।
গত দুই শতাব্দী ধরে সামাজিক জীবনে আসা পরিবর্তনের কারণে মানুষের দ্বিতীয় ঘুমের অদৃশ্য হয়ে গেছে। যেসব কারণে মানুষ দ্বিতীয় ঘুমের অভ্যাস হারিয়ে ফেলেছে, তার একটি হলো ‘কৃত্রিম আলো ব্যবহার।’
১৭০০ এবং ১৮০০ এর দশকে, প্রথমে তেলের বাতি, তারপর গ্যাসের আলো এবং অবশেষে বৈদ্যুতিক আলো রাতকে আরও ব্যবহারযোগ্য করে তুলেছে। ফলে রাতও মানুষের কাছে জাগ্রত সময়ে পরিণত হতে শুরু করে।
সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পরে ঘুমাতে যাওয়ার পরিবর্তে, মানুষ প্রদীপের আলোতে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেগে থাকতে শুরু করে। জৈবিকভাবে, রাতে উজ্জ্বল আলো আমাদের অভ্যন্তরীণ ঘড়িগুলোকে (আমাদের সার্কাডিয়ান ছন্দ) পরিবর্তন করে এবং কয়েক ঘণ্টা ঘুমের পরে আমাদের শরীরকে জাগ্রত করার প্রবণতা কমিয়ে দেয়।
ঘুমানোর আগে সাধারণ ‘ঘরের’ আলো মেলাটোনিনকে দমন করে এবং বিলম্বিত করে। শিল্প বিপ্লব কেবল মানুষের কাজ করার পদ্ধতিই নয় বরং তারা কীভাবে ঘুমায় তাও বদলে দিয়েছে।
২০১৭ সালে বিদ্যুৎবিহীন মাদাগাস্কান কৃষি সম্প্রদায়ের ওপর করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে লোকেরা এখনও বেশিরভাগ সময় দুই ভাগে ঘুমায়, প্রায় মধ্যরাতে ঘুম থেকে ওঠে।
সূত্র: ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস অবলম্বনে
ঢাকা/লিপি