Samakal:
2025-09-18@08:03:47 GMT

মধ্য শাবানের পুণ্যময় রাত

Published: 13th, February 2025 GMT

মধ্য শাবানের পুণ্যময় রাত

মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মুসলিম জাতিকে এমন কিছু বরকতময় দিন ও রাত উপহার দিয়েছেন, যাতে ইবাদত করলে মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়। এগুলোর মধ্যে শবেবরাত অন্যতম। 
ফারসি ভাষায় ‘শব’ অর্থ রাত; ‘বরাত’ অর্থ ভাগ্য। শবেবরাতের অর্থ হলো ভাগ্যরজনি। যেহেতু এ রাতে মানুষের ভাগ্য লিপিবদ্ধ করা হয়, তাই একে ভাগ্যরজনি বলা হয়। হাদিস শরিফে বর্ণিত হজরত ইকরামা (রা.

) বলেন, এ রাতে আগামী এক বছরের রিজিক নির্ধারণ করা হয়।

আগামী এক বছরে যারা মারা যাবে, যারা জন্মগ্রহণ করবে, তাদের তালিকা এ রাতে নির্দিষ্ট ফেরেশতাগণের হাতে সোপর্দ করা হয়। অন্যদিকে আরবি পরিভাষায় এটিকে ‘লাইলাতুল বারাআত’ বলা হয়। লাইলাতুল অর্থ রাত আর ‘বারাআত’ অর্থ মুক্তি, ক্ষমা। যেহেতু এ রাতে আল্লাহ তাঁর অগণিত বান্দাকে ক্ষমা করেন, তাই একে মুক্তির রজনি বলা হয়। হাদিসে এ রাতকে ‘লাইলাতুল নিসফি মিন শাবান’ বা শাবান মাসের মধ্যবর্তী রাত নামে অভিহিত করা হয়েছে। 

একাধিক সহিহ হাদিসে এ রাতের মর্যাদা প্রমাণিত। তা ছাড়া এ রাতের মাহাত্ম্য সম্পর্কে রয়েছে বিশিষ্ট ইমামদের নির্ভরযোগ্য বহু বক্তব্য। শবেবরাতে আল্লাহর অপার অনুগ্রহ নাজিল হয়। বিখ্যাত সাহাবি হজরত মুয়াজ বিন জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলে কারিম (সা.) এরশাদ করেন, আল্লাহ তায়ালা অর্ধ শাবানের রাতে অর্থাৎ শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে তাঁর সৃষ্টির দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন। (সহিহ ইবনে হিব্বান)

অপর হাদিসে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, ‘শাবান মাসের মধ্যবর্তী রাতে আল্লাহ তায়ালা তাঁর সব বান্দাকে ক্ষমা করেন। তবে মুশরিক, হিংসুক, জাদুকর, ব্যভিচারী, মা-বাবার অবাধ্য সন্তান ও অন্যায়ভাবে হত্যাকারীকে ক্ষমা করেন না।’ (ইবনে মাজাহ) 
শবেবরাতে বিশেষ কিছু আমল রয়েছে, যা করলে বান্দা আল্লাহর নৈকট্য লাভে ধন্য হয়। এ রাতে করণীয় আমলগুলোর মধ্যে রয়েছে: রাতে নফল নামাজ আদায় করা এবং দিনে রোজা রাখা। এ রাতে সাধ্যমতো নফল নামাজ আদায় করা এবং পরদিন নফল রোজা রাখা খুবই পুণ্যের কাজ।
হাদিস শরিফে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, ‘যখন শাবান মাসের মধ্যবর্তী রাত আসবে, তখন তোমরা দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করবে এবং দিনে রোজা রাখবে।’ (ইবনে মাজাহ)
অন্যত্র হজরত ইবনে উমর (রা.) বলেন, ‘পাঁচটি রাত এমন রয়েছে, যে রাতের দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না– ১. জুমার রাত, ২. রজব মাসের প্রথম রাত, ৩. শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাত (শবেবরাত),

৪. ঈদুল ফিতরের রাত; ৫. ঈদুল আজহার রাত।’
শবেবরাতের রাতে রাসুলুল্লাহ (সা.) জান্নাতুল বাকিতে উম্মতের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করতেন। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘একদা এ রাতে আমি রাসুলুল্লাহকে (সা.) না পেয়ে তাঁকে খুঁজতে থাকি। এর পর আমি তাঁকে জান্নাতুল বাকিতে দু’হাত তোলা অবস্থায় পেলাম।’ (ইবনে মাজাহ)। 
শবেবরাত পুণ্যময় রজনি। এ রাতে যে কোনো ধরনের পাপ বা গর্হিত কাজ না করে বরং আল্লাহপাকের সন্তুষ্টি লাভের নিমিত্তে ইবাদতে কাটিয়ে দেওয়াই উত্তম। পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য যা ক্ষতিকর এবং যে কাজের দ্বারা সমাজের মানুষের মাঝে ভীতির সৃষ্টি করে, তা পরিহার করাই হলো ইসলামের অন্যতম নির্দেশ।
এ রাতে আতশবাজি ছোড়া এবং পটকা ফুটানো উচিত নয়। এর কারণে যেখানে সেখানে অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারে। তাই এসব কাজ ইসলাম কখনোই সমর্থন করে না। কোনো কোনো এলাকায় এ রাতে অনেক বাড়িঘর, মসজিদ ও ধর্মীয় স্থাপনায় আলোকসজ্জা করা হয়। অথচ এগুলোর সঙ্গে শবেবরাতের কোনো সম্পর্ক নেই। তাই এসব করা অপচয়ের শামিল। আল্লাহ তায়ালা সুরা বনি ইসরাইলে এরশাদ করেন, ‘তোমরা খাও এবং পান করো, কিন্তু অপচয় কোরো না। নিশ্চয়ই অপচয়কারী শয়তানের ভাই।’ 

ড. মো. শাহজাহান কবীর: বিভাগীয় প্রধান, 
ইসলামিক স্টাডিজ, ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ঢাকা
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আল ল হ ত বর ণ ত

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকায় অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে শনিবার

ঢাকায় দুই দিনব্যাপী অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে আগামী শনিবার। এতে অটোমোবাইল, কৃষি যন্ত্রপাতিসহ হালকা প্রকৌশল খাতের ২৬টি স্টল থাকবে। পাশাপাশি শিল্পের সহায়ক প্রতিষ্ঠানের স্টল থাকবে আরও ১২টি। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

বাংলাদেশ অটোমোবাইলস অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ও অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সহযোগিতায় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। ঢাকার তেজগাঁও শিল্প এলাকায় এডিসন প্রাইম ভবনের ছাদে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। এই ভবনেই বিসিআইয়ের কার্যালয় অবস্থিত।

আজ বৃহস্পতিবার বিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দুই দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী নিয়ে বিস্তারিত জানান চেম্বারটির সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী। আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী, বিসিআইয়ের পরিচালক মো. শাহেদ আলম, এস এম শাহ আলম, জিয়া হায়দার প্রমুখ।

বিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, হালকা প্রকৌশল খাতে বাংলাদেশে বর্তমানে ছোটবড় প্রায় ৫০ হাজার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই খাতে কাজ করেন ১০ লাখ মানুষ। হালকা প্রকৌশল খাতে স্থানীয় বাজার ১২ বিলিয়ন ডলারের হলেও দেশীয় উৎপাদকেরা অর্ধেক পূরণ করতে পারছেন। তা ছাড়া হালকা প্রকৌশল খাতের বৈশ্বিক বাজারের আকার প্রায় ৮ ট্রিলিয়ন ডলার। তিনি আরও বলেন, তৈরি পোশাক খাত আর বেশি মূল্য সংযোজন করতে পারবে না। ফলে আমাদের অর্থনীতিকে টেকসই করতে হলে আমাদের অন্য খাতে যেতে হবে। সে ক্ষেত্রে হালকা প্রকৌশল খাত পারে বড় সম্ভাবনার।

অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর কৃষিজমি কমছে। কৃষকের বয়স বাড়ছে, তার কারণ তরুণেরা খুব কম কৃষিকাজে আসছেন। বিশ্বের অনেক দেশেই মোট জনগোষ্ঠীর ১০ শতাংশের কম কৃষিকাজে নিয়োজিত। ১০ শতাংশ মানুষ বাকি ৯০ শতাংশের জন্য খাদ্য জোগান দিচ্ছে। সে কারণে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। বাংলাদেশেও কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। তবে বড় অংশই আমদানি করতে হচ্ছে।

আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে ১২০০ থেকে ১৫০০ কোটি টাকার কৃষি যন্ত্রপাতির বাজার আছে। তার মধ্যে দেশীয় কোম্পানিগুলো সরবরাহ করছে মাত্র ৪০০ থেকে ৪৫০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ। নীতিসহায়তা পেলে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ