ফরিদপুরের বিভিন্ন উপজেলায় ডেভিল হান্টের বিশেষ অভিযানে ইউপি সদস্যসহ আওয়ামী লীগের ৬ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

সোমবার দুপুরে ফরিদপুর জেলা পুলিশ গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

এর আগে রোববার বিকেলে ও ওইদিন দিবাগত রাতে জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আওয়ামী লীগের সহযোগী পাঁচ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন, ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আকরামুজ্জামান ওরফে কুয়েতি আকরাম (৬৫), বোয়ালমারী উপজেলার দাদপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো.

শামীম মোল্যা (৫৫), বোয়ালমারী সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন (৫০), সদরপুর উপজেলার চরনাসিরপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য মজিবর রহমান চৌধুরী নিক্সনের সমর্থক মোকাদ্দেস খান (৪৫), মধুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী মো. মনিরুজ্জামান (৩২) এবং আলফাডাঙ্গা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শাকিল আহম্মেদ (৩৮)।

জেলা পুলিশ ও স্থানীয় থানা সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তার আসামিদের গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা, বিস্ফোরক দ্রব্যসহ সংশ্লিষ্ট থানার বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপারেশন ডেভিল হান্টের অংশ হিসেবে জেলায় যৌথবাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আওয় ম উপজ ল সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

শুধু ঘোষণা নয়, বাস্তবে প্রতিফলিত হোক

রাজধানী শহরসহ দেশের বড় শহরগুলোয় শব্দদূষণের অসহনীয় মাত্রার বিষয়টি কারও অজানা নয়। এটি এখন শুধু শব্দদূষণ নয়, শব্দসন্ত্রাস বলেও অভিহিত হচ্ছে। অতীতে ও বর্তমানে সরকারগুলো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও কার্যকর হচ্ছে না। অতীতের ধারাবাহিকতায় রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী, বারিধারা ও নিকেতনকে ‘নীরব এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সিদ্ধান্তটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। এখন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাই হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ।

শহরের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নীরব এলাকা ঘোষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি অবশ্যই সরকারের সদিচ্ছার প্রকাশ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই ঘোষণা বাস্তবে কার্যকর হবে, নাকি এটিও অতীতের মতো কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে? এর আগে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং এর আশপাশের এলাকাকে নীরব এলাকা ঘোষণা করা হয়েছিল, কিন্তু তার ফল তেমন একটা ভালো পাওয়া
যায়নি। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঘোষণার পর কিছু এলাকায় শব্দ কিছুটা কমলেও সার্বিকভাবে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। এই অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, শুধু ঘোষণা যথেষ্ট নয়, বরং এর কঠোর বাস্তবায়ন অপরিহার্য।

শব্দদূষণের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলতেই হয়। যার কারণে সাউন্ডবক্স বা মাইক বাজানোর বিষয়গুলো তুলনামূলকভাবে কমে এসেছে। তবে গাড়ির হর্ন এতটা বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করছে, যা অকল্পনীয়। এটিই এখন রাজধানীসহ বড় শহরগুলোর শব্দদূষণের সবচেয়ে বড় আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অতিরিক্ত শব্দ হৃদ্‌রোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এটিতে শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়, মেজাজ খিটখিটে হয়, মানুষ অনিদ্রায় ভোগে এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটায়। তাই শুধু অভিজাত এলাকা নয়, পুরো শহরে ধাপে ধাপে কীভাবে নীরব এলাকা ঘোষণা করা যায়, সেই লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে এগোতে হবে।

তবে এ উদ্যোগ সফল করতে হলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কঠোর হতে হবে। হর্ন বাজানোর বিরুদ্ধে আইন আছে। তা যদি আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে প্রয়োগ না করা হয়, এ ঘোষণা কখনোই সফল হবে না। কেবল প্রশাসনের ওপর নির্ভর না করে নীরব এলাকা–ঘোষিত এলাকাগুলোর বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যেমন মসজিদ, মন্দির এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেও এখানে গণসচেতনতার কাজে যুক্ত করতে হবে।

গাড়ির হর্ন বাজানো সীমিত করতে পরিবহনের বিভিন্ন ধরনের সমিতি–সংগঠনগুলোর যুক্ততাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। গাড়ির চালকদের অভ্যাসগত পরিবর্তনের জন্য শব্দদূষণের ক্ষতিকর দিকটি নিয়মিতভাবে তাঁদের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। হাইড্রোলিক হর্নসহ উচ্চমাত্রার যেকোনো হর্ন উৎপাদন, আমদানি ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। এ ব্যাপারে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ