শিশুদের অনলাইনে নিরাপদ থাকার কৌশল শেখাবে মেটা
Published: 12th, February 2025 GMT
অনলাইনে শিশুদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রশিক্ষণ দেবে মেটা। এ জন্য অলাভজনক সংস্থা চাইল্ডহেল্পের সহযোগিতায় বিশেষ শিক্ষা কর্মসূচি চালু করছে প্রতিষ্ঠানটি। মেটার তথ্যমতে, বিভিন্ন ধরনের অনলাইন প্রতারণা থেকে নিরাপদ থাকার কৌশল শেখাতে এরই মধ্যে বিশেষ পাঠ্যক্রম প্রণয়ন করা হয়েছে। মেটার অর্থায়নে পরিচালিত এই পাঠ্যক্রম শিশুদের পাশাপাশি বিদ্যালয় এবং অভিভাবকেরাও ব্যবহার করতে পারবেন।
মেটার তথ্যমতে, এই পাঠ্যক্রমের মাধ্যমে শিশুদের অনলাইন ঝুঁকি চিহ্নিত করার পাশাপাশি সেগুলো থেকে নিরাপদ থাকার কৌশল শেখানো হবে। এ জন্য বিভিন্ন ধরনের ভিডিও কনটেন্ট প্রকাশ করা হবে। এসব কনটেন্টের মাধ্যমে শিশুরা সহজেই অনলাইন ও অফলাইনে নিরাপদ থাকার কৌশল শিখতে পারবে। এই পাঠ্যক্রম শিশু সুরক্ষা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে তৈরি করা হয়েছে।
শিক্ষা কর্মসূচি চালুর বিষয়ে মেটার গ্লোবাল সেফটি বিভাগের প্রধান অ্যান্টিগোন ডেভিস এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা আমাদের প্ল্যাটফর্মে কিশোর-কিশোরীদের নিরাপদ রাখতে সম্ভাব্য সব ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছি। তবে এসব সুরক্ষা তখনই কার্যকর হবে, যখন কিশোর-কিশোরীরা অনলাইনে সম্ভাব্য ঝুঁকি শনাক্ত করতে পারবে এবং কোথা থেকে সহায়তা নিতে হবে, তা জানবে।’
অনলাইনে শিশুদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে মেটা ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি সুরক্ষা ব্যবস্থা চালু করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছর নিজেদের মালিকানাধীন ইনস্টাগ্রাম অ্যাপে কিশোর-কিশোরীদের নিরাপত্তায় নতুন একটি নিরাপত্তা সুবিধা চালু করে প্রতিষ্ঠানটি। সুবিধাটি চালু হওয়ায় কিশোর-কিশোরীদের কাছে কেউ প্রাপ্তবয়স্কদের উপযোগী ছবি পাঠালে সেগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঘোলা দেখা যায়। এ ছাড়া ডিসঅ্যাপিয়ারিং ছবির স্ক্রিনশট নেওয়ার সুযোগও বন্ধ করেছে মেটা।
সূত্র: দ্য ভার্জ
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।
বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’
এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।