ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার জিনদপুর ইউনিয়নের মেরকুটা গ্রামের গৃহবধূ আছিয়া খাতুন কয়েক মাস আগে বাড়িতে দাইয়ের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করেন। এর পরই তাঁর শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। উপায় না পেয়ে সারারাত অপেক্ষা করে ভোরে তাঁকে সদর হাসপাতালে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ততক্ষণে তাঁর রক্তচাপ কমে আসে। পরে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
দেশের বিভিন্ন এলাকায় এভাবে অদক্ষ দাইয়ের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করতে গিয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন প্রসূতিরা। বেসরকারি সংস্থা উন্নয়ন বিকল্পের নীতিনির্ধারণী গবেষণার (উবিনীগ) এক জরিপে দেখা গেছে, গ্রামের ৮৫ শতাংশ নারী সন্তান প্রসবের জন্য দাইয়ের ওপর নির্ভরশীল। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ৩১ লাখ নারী সন্তান প্রসব করেন। এর মধ্যে ৪৭ শতাংশ হাসপাতাল-ক্লিনিকে, ৫৩ শতাংশ বাসাবাড়িতে। ১৬ লাখ ৪৩ হাজার সন্তান প্রসব হয় বাসাবাড়িতে অদক্ষ দাইয়ের হাতে। হাসপাতাল ও বাসায় সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে প্রতি লাখে ১৭২ নারী প্রাণ হারান।

বেড়েছে প্রসূতির মৃত্যু
দেশে চলতি দশকের শুরুতে প্রসূতির মৃত্যু বেড়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, প্রতি লাখ জীবিত শিশু জন্মের বিপরীতে মাতৃমৃত্যুর অনুপাত দাঁড়িয়েছে ১৬৮। যদিও আগের বছরগুলোয় তা কমতে শুরু করেছিল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একলামশিয়া বা খিঁচুনি, ফুল না আসা ও প্রসব-পরবর্তী রক্তক্ষরণের কারণে মাতৃমৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। এ ছাড়া গ্রামাঞ্চলে যানবাহন সমস্যা, হাসপাতালে সময়মতো সেবা না পাওয়ার আশঙ্কা এবং ছুটির দিনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, গুণগত বা নির্ধারিত সেবা না পাওয়া মাতৃমৃত্যু বেড়ে যাওয়ার বিশেষ কারণ।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা নারীপক্ষর প্রকল্প পরিচালক সামিয়া আফরিন বলেন, প্রসব বেদনা যে কোনো সময় উঠতে পারে। সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সময়মতো চিকিৎসক মেলে না। দাইরা নিঃস্বার্থভাবে প্রসূতির পাশে যে কোনো সময় এসে দাঁড়ান। দাইদের অবদান অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে প্রসূতির বিপদচিহ্ন জানাতে তাদের প্রশিক্ষণ বাড়াতে হবে এবং প্রসবকালীন সহায়তার জন্য হাসপাতালের চিকিৎসকের সঙ্গে দাইদের যোগসূত্র ঘটাতে হবে।

বিবিএসের স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস-২০২২ বছরভিত্তিক মাতৃমৃত্যুর চিত্র দেখিয়েছে। এতে দেখা যায়, গত সাড়ে তিন দশকের মধ্যে ২০০২ ও ২০০৭ সালে আগের বছরের তুলনায় মাতৃমৃত্যু বেশি ছিল। আবার ২০২১ সালে আগের বছরের তুলনায় মাতৃমৃত্যু বেশি দেখা যায়।
মাতৃমৃত্যুর অনুপাত কমানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশে উন্নতি হয়েছে উল্লেখ করলেও জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) বলছে, মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যু হ্রাসের উন্নতির পথে এখনও কিছু সীমাবদ্ধতা রয়ে গেছে। এগুলো হলো অল্পবয়সী প্রসূতির মাতৃসংক্রান্ত জটিলতা, বাল্যবিয়ে ও পরবর্তীকালে গর্ভধারণ।
কমছে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর ব্যবহার
বিগত সময়ে দেশে যেসব সাফল্য ছিল, তার মধ্যে অন্যতম জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করে পরিকল্পিত পরিবার গঠন। কিন্তু সেই সাফল্যে ভাটা পড়েছে। মেরী স্টোপস বাংলাদেশের লিড অ্যাডভোকেসি মনজুন নাহার বলেন, জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারের হার কমে যাওয়ার পেছনে সরকারি সেবার মান ও মনোযোগ কমে যাওয়া দায়ী। এ ছাড়া অসচেতনতা, দারিদ্র্য ও জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধির কারণে দম্পতিদের মধ্যে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করার প্রবণতা কমছে। আতঙ্কের বিষয় হচ্ছে, জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর ব্যবহার কমলে গর্ভপাত ও গর্ভপাতের কারণে মৃত্যু বৃদ্ধির আশঙ্কা থাকে।
বাংলাদেশে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী ব্যবহারের অর্ধেকই পিল। বাকি অর্ধেকের মধ্যে আছে ইনজেকশন, কনডম, নারী ও পুরুষের বন্ধ্যাকরণ, ইমপ্লান্ট ইত্যাদি। কমিউনিটিগুলোতে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর স্বল্পতাসহ কয়েকটি কারণে ব্যবহার না করায় অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণের কারণে সন্তান প্রসবের হার যেমন বেড়েছে, তেমনই গলির দোকান থেকে গর্ভপাতের ওষুধ খাবার কারণেও রক্তক্ষরণ হয়ে অনেক প্রসূতি মারা যাচ্ছেন। আবার শুধু যে সন্তান প্রসবের সময়েই মায়েরা মারা গেছেন, তা নয়। আর্লি প্রেগন্যান্সিতেও নানান জটিলতার কারণে মায়েদের মৃত্যু বেড়েছে।

বিবিএসের সর্বশেষ ২০২৪ সালে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস-২০২৩’ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারের হার কমে দাঁড়ায় ৬২ দশমিক ১ শতাংশে। ২০১৫ সালের পর এই হার সর্বনিম্ন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জন্মনিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে আধুনিক পদ্ধতি নেওয়ার হার ৬১ শতাংশ এবং সনাতন পদ্ধতি নেওয়ার হার ১ শতাংশের বেশি। শহরের তুলনায় গ্রামে পদ্ধতি ব্যবহারের 
হার কম। এ হার শহরে প্রায় ৬৪ শতাংশ, গ্রামে প্রায় ৬২ শতাংশ।
সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াতেও নারী না থাকায় ‘আনএক্সপেক্টেড প্রেগন্যান্সি’ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আইনুন নাহার বলেন, পরিবার থেকে শুরু করে সর্বত্র সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ খুবই সীমিত। পুরুষের সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে গিয়ে অপ্রত্যাশিতভাবে গর্ভধারণ করতে হয় অনেক নারীকে। আবার অনেককেই পুরুষের সিদ্ধান্তে ‘অনিরাপদ গর্ভপাত’ করাতে হয়। এতে নারীর স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যায়।

এদিকে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী এখনও বাংলাদেশে বাল্যবিয়ে কমেনি। অথচ বাল্যবিয়ে ও কিশোরীর গর্ভধারণ (১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সীর) মাতৃমৃত্যুর অন্যতম কারণ। ২০ বছর বয়সের আগে সন্তান জন্ম দেওয়া নারীর মৃত্যুঝুঁকি বেশি।
রাজধানীর আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সেহেরীন ফারহাদ সিদ্দিকা বলেন, দেশে মাতৃমৃত্যুর অন্যতম কারণ রক্তক্ষরণ। কিন্তু অনিরাপদ গর্ভপাতের কারণে অনেক মা মারা যান। এ ক্ষেত্রে নারীর সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা থাকলে এমনটা হতো না। নারীর ইচ্ছার বাইরে গিয়ে সন্তান ধারণ করতে হতো না। জাতীয় পর্যায় থেকে পরিবার পর্যন্ত সর্বত্র 
লিঙ্গ বৈষম্য দূর করতে হবে। নারীর ক্ষমতায়ন বাড়াতে হবে। তাহলে যে কোনো দুর্যোগ বা সংকটে নারী সুস্থ থাকবেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম ত ম ত য র অন ব যবহ র র হ র কম পর ব র গ রহণ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিষ্ঠার ৮ বছরেও নিজস্ব ভবন পায়নি ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড 

ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, শেরপুর এবং জামালপুর চার জেলা নিয়ে ২০১৭ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড। প্রতিষ্ঠার ৮ বছর পার হলেও শিক্ষা বোর্ডটি এখনও পায়নি নিজস্ব ভবন। বর্তমানে নগরীর কাঠগোলায় পৃথক দু’টি ভাড়া ভবনে চলছে শিক্ষা বোর্ডের কার্যক্রম। শিক্ষা উপকরণ রাখার জন্য আরও তিনিটি আলাদা ভবন ভাড়া নেয়া হলেও এগুলোর অবস্থাও নাজুক। 

ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ভবন ১ ও ২ এর মধ্যবর্তী দূরত্ব দুই কিলোমিটার। আবার গোডাউন গুলোর অবস্থানও নগরীর ভিন্ন ভিন্ন জায়গায়। এতে দুই অফিস ও গোডাউনগুলোতে কাজ করতে বেগ পোহাতে হচ্ছে কর্মকর্তা কর্মচারীদের। 

তাছাড়া জনবল সংকটেও ধুকছে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড। এখন পর্যন্ত স্বায়ত্তশাসিত এ প্রতিষ্ঠানটির নির্দিষ্ট কোনো অর্গানোগ্রাম নেই। ১২২ জন কর্মকর্তা কর্মচারীর চাহিদা থাকা সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠানটি চলছে মাত্র ২২ জন কর্মকর্তা ও ১৯ জন কর্মচারী দিয়ে। স্বল্প সংখ্যক জনবল দিয়ে চার জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কার্যক্রম পরিচালনা করতে খেতে হচ্ছে তাদের। 

ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের কাঠগোলা বাজারে অবস্থিত ভবন ১ এ কার্যক্রম চলে চেয়ারম্যান, সচিব, হিসাব ও আই টি শাখার। এই ভবনের নিচ তলায় গাদাগাদি করে থাকেন আনসার সদস্যরা। আর ভবন ২ এ আছে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তর, স্কুল কলেজ পরিদর্শন শাখা। 

বোর্ড সূত্রে জানা যায়, দুটি মূল ভবন ও তিনটি গোডাউন বাবদ প্রতিমাসে ৭ লাখ টাকা ভাড়া গুনতে হয়। শিক্ষা বোর্ডে নিজস্ব ভবন থাকলে বছরে কোটি টাকা ভাড়া বেঁচে যেত সরকারের। 

ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. শহিদুল্লাহ যোগদান করেছেন চলতি বছরের জানুয়ারিতে। তিনি সমকালকে জানান, ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের ভবন তৈরির জন্য চারটি জমি প্রাথমিকভাবে দেখা হয়েছে। এরমধ্যে রহমতপুর বাইপাস এলাকায় ১.৯৫ একরের একটি জমি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ময়মনসিংহের শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলীদের সমন্বয়ে ভিজিট করা হয়েছে। 

পরে প্রতি ফ্লোরে ১০ হাজার স্কয়ার ফিটের ১০ তলা ভবনের চাহিদা দিয়ে শিক্ষা প্রকৌশলে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আট বছরে কেন নিজস্ব ভবন হয়নি শিক্ষা বোর্ডের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আমি এ বছরই বোর্ডে যোগদান করেছি। আগে জমি কেনা ও  ভবনের কাজ কেন হয়নি তা আগের চেয়ারম্যানরা বলতে পারবেন। 

সরেজমিন দেখা যায়, ভবনে ১ ও ২ এ ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা পরীক্ষার খাতা ও আনুষাঙ্গিক জিনিসপত্র নিতে এসে ভিড় জমাচ্ছেন। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানরা এই ভবন থেকে ওই ভবনে বারবার যাতায়াত করছেন। দুই ভবনের দূরত্ব ২ কিলোমিটার এবং গোডাউন গুলো আরও দূরত্বে অবস্থিত হওয়ায় এগুলো সংগ্রহ করতে তাদের যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে। 

শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, দুই ভবন ও গোডাউনে দৌড়ঝাঁপ করে তাদের কাজের গতি কমে যাচ্ছে। এ অবস্থায় নিজস্ব ক্যাম্পাসে স্থায়ী বিল্ডিং জরুরী হয়ে পড়েছে। এছাড়া তাদেরকে অফিসের কাজ সামলে বিভিন্ন জেলায় জেলায় গিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করতে হয়। 

এসব সমস্যা নিয়ে বিভিন্ন অরাজক পরিস্থিতি সামাল দিতে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রফেসর ড. দিদারুল ইসলামের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। ভিন্ন ভিন্ন ভবনে কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করছেন তারা।

জানা যায়, প্রয়োজনীয় জনবল ও যন্ত্রপাতির অভাবে আইটি শাখার কাজ স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে করতে পারছে না ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড। এক্ষেত্রে ফলাফল তৈরি ও রেজিস্ট্রেশন করার জন্য যশোর শিক্ষা বোর্ডের সহায়তা নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে তাদের। 

বোর্ড চেয়ারম্যান আরও জানান, আমরা চেয়েছিলাম এই পরিস্থিতিতে মূল দুটি ভবনকে একীভূত করতে। ভবন এক ছেড়ে দিয়ে ভবন ২ এর কাছাকাছি একটি বাড়ি ভাড়া নিতে পারলে বোর্ডের কর্মকর্তা কর্মচারীদের ও সেবা গ্রহীতাদের অনেকটা হয়রানি মুক্ত করা যেত। কিন্তু এক্ষেত্রে এক নম্বর ভবনের থাকা আইটি শাখাকে ট্রান্সফার করে নতুন ভবনে নিয়ে যেতে অনেক টাকা খরচ হবে। এতে সরকার ব্যাপক পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। এই চিন্তা করে নতুন কোন বাড়িভাড়াও নিতে পারছি না। 

জানা যায়, ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে সরকারিভাবে বরাদ্দ একটিমাত্র গাড়ি বোর্ড চেয়ারম্যান ব্যবহার করছেন। বৃহৎ পরিসরে পরিচালিত শিক্ষা বোর্ডের জন্য আরও দুইটি গাড়ি সরকারের কাছে চাওয়া হলেও এখন পর্যন্ত তা পাওয়া যায়নি। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে ময়মনসিংহ থেকে কর্মকর্তারা নেত্রকোনা, জামালপুর ও শেরপুর গেলে ভাড়া করা গাড়িতে তাদের যেতে হয়। 

তাছাড়া একটি ভবন থেকে আরেকটি ভবনে কর্মকর্তাদের যাতায়াতের জন্য পরিবহনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বোর্ডের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। 

নিজস্ব ভবন ও পরিবহন ব্যবস্থা নিয়ে সমকালের সাথে কথা হয় বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর সৈয়দ আখতারুজ্জামানের সাথে। তিনি জানান, ইতিপূর্বে ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার শিক্ষা বোর্ডকে ৩ একর জায়গা দিতে চেয়েছিল। কিন্তু সাবেক বোর্ড চেয়ারম্যান অতিরিক্ত অহংকার করে এই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। বর্তমানে জমি কিনে নিজস্ব ভবন তৈরি করার মত পর্যাপ্ত টাকা বোর্ডের হাতে নেই। 

তবে বর্তমান চেয়ারম্যান নিজস্ব জমি ও ভবন তৈরি করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। সরকারের কাছে প্রকল্পের মাধ্যমে জমি কিনে ভবন তৈরি করে দেয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে। সে অনুযায়ী কাজ চলছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে দ্রুত সময়ের ভিতরেই নিজস্ব ভবনে শিক্ষা বোর্ডের কার্যক্রম চালাতে পারব বলে আশা করছি। 

চলতি বছরের ১৫ মার্চ ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের জমি কেনার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে সাইট ভিজিটে যান ময়মনসিংহ শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইউসুফ আলী। তিনি জানান, ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড একটা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। নগরের বাইপাস মোড়ে ১.৯৫ একর জমি কেনার জন্য তারা আমাদেরকে চিঠি দেয়। সে অনুযায়ী জমি পরিদর্শন করে ২৩ মার্চ প্রধান প্রকৌশলী বরাবর আমি একটি রিপোর্ট পাঠাই। 

এখন শিক্ষা প্রকৌশল এবং ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বাকি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলেই জমি কেনার প্রক্রিয়া শুরু হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ