মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরের একটি পুকুর থেকে এক ব্যক্তির বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১টার দিকে বীরতারা ইউনিয়নের ছয়গাঁও এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশের দাবি, সিরাজদিখান থেকে নিখোঁজ স্কুলছাত্র রোমান শেখের (১৬) মরদেহ হতে পারে—এমন খবরে ওই পুকুরপাড়সংলগ্ন বাসিন্দা ও রোমান শেখ অপহরণ মামলায় গ্রেপ্তার আসামি মো.

সিয়াম ও মানিক শেখের বাড়ি ভাঙচুরের পর অগ্নিসংযোগ করেছে উত্তেজিত জনতা।

নিখোঁজ রোমান শেখ (১৬) শ্রীনগর উপজেলার কোলা ইউনিয়নের থৈরগাঁও গ্রামের মিরাজ শেখের ছেলে ও বেলতলী গঙ্গাপ্রসাদ জগন্নাথ উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র। এক ভাই দুই বোনের মধ্যে সে সবার ছোট। অভাবের কারণে রোমান পড়াশোনার পাশাপাশি অটোরিকশা চালাত। গত ২১ জানুয়ারি অটোরিকশা নিয়ে বের হওয়ার পর থেকে সে নিখোঁজ আছে। এ ঘটনায় গত ২৬ জানুয়ারি রোমানের বাবা মিরাজ শেখ বাদী হয়ে মো. সিয়াম (১৭), মানিক শেখ (১৭), রাসেলসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৫ জনকে আসামি করে সিরাজদিখান থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন। এ মামলায় ২৬ জানুয়ারি মানিক, সিয়ামসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শ্রীনগরের বীরতারা ইউনিয়নের ছয়গাঁও গ্রামে মানিক ও সিয়ামের বাড়িসংলগ্ন পুকুর থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে কৌতূহল সৃষ্টি হয়। পরে তাঁরা একত্র হয়ে পুকুরের কচুরিপানা সরিয়ে গন্ধের উৎসের খোঁজ শুরু করেন। আজ সকাল ১০টার দিকে আসামি সিয়ামের ঘরের পাশের পুকুরের অংশ থেকে কচুরিপানা সরাতেই সেখানে বস্তাবন্দী মরদেহটি খুঁজে পান তাঁরা। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলে বেলা সোয়া একটার দিকে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে লাশটি উদ্ধার করা হয়। লাশটির বস্তার সঙ্গে ইট ও আরসিসি খুঁটির অংশ বেঁধে পুকুরে ফেলা হয়েছিল। তবে বস্তার মুখ না খোলায় লাশটি রোমান শেখের কি না নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে লাশটিকে রোমান শেখের দাবি করে সমবেত জনতা উত্তেজিত হয়ে সিয়াম ও মানিক শেখের বাড়ি ভাঙচুর করে। একপর্যায়ে ঘরের ভেতরের আসবাবপত্র ও বাড়ির ভাঙা অংশে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

রোমান শেখের সন্ধান চেয়ে গতকাল বুধবার মানববন্ধন করে তাঁর স্বজন, সহপাঠী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। ওই দিন এ কর্মসূচি শেষে তাঁরা থানা ঘেরাও করে হামলা চালান। এ সময় সিরাজদিখান থানা ও থানা প্রাঙ্গণের পাশে অবস্থিত সহকারী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের পাশাপাশি এর সামনে থাকা পুলিশের ৫টি গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়।

মুন্সিগঞ্জ সহকারী পুলিশ সুপার (সিরাজদিখান সার্কেল) ইমরান খান বলেন, ‘গতকাল থানায় হামলার ঘটনার পর আমরা নিখোঁজ স্কুলছাত্রের স্বজনসহ স্থানীয়দের বলেছিলাম, যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের বাড়ির আশপাশে যত ডোবা, পুকুর আছে সেখানেও আপনারা খোঁজ করেন। সে হিসেবে নিখোঁজদের স্বজনেরা আজ সিয়াম ও মানিকদের বাড়ির পাশের পুকুরে খোঁজ চালায়। সেখানে বস্তাবন্দী অবস্থায় একটি মৃতদেহ দেখতে পেয়ে আমাদের খবর দেয়। একটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশটি রোমান শেখের কি না সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ র নগর

এছাড়াও পড়ুন:

পটিয়ায় ব্যবসায়ীকে অপহরণ, দুই ঘণ্টা পর উদ্ধার

চট্টগ্রামের পটিয়া পৌর সদরের মুন্সেফ বাজার এলাকার একটি দোকান থেকে নুরুল আবছার (২৭) নামের এক ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে যায় একদল মুখোশধারী ব্যক্তি। আজ বুধবার সকাল সাতটায় তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে পুলিশের তৎপরতায় সকাল সাড়ে ৯টায় তিনি ছাড়া পান।

উদ্ধারের পর পটিয়া থানা প্রাঙ্গণে অপহরণের শিকার নুরুল আবছার প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ব্যাংকে চাকরি করতেন। সম্প্রতি তাঁর চাকরি চলে যায়। এরপর পটিয়া পৌর সদরের মুন্সেফ বাজার এলাকার সাহিত্য বিশারদ সড়কে মুরগির দোকান দেন। প্রতিদিনের মতো আজ সকালে দোকান খোলেন তিনি। এ সময় তিন থেকে চারজন মুখোশধারী লোক ধারালো অস্ত্রের মুখে তাঁকে ধরে অটোরিকশায় উঠিয়ে নিয়ে যায়। তারা তাঁর পকেটে থাকা ৪০ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। পরে আরও ৪ লাখ টাকা দাবি করে, পরে ১৭ লাখ এনে দিতে বলেন। তাঁকে চন্দ্র কালারপোল নামের নির্জন এলাকায় নিয়ে অপহরণকারীরা তাঁকে মারধরের পাশাপাশি ছুরিকাঘাতও করেন।

পটিয়া থানার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) প্রদীপ চন্দ্র দে প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত তাঁকে উদ্ধারের তৎপরতায় নামে। পরে চন্দ্র কালারপোল এলাকায় পুলিশ গেলে উপস্থিতি টের পেয়ে অপহরণকারীরা পালিয়ে যায়।

পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান জানান, ব্যবসায়ীকে অপহরণ করার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরে তাঁকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পটিয়ায় ব্যবসায়ীকে অপহরণ, দুই ঘণ্টা পর উদ্ধার