ঝিনাইদহে সাংবাদিকের বাড়িতে বিস্ফোরণ, পুলিশের দাবি পটকা ফাটানো হয়েছে
Published: 17th, February 2025 GMT
ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার সাংবাদিক এম সাইফুজ্জামানের (তাজু) বাড়িতে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার চিথলিয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরিবারের সদস্যদের দাবি, দুর্বৃত্তদের ছোড়া ককটেলের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তবে পুলিশের ভাষ্য, পটকা ফাটানো হয়েছে।
এম সাইফুজ্জামান দৈনিক সমকাল পত্রিকার ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলা প্রতিনিধি। বিস্ফোরণের সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। তবে তাঁর স্ত্রী ও সন্তান বাড়িতে ছিলেন। তাঁরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
এম সাইফুজ্জামান বলেন, গতকাল রাতের খাবার শেষে তাঁর স্ত্রী ও সন্তান ঘুমিয়ে পড়েন। হঠাৎ রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাড়িতে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ সময় তাঁর স্ত্রী ও সন্তানের ঘুম ভেঙে যায়। তাঁরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। পরে পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়। পুলিশ গিয়ে আলামত উদ্ধার করে। তবে কী কারণে কে বা কারা এই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, তা তিনি বুঝতে পারছেন না।
সাংবাদিক এম সাইফুজ্জামানের স্ত্রী বেলিনা খাতুন বলেন, ‘আমরা রাতের খাবার শেষে ঘুমিয়ে ছিলাম। পরে একটি বিস্ফোরণের বিকট শব্দে আমাদের ঘুম ভাঙে। পুরো ঘরে বারুদের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় আমি ও আমার সন্তান আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। আমরা ভয়ে আর ঘর থেকে বের হয়নি। রাত সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ আসে। আমার ছেলের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ চলে যায়। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি, ঘরের দরজার সামনে ককটেল–জাতীয় কোনো বস্তুর কিছু অংশ পড়ে আছে। সকালে আবার পুলিশ এসে সেগুলো উদ্ধার করে নিয়ে যায়।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হরিণাকুণ্ডু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ রউফ খান বলেন, ঘটনাটি জানার পর রাতেই সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। আজ সকালে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। তবে বিকট শব্দ ককটেলের নয়, পটকা–জাতীয় কিছু হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’
গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।
বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’
গণজমায়েতে র্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।