দিনাজপুরের পার্বতীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা-কর্মীদের তোপের মুখে কার্যালয় ছেড়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতেমা খাতুন। গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে প্রশাসনের সহায়তায় তিনি কার্যালয় ত্যাগ করেন।

বুধবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচির পর আজ বৃহস্পতিবার কার্যালয়ে যাননি ইউএনও ফাতেমা খাতুন। তিনি তাঁর বাসভবন থেকেই দাপ্তরিক কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন।

এর আগে স্বেচ্ছাচারিতা ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে ইউএনও ফাতেমা খাতুনের অপসারণের দাবিতে গতকাল বেলা তিনটায় উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার-সংলগ্ন সড়কে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মানববন্ধন শেষে বিকেল সাড়ে চারটায় বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ইউএনও কার্যালয়ে যান আন্দোলনকারীরা। এ সময় তাঁরা ইউএনওকে আওয়ামী লীগের দোসর, দুর্নীতিবাজ আখ্যা দিয়ে স্লোগান দেন। তাঁকে কার্যালয় ত্যাগ করতে দুই ঘণ্টার সময় বেঁধে দেওয়া হয়। এরপর বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় কার্যালয় ছাড়েন ইউএনও ফাতেমা খাতুন। ঘটনার পরপরই ইউএনও কার্যালয় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।

আন্দোলনকারী নেতা-কর্মীদের দাবি, ইউএনও ফাতেমা খাতুন দীর্ঘদিন ধরেই পার্বতীপুরে একক স্বেচ্ছাচারিতার রাজত্ব কায়েম করেছেন। নানা অনিয়মের অভিযোগে পরপর দুবার বদলির আদেশ হলেও অজ্ঞাত কারণে তা স্থগিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের লোকজনের সঙ্গে তাঁর সংশ্লিষ্টতা আছে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির পার্বতীপুর উপজেলা শাখার আহ্বায়ক তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘ইউএনও একজন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা। তিনি ফ্যাসিবাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন। আমরা কোনোভাবেই তাঁকে ছাড় দেব না। আমরা এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর অপসারণের দাবি করেছি।’

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বুধবার ইউএনও ফাতেমা খাতুন বলেছিলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এর কোনো প্রমাণ দিতে পারবে না কেউ।’

আজ দুপুরে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারাই বিষয়টি দেখছেন। এ ছাড়া ইউএনও কার্যালয়ে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী টহল দিচ্ছে। তিনি বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও হঠাৎ করে অস্বাভাবিক হওয়ার আশঙ্কা আছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউএনও ফ ত ম

এছাড়াও পড়ুন:

উত্তরায় বাসে হামলার প্রতিবাদে ঢাবিতে মানববন্ধন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ক্ষণিকা বাস ও শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। 

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এ সময় বক্তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাবির বাস ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িতদের সনাক্তসহ এর পেছনে ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করার দাবি জানান।

আরো পড়ুন:

ঢাবির ৪০ শতাংশ শিক্ষক আন্তর্জাতিক মানের: উপাচার্য

ঢাবি উপাচার্যের সঙ্গে সিঙ্গাপুর হাইকমিশনের সাক্ষাৎ

ঢাবির লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ইব্রাহিম মাহমুদ বলেন, “সারা বাংলাদেশের আন্দোলনে ছাত্রদের বিভিন্ন আন্দোলন ও সংগ্রামকে পুঁজি করে একটি কুচক্রী মহল একে অপরের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিতে চায়। উত্তরায় শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন করছিল, তারা ন্যায়ের পক্ষে ছিল। কিন্তু একটি কচক্রী মহল কৌশলে তাদের ঢাবি শিক্ষার্থীদের ওপর লেলিয়ে দিয়েছে।”

তিনি বলেন, “কিছু ইনফ্লয়েঞ্চার এবং কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের কনটেন্টের উপর ভিত্তি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি সারা বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে। ফলে আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষণিকা বাস ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।”

শিক্ষার্থী হাসিব আল ইসলাম বলেন, “কিছু দুর্বৃত্ত এবং কিশোর গ্যাংয়ের সন্ত্রাসীরা ছাত্রদের আন্দোলনে প্রবেশ করে ঢাবির বাসে হামলা করে চালক ও শিক্ষার্থীদের আহত করেছে। একটি কুচক্রী মহল সারা দেশে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে ঐক্য গড়ে উঠেছে, তা নষ্ট করার জন্য ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজ এ হামলা। এটি কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সম্পর্কের ফাটল ধরাতেই এ হামলা।”

তিনি বলেন, “জুলাইয়ে গড়ে ওঠা ঐক্যকে যারা ভাঙতে চাচ্ছে, তাদের সনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। গণ-অভ্যুত্থানের আট মাস হয়ে গেলেও প্রশাসন জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। এ হামলার দায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এড়াতে পারেন না। দ্রুত আইন শৃঙ্খলা ব্যবস্থার উন্নতি করে ক্ষণিকা বাসে হামলার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে। এতে বিলম্ব হলে ঢাবি শিক্ষার্থীরা এর উপযুক্ত জবাব দিতে প্রস্তুত আছে।”

দুপুরে রাজধানীর উত্তরার আজমপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরিবহনকারী ক্ষণিকা বাসে ভাঙচুর চালায় একদল শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় বাসের ড্রাইভারসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘পাটের তৈরি পণ্য ব্যবহার করুন’ 
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাতে টর্চলাইট জ্বালিয়ে সংঘর্ষ, ইউএনও-ওসিসহ আহত ৩০
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাতে ‘টর্চলাইট জ্বালিয়ে’ দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ইউএনও-ওসিসহ আহত ৩০
  • পড়াশোনায় ফিরছেন দিনাজপুরের ‘ইংলিশম্যান’ হৃদয়, শেখাবেন ইংরেজি
  • নির্দোষ দাবি প্রতিপক্ষের, হয়নি মামলা
  • বাসে হামলার প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
  • উত্তরায় বাসে হামলার প্রতিবাদে ঢাবিতে মানববন্ধন
  • আ.লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করে ইউএনওকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা
  • নারায়ণগঞ্জে ৩০ স্কুলে চালু হলো ‌‘মিড ডে মিল’
  • গাজীপুরে ১০ মাটি খেকোকে কারাদণ্ড