শীতের বিদায়ে প্রকৃতিতে এসেছে নয়া ঋতু। চারদিকে বসন্তের হাওয়া বইছে। এরই মাঝে বসন্তের আকাশে ঝরলো এক পশলা বৃষ্টি। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা থেকেই রাজধানীর আকাশে বিদ্যুৎ চমকাতে দেখা যায়। রাত পোনে ৮টা নাগাদ বিভিন্ন এলাকায় হঠাৎ হালকা বৃষ্টি পড়তে শুরু করে।
রাজধানীর শান্তিনগর, মালিবাগ, কাকরাইল, পল্টন, পান্থপথ, শুক্রবাদ, ধানমন্ডির কিছু অংশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ, নীলক্ষেতসহ বেশ কিছু এলাকা থেকে বৃষ্টির খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থান থেকেও বৃষ্টির খবর পাওয়া গেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, এই বৃষ্টি আরো কয়েকদিন থেমে থেমে কোথাও কোথাও হতে পারে। এতে তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে। বঙ্গোপসাগরে একটি স্বাভাবিক লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। যার বর্ধিতাংশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। ফলে রংপুর ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, এদিন এই দুই বিভাগের দুই-এক জায়গা ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এছাড়া এদিন দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারা দেশে মধ্য রাত থেকে ভোর পর্যন্ত হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। এদিনও সারা দেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
একইভাবে আগামী বৃহস্পতিবারও (২০ ফেব্রুয়ারি) রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এদিনও সারা দেশে মধ্য রাত থেকে ভোর পর্যন্ত হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। আর সারা দেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পরিমাপ করা হয়েছে নীলফামারীর ডিমলায়, ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ঢাকা/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে
জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।
বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।
এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস