বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে ধীরগতি চলছেই। গত জানুয়ারি পর্যন্ত চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সাত মাসে বাস্তবায়ন হয়েছে বরাদ্দের মাত্র সাড়ে ২১ শতাংশের মতো। এ হার সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম। টাকার অঙ্কেও বাস্তবায়নের পরিমাণ কমে গেছে অনেক।
গতকাল বৃহস্পতিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) এডিপির বাস্তবায়ন সংক্রান্ত হালনাগাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, গত জুলাই-জানুয়ারি সময়ে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ২১ দশমিক ৫২ শতাংশ। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে একই সময়ে বাস্তবায়ন হয় ২৭ দশমিক ১১ শতাংশ। প্রথম সাত মাসে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২৮ দশমিক ১৬ শতাংশ, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩০ দশমিক ২১ শতাংশ এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে ২৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ হারে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছিল।
টাকার অঙ্কেও চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে এডিপি বাস্তবায়নের পরিমাণ গত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। গত জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে এডিপির ৫৯ হাজার ৮৭৬ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ব্যয় হয় এডিপির ৭৪ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা।
একক মাস হিসেবে গত জানুয়ারিতে বাস্তবায়ন হয়েছে এডিপির ৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই মাসে এ বাস্তবায়নের হার ছিল ৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ। এ বছরের জানুয়ারিতে অর্থ ব্যয় হয় ৯ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে ছিল ১২ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা।
অতিমারি করোনার অভিঘাতের পর সব ধরনের ব্যয়ে সাশ্রয়ী নীতি নেওয়া হয়। এ কারণে প্রায় তিন বছর ধরে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের গতি ধীর। এর মধ্যে গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর এডিপির আওতায় বাস্তবায়নাধীন সব প্রকল্প পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত হয়। রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া প্রকল্পগুলো বাদ দেওয়া হচ্ছে। আবার কিছু প্রকল্পের পরিচালক পালিয়ে গেছেন। সরকার পতনের আন্দোলনে অবরোধসহ রাজনৈতিক বিভিন্ন কর্মসূচিতে বিভিন্ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ বন্ধ ছিল। এমন বাস্তবতায় জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত এডিপি বাস্তবায়ন একপ্রকার স্থবির হয়ে পড়েছে।
চলতি অর্থবছর ১ হাজার ৩২৭টি প্রকল্প, ১৭টি উপপ্রকল্প ও উন্নয়ন সহায়তা থোক হিসেবে ৯টি প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এসব প্রকল্পের বিপরীতে মূল এডিপিতে বরাদ্দের পরিমাণ ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এড প প রকল প বছর র দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি বাস্তবায়নে কমিটি
সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি (গভর্নেন্স পারফরমেন্স মনিটরিং সিস্টেম- জিপিএমএস)’ বাস্তবায়নে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি করে তিন সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’ গঠন করেছে সরকার।
সম্প্রতি এই কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
কমিটিতে বাকি দুই সদস্য হলেন, পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ও খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।
অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সরকারি কাজের জবাবদিহিতা, দক্ষতা ও জনকল্যাণ নিশ্চিতে প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজের মূল্যায়নের নতুন পদ্ধতি চালু হয়েছে। বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির (এপিএ) পরিবর্তে নতুন সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি (জিপিএমএস) চালু করা হয়েছে। এই জিপিএমএস বাস্তবায়নে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’ গঠন করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব বা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, অর্থ সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার), বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব কমিটিকে সহায়তা করবেন। তাছাড়া, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে।
এ কমিটি জিপিএমএস বাস্তবায়নের বিষয়ে সার্বিক দিক-নির্দেশনা দেবে। মন্ত্রণালয় বা বিভাগের জিপিএমএসে সেকশন ১-এর আওতায় প্রস্তুত করা পরিকল্পনা অনুমোদন দেবে এবং অর্থবছর শুরুর আগে মন্ত্রণালয় বা বিভাগের জিপিএমএস পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চূড়ান্ত করবে এ কমিটি।
এছাড়া, প্রতি অর্থবছর শেষে মন্ত্রণালয় বা বিভাগের জিপিএমএসের সার্বিক মূল্যায়ন পর্যালোচনা করে সুপারিশ দেবে। জিপিএমএস বিষয়ে সরকারের দেওয়া অন্য যেকোনো দায়িত্ব পালন করবে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা