বৈষম্যবিরোধীদের তোপের মুখে কার্যালয় ছেড়েছেন পার্বতীপুরের ইউএনও, বাসায় চলছে দাপ্তরিক কাজ
Published: 13th, February 2025 GMT
দিনাজপুরের পার্বতীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা-কর্মীদের তোপের মুখে কার্যালয় ছেড়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতেমা খাতুন। গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে প্রশাসনের সহায়তায় তিনি কার্যালয় ত্যাগ করেন।
বুধবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচির পর আজ বৃহস্পতিবার কার্যালয়ে যাননি ইউএনও ফাতেমা খাতুন। তিনি তাঁর বাসভবন থেকেই দাপ্তরিক কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন।
এর আগে স্বেচ্ছাচারিতা ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে ইউএনও ফাতেমা খাতুনের অপসারণের দাবিতে গতকাল বেলা তিনটায় উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার-সংলগ্ন সড়কে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মানববন্ধন শেষে বিকেল সাড়ে চারটায় বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ইউএনও কার্যালয়ে যান আন্দোলনকারীরা। এ সময় তাঁরা ইউএনওকে আওয়ামী লীগের দোসর, দুর্নীতিবাজ আখ্যা দিয়ে স্লোগান দেন। তাঁকে কার্যালয় ত্যাগ করতে দুই ঘণ্টার সময় বেঁধে দেওয়া হয়। এরপর বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় কার্যালয় ছাড়েন ইউএনও ফাতেমা খাতুন। ঘটনার পরপরই ইউএনও কার্যালয় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।
আন্দোলনকারী নেতা-কর্মীদের দাবি, ইউএনও ফাতেমা খাতুন দীর্ঘদিন ধরেই পার্বতীপুরে একক স্বেচ্ছাচারিতার রাজত্ব কায়েম করেছেন। নানা অনিয়মের অভিযোগে পরপর দুবার বদলির আদেশ হলেও অজ্ঞাত কারণে তা স্থগিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের লোকজনের সঙ্গে তাঁর সংশ্লিষ্টতা আছে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির পার্বতীপুর উপজেলা শাখার আহ্বায়ক তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘ইউএনও একজন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা। তিনি ফ্যাসিবাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন। আমরা কোনোভাবেই তাঁকে ছাড় দেব না। আমরা এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর অপসারণের দাবি করেছি।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বুধবার ইউএনও ফাতেমা খাতুন বলেছিলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এর কোনো প্রমাণ দিতে পারবে না কেউ।’
আজ দুপুরে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারাই বিষয়টি দেখছেন। এ ছাড়া ইউএনও কার্যালয়ে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী টহল দিচ্ছে। তিনি বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও হঠাৎ করে অস্বাভাবিক হওয়ার আশঙ্কা আছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউএনও ফ ত ম
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন
ফতুল্লার লালপুর পৌষাপুকুর পাড় এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থায়ী সমাধানের জন্য মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।
আগামী দুই দিনের মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে সড়ক অবরোধ সহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে মানববন্ধন থেকে। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী ঢাকা-নারায়নগঞ্জ পুরাতন সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। এতে করে ঢাকা-নারায়নগঞ্জ পুরাতন সড়কের উভয় পাশে যানবাহন বন্ধ হয়ে যানজটের সৃস্টি হয়।
বুধবার সকাল ১০ টার দিকে ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুস্ঠিত হয়। ১১ টার দিকে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ঘটনাস্থলে এসে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা হয়েছে। তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন আজ দুপুরের পর এলাকাবাসীর সাথে নির্বাহী কর্মকর্তা কথা বলবেন তাদের সমস্যার কথা শুনবেন এবং দ্রুতই তা সমাধানের জন্য কাজ করবেন।
এ সময় লালপুর পৌষাপুকুরপাড় পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি মোসলেম উদ্দিন মুসা বলেন জলাবদ্ধতার কারনে মুসুল্লিরা নামাজ পরতে পারছেনা,কর্মজীবিরা কাজে যেতে পারছেনা,স্কুল -কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীরা তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছেনা,নোংরা পানির কারনে ঘরে ঘরে পরিবারের সদস্যরা অসুস্থ হয়ে পরেছে।
আমাদের কে আশ্বাস করেছিলো সেনাবাহিনী কতৃক যে পাম্প বসানো হয়েছিলো সেটা চালু হলে আমাদের দ্ঃূক কস্ট লাঘব হবে। কিম্ত সে পাম্প চালু হলেও আমাদের কস্ট শেষ হয়নি। সেই পাম্প আমাদের কোন কাজে আসেনি।
আমরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা,জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারক লিপি দিয়েছি তারা এসে দেখেও গেছে কিন্ত আজো সমস্যার সমাধান করা হয়নি। বিগত সরকারের আমলে তখনকার চেয়ারম্যান, এমপি সাহেবের নিকট গিয়েছি। শামীম ওসমান এসে দেখে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে। তা শুধু কথার কথাই ছিলো। কিন্ত কোন কাজে আসেনি।
ইউপি সদস্য মাঈনুদ্দিন জানায়, দীর্ঘদন যাবৎ আমরা এই সমস্যা আছি। মৃত মানুষের লাশ পযন্ত দাফন করতে পারছিনা। মসজিদের ভিতরে পানি নামাজ পরতে পারছিনা। রাস্তায় বের হতে পারছিনা।
আমাদের কোরবানী ঈদে পশু কোরবানী দিতে হয় ছাদের ওপরে নতুবা অন্য এলাকায় গিয়ে। এ সব কিছুই সরকারের সকল বিভাগের কর্মরত কর্তার জানে। কিন্ত শুধু আশ্বাস পেয়ে গেছি। কোন সমাধান পাইনি তাই আজ বাধ্য হয়ে রাস্তায় নামতে হয়েছে আমাদেরকে।
আমরা দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতার কবলে রয়েছি। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। ফতুল্লায় এতো উন্নয়ন হয়, কিন্তু লালপুর পৌষাপুকুর পাড়ের জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থায়ী কোন সমাধান হচ্ছেনা। আমরা চাই এই জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থায়ী সমাধান হোক।
ব্যবসায়ী হাবিব জানায়, আমাদের সমস্যা দীর্ঘদিনের। হাসিনা সরকারের আমলে আমাদের কোন কাজ হয় নাই। আমরা সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে স্মারক লিপি দিয়েছি। কিন্ত কোন কাজ হয়নি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি কোন প্রকার টেক্স আর দিবোনা।
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, লালপুর- পৌষাপুকুরপাড় পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক আঃ বারী, আজাদুর রহমান আজাদ,আলামিন বাগ পঞ্চায়েতের সাধারণ সম্পাদক রফিক, লালপুর আলামিন বাগ পঞ্চায়েতের সভাপতি মো. জনি, শামীম।