চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা
Published: 13th, February 2025 GMT
বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তিসহ আট দফা দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সংগঠনটি। আজ বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন জোটের প্রতিনিধি প্রদীপ কান্তি দে।
সরকার পতনের পর সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনাগুলো দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচার, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করাসহ আট দফা বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে কয়েকটি সংগঠন। এসব দাবি বাস্তবায়নের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গ্রেপ্তার চিন্ময়সহ সবার বিরুদ্ধে হওয়া মামলা প্রত্যাহার এবং গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মুক্তির দাবিও জানিয়ে আসছে সংগঠনগুলো।
সনাতনী জাগরণ জোটের আজকের ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আগামীকাল শুক্রবার চিন্ময়সহ সব বন্দী ও আহত ব্যক্তির সুস্থতা কামনায় প্রতিটি মন্দিরে প্রদীপ প্রজ্বালন ও প্রার্থনা সভার আয়োজন। ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে চিন্ময়সহ প্রত্যেক বন্দীর মুক্তি এবং আট দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য সারা দেশে প্রতিটি মন্দির, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পাড়া–মহল্লায় মাসব্যাপী গণস্বাক্ষর কর্মসূচি শুরু হবে। এক মাস পর প্রধান উপদেষ্টার কাছে সেই গণস্বাক্ষর জমা দেওয়া হবে। আর ২৮ ফেব্রুয়ারি বেলা তিনটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মুখে কালো কাপড় বেঁধে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন। পাশাপাশি ২৮ ফেব্রুয়ারির আগেই প্রধান উপদেষ্টার তাদের সঙ্গে বৈঠক করতে আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের প্রতিনিধি সুমন কুমার রায় বলেন, চিন্ময় সন্ন্যাসী, প্রসাদ ছাড়া খাবার গ্রহণ করেন না। অথচ তিনি দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আছেন। হাইকোর্ট দুই সপ্তাহের রুল জারি করেছেন। চিন্ময় দ্রুত জামিনে মুক্তি পাবেন, এমনটা আশা করলেও সুমন কুমার বলেন, চিন্ময়ের মুক্তি ঠেকিয়ে দিতে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে।
জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গত ২৫ নভেম্বর ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। ওই মামলায় চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ গত ২ জানুয়ারি চিন্ময়ের জামিন আবেদন খারিজ করে আদেশ দেন। এ নিয়ে হাইকোর্টে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন চেয়ে ১২ জানুয়ারি আবেদনটি করেন চিন্ময়। এরপর ৪ ফেব্রুয়ারি চিন্ময়ের জামিন প্রশ্নে রুল দেন হাইকোর্ট। রুলে রাষ্ট্রপক্ষকে দুই সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
৮ জনকে হত্যা-আত্মহত্যা
আজকের সংবাদ সম্মেলনে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সংখ্যালঘু নির্যাতনের তথ্য তুলে ধরেছে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট। নিজস্ব তথ্য ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে তারা এ তথ্য তুলে ধরে।
লিখিত বক্তব্যে জোটের প্রতিনিধি প্রসেনজিৎ কুমার হালদার জানান, এ সময়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের আটজন হত্যা ও আত্মহত্যার শিকার হয়েছেন। পারিবারিক নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে পাঁচটি। মন্দিরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ১১টি। আর বাড়িঘরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে পাঁচটি। ৪৭টি দোকানে হামলা হয়েছে। জমি দখলের ঘটনা ঘটেছে তিনটি।
এ আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের প্রতিনিধি চন্দন সরকার। তিনি বলেন, দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হচ্ছে। সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের প্রতিনিধি রাজেশ নাহা অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
‘নির্বাচন কমিশন সার্ভিস’ গঠনে কার্যকর পদক্ষেপসহ ৫ সুপারিশ
‘নির্বাচন কমিশন সচিবালয় (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫’ দ্রুত জারি করে ‘নির্বাচন কমিশন সার্ভিস’ গঠনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণসহ ৫ দফা সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন। একই সঙ্গে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব প্রদানের আহ্বান জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব সুপারিশ তুলে ধরেন সংগঠনটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ মনির হোসেন।
আরো পড়ুন:
ফেব্রুয়ারিতেই মহোৎসবে জাতীয় নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা
বেড়ায় রবিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল, সড়ক ও নৌপথ অবরোধের ঘোষণা
অ্যাসোসিয়েশনের সুপারিশগুলো হলো
১. নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী দ্রুততম সময়ে ‘নির্বাচন কমিশন সচিবালয় (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫’ জারি করে ‘নির্বাচন কমিশন সার্ভিস’ গঠন এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের মাধ্যমে নির্বাচন পরিচালনা।
২. প্রস্তাবিত অর্গানোগ্রাম অনুমোদন, নতুন পদসৃজন, আপগ্রেডেশন এবং প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সরবরাহ নিশ্চিতকরণ।
৩. জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন-২০২৩ বাতিল করে জাতীয় পরিচয়পত্র কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের কাছে হস্তান্তর।
৪. আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর নির্বাচন ভবনে সব কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে ‘নির্বাচন কর্মকর্তা সম্মেলন-২০২৫’ আয়োজন।
৫. নির্বাচন কর্মকর্তা সম্মেলন-২০২৫ আয়োজনে প্রস্তুতিমূলক বিভিন্ন কমিটি গঠন।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ করতে নির্বাচন কমিশন আরো কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে।
ঢাকা/আসাদ/সাইফ