আগামীর ভাষা হবে আরও উন্মুক্ত, আরও দৃষ্টিনন্দন
Published: 15th, February 2025 GMT
দিন দিন বাংলা ফন্ট বর্ণিল হয়ে উঠছে। দেশের তরুণরা বাংলা টাইপোগ্রাফির জগতে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। তারা বাংলা টাইপ ডিজাইন ও ফন্ট অর্থের বিনিময়ে কেনার মতো মূল্যবান করে তুলছে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে সামনে রেখে বাংলা লিপির নান্দনিক উৎকর্ষে কাজ করা এমনই দুই তরুণের সৃজনশীল জগৎ লিপিকলা ও বেঙ্গল ফন্টস-এর কথা তুলে ধরছেন আশিক মুস্তাফা
একটি ফন্ট সেট তৈরিতে বহুদিন চিন্তাভাবনা, ডিজাইনে পরিবর্তন ও বেটা টেস্টিংয়ের প্রয়োজন। বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় একাধিক স্টাইল এবং ওয়েট ডিজাইন করতে ৩০ থেকে ৪৫ দিন নিরন্তর প্রচেষ্টার প্রয়োজন। এই সময়টা দিয়েই তরুণরা ফন্ট তৈরি করেন। দেশে কয়েকটি উদীয়মান ফন্ট তৈরির প্রতিষ্ঠান থাকলেও সাধারণভাবে ফন্ট তৈরি থেকে আর্থিক লাভ কম। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্র্যান্ডগুলোয় নিজস্ব ফন্ট তৈরির প্রবণতা বেড়েছে। এ ছাড়া সহজলভ্য ফন্টের চাহিদাও বাড়ছে। টাইপফেস ডিজাইনার তৌহিদুল ইসলাম হিমেল বলেন, ‘কাস্টমাইজ ফন্ট একটি ব্র্যান্ডকে প্রকাশে অথেনটিসিটি যোগ করে। এটি ব্র্যান্ডের স্বতন্ত্রতাও প্রকাশ করে। আসলে যখন একটি বৈশ্বিক ব্র্যান্ড কোনো অঞ্চল বা দেশে ব্যবসা শুরু করে, তখন এটি সেই অঞ্চলের সংস্কৃতির সঙ্গে মিলিয়ে তার পরিচয়কে নতুন আঙ্গিকে তুলে ধরার চেষ্টা করে। এই প্রক্রিয়ার একটি অংশ হচ্ছে যোগাযোগের অনন্য উপায় তৈরি করা। সে ক্ষেত্রে কাস্টম টাইপফেস ওই পথ তৈরি করে দেয়।’
আবির্ভাব দিয়ে শুরু
তৌহিদুল ইসলাম হিমেলের তৈরি করা প্রথম বাংলা ফন্টের নাম ‘আবির্ভাব’। ড্যাফোডিল
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মাল্টিমিডিয়া অ্যান্ড ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি বিভাগের ছাত্র থাকা অবস্থায় তিনি পড়ালেখার অংশ হিসেবে
‘টাইপোগ্রাফি’ কোর্স করেছিলেন। তাও প্রথম বর্ষে। কোর্সের শিক্ষক মিজানুর রহমানের কাছ থেকে হাতেখড়ি নিয়ে ‘আবির্ভাব’ ফন্টটি তৈরি করেন হিমেল। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। ফন্টটি অনলাইনে দেওয়ার পর এক মাসের মধ্যে সেটি প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ ডাউনলোড করে। শুধু তাই নয়, শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান এবং বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণার ব্যানারে ফন্টটি ব্যবহৃত হতে থাকে।
বেঙ্গল ফন্টসের ১৭টি ফন্ট
পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী যুক্ত হন তৌহিদুলের সঙ্গে। একসঙ্গে তারা তৈরি করেছেন বেশ কয়েকটি ফন্ট। বর্তমানে তাদের বেঙ্গল ফন্টসের ওয়েবসাইটে ১৭টি বাংলা ফন্ট আছে। নামগুলোও বেশ সুন্দর। যেমন– মৃদুল রেট্রো, শুদ্ধ, নির্ভীক, চিলেকোঠা, শরৎ, অপরাহ্ণ, বসন্ত, অনির্বাণ ইত্যাদি। এসব নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে নানান গল্প। অনলাইনে নামমাত্র ৭৫ থেকে ২৩০ টাকার মধ্যে বেঙ্গল ফন্টসের ফন্টগুলো ডাউনলোড করা যাবে https://www.
আরও উন্মুক্ত, আরও দৃষ্টিনন্দন…
কাস্টমাইজ ফন্টগুলো সহজলভ্য ফন্টগুলোর থেকেও কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে। কেননা সহজলভ্য ফন্টগুলো সবসময় ব্র্যান্ডের প্রয়োজনীয়তা অনুসারে বৈশিষ্ট্য ফুটিয়ে তুলতে পারে না। গ্লোবাল ব্র্যান্ডগুলোকে একাধিক ভাষা নিয়ে কাজ করতে হয়। এ ক্ষেত্রে সব ভাষায় একটি অভিন্ন ধরনের নকশা তৈরি করা আবশ্যক। ফন্ট ভাষায় বৈচিত্র্য আনে। ছাপা নকশায় যে স্বাধীনতা আছে, ইন্টারনেট বা ডিজিটাল মাধ্যমে তা নেই। ফন্টে বৈচিত্র্য বা সৃজনশীলতা আনতে আরও নান্দনিক ফন্ট বানাতে হবে। তরুণরা সেই কাজটি ভালোভাবেই করছে। আগামীর ভাষা হবে আরও উন্মুক্ত। আরও দৃষ্টিনন্দন!
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ড জ ইন
এছাড়াও পড়ুন:
১১ নাটক নিয়ে শিল্পকলায় চলছে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ নাট্যোৎসব’
জুলাই আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রচিত ১১ দলের ১১টি নতুন প্রযোজনা নিয়ে শিল্পকলা একাডেমিতে চলছে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ নাট্যোৎসব’। জাতীয় নাট্যশালায় গত ৩১ জুলাই শুরু হওয়া এই নাট্যোৎসব চলবে ৮ আগস্ট পর্যন্ত। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে আয়োজিত এ উৎসবে নাট্যরূপে উঠে আসছে ইতিহাস, আন্দোলন ও সময়ের গল্প।
উৎসবের দ্বিতীয় দিন গতকাল শুক্রবার জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয় ‘শুভঙ্কর হাত ধরতে চেয়েছিল’। তীরন্দাজ রেপার্টরি প্রযোজিত নাটকটির রচনা ও নির্দেশনায় দীপক সুমন। গতকালই ছিল এ নাটকের উদ্বোধনী প্রদর্শনী। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মঞ্চস্থ নতুন এ নাটক নিয়ে আলোচনা হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বৃষ্টি উপেক্ষা করে উল্লেখযোগ্য দর্শকের উপস্থিতি ছিল। দর্শকদের অনেকেই বলছেন, এই নাটকে যেন এক নাগরিকের নির্জনতা, এক প্রেমিকের না-পাওয়া, এক বিপ্লবীর বিষণ্নতা আর এক সাধারণ মানুষের অসহায়তা একসূত্রে বাঁধা পড়েছে।