নোয়াখালীতে ইউপি সদস্যকে মারধর করল যুবদল-ছাত্রদল
Published: 17th, February 2025 GMT
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় এক ইউপি সদস্যকে মারধর করে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যানকে তার কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে যুবদল ও ছাত্রদল নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদে ঘটনাটি ঘটে। পরে স্থানীয় বিএনপির নেতারা গিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের কক্ষের তালা খুলে দেন।
আহত ব্যক্তির নাম মো.
আরো পড়ুন:
চুরির অভিযোগে একজনকে গণধোলাই, পরে পুলিশে সোপর্দ
পূর্ব শক্রতার জেরে যুবদল নেতাকে ‘অপহরণ করে মারধর’
মো. শামীম বলেন, “আমি আওয়ামী লীগ সমর্থনকারী। আমি অতীতে কোনো অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ছিলাম না। গত বছরের ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পরও যথারীতি ইউনিয়ন পরিষদে এসে সব কার্যক্রম পরিচালনা করছি।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “দেড় মাস আগে আমাদের ইউনিয়ন পরিষদে কৃষকদের জন্য সার আসে। আমার ওয়ার্ডের ৪৫ জন কৃষকের নাম সার পাওয়ার তালিকায় ছিল। আজ সকালে গ্রাম পুলিশ ও যুবদল নেতা সোহেলের মাধ্যমে তালিকা অনুসারে সার বিতরণ শুরু হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে একই ওয়ার্ডের যুবদল নেতা রানা, জাবেদ ও ছাত্রদল নেতা মহসিনসহ ১৫-২০ জন ইউনিয়ন পরিষদে যায়। সেখানে তারা আমার কাছে জানতে চান, কার অনুমতি নিয়ে সার বিতরণ করছি। একপর্যায়ে গ্রাম পুলিশের কক্ষে ঢুকে আমাকে বকাবকি করে মারধর করেন তারা। পরে তারা আমাকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বের করে দেয়। কিছুক্ষণ পর ইউপি চেয়ারম্যান মোশারেফ হোসেন মিন্টুকে তার কার্যালয়ের ভেতরে রেখে দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেন তারা।”
গোপালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. হাবীবুর রহমান বলেন, “সার বিতরণ নিয়ে হালকা একটা ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ও সেনবাহিনী ঘটনাস্থলে আসে। আলাপ-আলোচনা হয়েছে, আমরা বসে বিষয়টি সমাধান করে নেব।”
তিনি আরো বলেন, “তালা দেওয়ার ১০-১৫ মিনিট পর আমি তালা খুলে দিয়েছি। রানা ও মহসিন আমাদের দল করে। তবে জাবেদ নামে কাউকে আমি চিনি না।”
বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি লিটন দেওয়ান বলেন, “ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এক ইউপি সদস্যের সঙ্গে স্থানীয় ছাত্রদল নেতার বাগবিতণ্ডা হয়। এ নিয়ে চেয়ারম্যানের কাছে বিচার নিয়ে যান তারা। সেখানে চেয়ারম্যানের সঙ্গেও তাদের ভুল বোঝাবুঝি হয়। পরে স্থানীয় বিএনপির নেতারা বিষয়টি সমাধান করেন।”
ঢাকা/সুজন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম রধর ছ ত রদল সদস য ম রধর য বদল
এছাড়াও পড়ুন:
অপহরণে বাঁধা দেওয়ায় যুবককে গুলি করে হত্যা, আটক ৩
অপহরণে বাঁধা দেওয়ায় নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে মো. শাকিল (৩১) নামের এক যুবককে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় নিহতের ছোটভাই শুভকেও (২৮) গুলি করলে লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে তিনি প্রাণে বেঁচে যান। পরে তাকে পিস্তলের বাট দিয়ে মাথায় আঘাত করে আহত করে। পুলিশ তাৎক্ষণিক হত্যাকাণ্ডের কোনো কারণ জানাতে পারেনি।
সোমবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার ছয়ানী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের গঙ্গাবর বাজারের ইসলামিয়া মার্কেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শাকিল একই গ্রামের মো. সোলাইমান খোকনের ছেলে এবং পেশায় একজন থাই গ্লাস মিস্ত্রি ছিলেন। ঈদুল আযহার আগে শাকিলের সৌদি আরব যাওয়ার কথা ছিল।
স্থানীয়রা জানায়, রাত ৮টার দিকে শাকিলসহ কয়েকজন ছয়ানীর গঙ্গাবর বাজারের ইসলামিয়া মার্কেটের একটি দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন। ওই সময় এলাকায় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে নয়জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এসে লাবিব নামে এক যুবককে জোরপূর্বক তুলে নিতে চেষ্টা করে। তখন শাকিলসহ আরো কয়েকজন তাদের বাঁধা দিলে সন্ত্রাসীরা শাকিলকে গুলি করে। পিস্তলের গুলি শাকিলের বুকে ও মাথায় বিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
এ সময় তার ছোটভাই শুভ বড়ভাই শাকিলকে বাঁচাতে গেলে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে সন্ত্রাসীর দল কিন্তু গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে তাকে পিস্তলের বাট দিয়ে মাথায় আঘাত করে আহত করে। গুলি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন ধাওয়া করে তিন জনকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে আটক করে রাখে। তবে তাৎক্ষণিক আহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
তাৎক্ষণিক এলাকার লোকজন দুই ভাইকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক শাকিলকে মৃত ঘোষণা করে। নিহতের ছোট ভাই শুভ জানান, আটকসন্ত্রাসীদের সাথে স্থানীয় গঙ্গাবর গ্রামের যুবক লাবিবের সাথে পূর্ব বিরোধ ছিল। ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে বেগমগঞ্জ উপজেলার আগলাইয়ার পুর ইউনিয়নের নয়জন সন্ত্রাসী সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে এসে লাবিবকে গঙ্গাবর বাজারে এসে জোরপূর্বক অপহরণ করে নিতে চেষ্টা করে। এসময় বাজারের লোকজনের সাথে শাকিল ও লাবিবকে রক্ষা করতে এগিয়ে যায়। ওই সময় সন্ত্রাসীরা শাকিলকে লক্ষ্য করে পিস্তল দিয়ে গুলি ছোড়ে। গুলি বুকে ও মাথায় বিদ্ধ হলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এ সময় তিনি তার ভাইকে বাঁচাতে গেলে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে অপহরণকারীরা। পরে স্থানীয় লোকজন তার ভাই ও শাকিলকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
নিহত শাকিল বিবাহিত ছিলেন। তার ৮মাস বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে সে ছিল দ্বিতীয়।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের রেজিস্ট্রার বই সূত্রে জানা যায় রাত ৮ টা ৩৫ মিনিটের দিকে শাকিলকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। তার বুকে ও মাথায় গুলির চিহ্ন রয়েছে।
ঘটনাস্থলে অবস্থানরতম বেগমগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাবীবুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, স্খানীয় এলাকাবাসী অস্ত্রধারী তিনজনকে গণধোলাই দিয়ে আটক করে রেখেছে। তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। আমরা তাদের উদ্ধারে চেষ্টা করছি।