জাতিসংঘের প্রতিবেদনের আলোকে সাম্প্রদায়িক সহিংস ঘটনার তদন্তের দাবি ঐক্য পরিষদের
Published: 16th, February 2025 GMT
গত বছরের আগস্ট মাসের শুরু থেকে পরবর্তী সময়ে দেশে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক সহিংসতা–সম্পর্কিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বস্তুনিষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক ঘোষিত দায়মুক্তির আদেশ প্রত্যাহারেরও দাবি জানানো হয়েছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদনের আলোকে এ ব্যবস্থা নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে ঐক্য পরিষদ। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আজ রোববার এক বিবৃতির মাধ্যমে এ দাবি জানান।
এতে বলা হয়, ১২ ফেব্রুয়ারি সুইজারল্যান্ডের জেনেভা থেকে বাংলাদেশে জুলাই-আগস্ট ২৪-এর মানবাধিকার লঙ্ঘন–সম্পর্কিত জাতিসংঘ মানবাধিকার তথ্যানুসন্ধানী দলের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এতে গত বছরের আগস্টের শুরু থেকে পরবর্তী সময়ে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ও আহমদিয়া মুসলিম এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে নিশানা করে হত্যা, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ এবং মাজার, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলার ঘটনার তথ্য উল্লেখ আছে। কিন্তু তাতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা–সম্পর্কিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের স্বীকৃতি মিললেও প্রকৃত চিত্র যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়নি।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বাংলাদেশ দীর্ঘ সময় ধরে বিচারহীনতা ও প্রতিশোধের চক্রের মধ্যে রয়েছে উল্লেখ করে বলা হয়, আগস্টের শুরু থেকে যারা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ও আহমদিয়া মুসলিম এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে তাদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন চালাচ্ছে, তাদের অনেকে দৃশ্যমান দায়মুক্তি পাচ্ছে। জাতিসংঘের এ উদ্বেগকে ‘যথার্থ’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে ঐক্য পরিষদের বিবৃতিতে।
সরকারপ্রধানের কাছে ঐক্য পরিষদের জোর দাবি, জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধানী দলের প্রকাশিত প্রতিবেদনের অভিমতের আলোকে গত বছরের ১৪ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক ঘোষিত দায়মুক্তির আদেশ অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। উল্লিখিত সময়ে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক সহিংসতা–সম্পর্কিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাবলি বস্তুনিষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
এবারও কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে নেই বাংলাদেশ
দ্বিতীয় বছরের মত কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের কোনো সিনেমাা বা তথ্যচিত্র দেখানো হচ্ছে না। সম্প্রতি কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব কমিটির তরফে সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি জানানো হয়ছে। পরবর্তীতে কমিটির তরফে তাদের নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে যে ছবি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে তাতে কোন ক্যাটাগরিতেই বাংলাদেশি সিনেমার নাম উল্লেখ নেই।
মূলত ভিসা জটিলতা এবং রাজনৈতিক কারণেই এই চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের উপস্থিতি থাকছে না।
বিষয়টি নিয়ে গত বছরই উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের চেয়ারপার্সন পরিচালক গৌতম ঘোষ। সেসময় তাকে বলতে শোনা গিয়েছিল, “এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। সেদেশে ভিসা সমস্যা রয়েছে। আর বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসতে অনেকটা সময় লাগবে। স্বাভাবিকভাবেই এই অবস্থায় চলচ্চিত্র উৎসবের তালিকায় বাংলাদেশের কোনো ছবি নেই। আমরা আশা করব চলচ্চিত্র উৎসবের পরবর্তী এডিশনের (৩১ তম) আগে প্রতিবেশী দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।”
কিন্তু এক বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও অবস্থার যে কোনো পরিবর্তন হয়নি তা চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের অনুপস্থিতির ঘটনাটাই পরিষ্কার।
যদিও কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের জুরি কমিটির এক সদস্য বলেছেন, “আন্তর্জাতিক বিভাগে বাংলাদেশ থেকে শুধুমাত্র একটি ছবি জমা দেওয়া হয়েছিল। তানভীর চৌধুরীর ‘কাফ্ফারাহ’। কিন্তু দুঃখের বিষয় এটি আমাদের কাঙ্ক্ষিত মানদণ্ড পূরণ করতে পারেনি। ফলে চলচ্চিত্র উৎসবে এই ছবিটি জায়গা পায়নি।”
চলতি বছরের ৬ নভেম্বর থেকে শুরু হতে চলেছে ৩১ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। এক সপ্তাহব্যাপী এই উৎসব চলবে আগামী ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত। এই উৎসবে ৩৯ টি দেশের ২১৫ টি ছবি দেখানো হবে। ভারত ছাড়াও অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানি, পোল্যান্ড, বেলজিয়াম, ইতালি, ব্রাজিল, মরক্কো, অস্ট্রিয়া, তুরস্ক, বলিভিয়া, গুয়েতেমালা, শ্রীলংকা, চীন, জাপান, ইরান, সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান, ফিলিস্তিন, ইরাক, সৌদি আরব, মিশর, সুদান, লেবানন।
সুচরিতা/শাহেদ