কুয়েট শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রদলের হামলার নিন্দা ছাত্র ফ্রন্টের
Published: 19th, February 2025 GMT
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রদলের সশস্ত্র হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। এছাড়া হামলায় জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে বিচার এবং আহতদের সুচিকিৎসার দাবি করেছে সংগঠনটি।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সালমান সিদ্দিকী ও সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামন ফরিদ যৌথ বিবৃতিতে এসব দাবি করেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার কুয়েট শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রদল সন্ত্রাসীরা সশস্ত্র হামলা চালায়। এতে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এর মধ্যে ৫০ জনের অবস্থা গুরুতর। আমরা এ হামলার সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসীদের অতিদ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করছি। প্রায় ২ ঘণ্টাব্যাপী এ হামলার চলাকালে কুয়েট প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। সেনাবাহিনীও শিক্ষার্থীদের রক্ষায় এগিয়ে আসেনি।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, আওয়ামী শাসনামলে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ তাদের একক আধিপত্য ও নিয়ন্ত্রণ কায়েম করে রেখেছিল। ছাত্রলীগের নৈরাজ্য ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। এর সমাধান হিসেবে কারো কারো চিন্তার মধ্যে ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের ব্যাপারটি এসেছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র সংগঠনগুলো এবং ছাত্র- জনতার ব্যাপক অংশগ্রহণ ও শহীদী আত্মদান ক্যাম্পাসের ভীতিকর পরিস্থিতি ও বিরাজনীতিকরণের সংস্কৃতি ভেঙ্গে দেয়।
শিক্ষার্থীরা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনীতি নির্মাণের ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে ওঠে। কিন্তু আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, অভ্যুত্থান পরবর্তী ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের অপচেষ্টা চলছে। সর্বশেষ অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থনীতি কৌশল পুনঃনির্ধারণ টাস্কফোর্সের পক্ষ থেকেও ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের সুপারিশ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, কুয়েটের শিক্ষার্থীরা যে ছয়দফা পেশ করেছেন, সেখানেও ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত থাকলে তাকে ক্যাম্পাস থেকে বহিষ্কার করার দাবি করেছেন। কোন সংগঠন বা দলের সঙ্গে যুক্ত থাকা একজন নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। এটাকে কখনো ক্ষুণ্ন করা যায় না। ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের যেকোন প্রচেষ্টা শেষ পর্যন্ত আরেকটি ফ্যাসিস্ট প্রক্রিয়া, সংস্কৃতি ও শক্তির উদ্ভব ঘটাবে, যা ভিন্নমত দমন, মব ভায়োলেন্সসহ অগণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্ম দেবে। এটা নিঃসন্দেহে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনা বিরোধী।
শিক্ষার গণতান্ত্রিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠার জন্য ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ নয়, বরং সব ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধে শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধ লড়াই জরুরি।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত র র জন ত বন ধ র
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ মির্জা ফখরুলের
গণঅভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নে দলীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গণসংযোগের সময় দেওয়া বক্তব্যে এই আহ্বান রাখেন তিনি।
শেখ হাসিনার শাসন আমলে বিএনপি নেতাকর্মীদের নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথা তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল। গুম, খুন, ভিত্তিহীন মামলা, লুটপাট, টাকা পাচার, বাকস্বাধীনতা হরণ ও ভোট চুরিসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।
আরো পড়ুন:
জুলাই গণহত্যা: শেখ হাসিনাসহ ৪০৮ জনের বিরুদ্ধে আরেক মামলা
হাসিনা-রেহানাসহ ২২ জনের গ্রেপ্তার-সংক্রান্ত প্রতিবেদন ১২ মে
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমাদের নেতাকর্মীদের গুম করা হয়েছে। লাখ লাখ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে, তাদের ঘরে থাকতে দেননি আপনি। আমরা তো কোথাও পালিয়ে যাইনি। আদালতে মিথ্যা মামলা আইনের মাধ্যমে ফেইস (মোকাবিলা) করেছি। উকিল ধরে জামিন নিয়েছি। আপনি (শেখ হাসিনা) পালিয়ে আছেন কেন? আপনিও মামলা লড়েন। আপনি দেশে এসে দাড়ান না দেখি।”
জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা অনেকে মনে করেন শেখ হাসিনা আবারো দেশে ফিরে আসবেন। তিনি তো ১৫ বছর দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার বাবা শেখ মুজিবুর রহমান একজন বিখ্যাত মানুষ ছিলেন। তার তো দেশ থেকে পালানোর কথা ছিল না। তিনি পালালেন কেন? কারণ তিনি একজন ডাইনি ছিলেন। জনগণের ওপর এমন নির্যাতন করেছেন যে, তিনি পালাতে বাধ্য হয়েছেন। জনগণ যদি সেদিন তাকে পেত, তাহলে ছিঁড়ে খেত।”
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, “হাসিনা দেশে ফিরে রাজনীতি করলে আমাদের কিছু করতে হবে না, জনগণই তাকে দেখে নেবে।”
আওয়ামী লীগের শাসনামলের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “বিএনপির নেতাকর্মীরা যেন আওয়ামী লীগের মতো অন্যায় না করে; এতে মানুষ ভালোবাসবে না। দলের কোনো নেতাকর্মীরা অন্যায় করলে যেন জেলার নেতারা তাদের শক্ত হাতে দমন করেন; তারা যেন অন্যায়কারীদের পুলিশের হাতে তুলে দেন। তাই অপকর্ম বন্ধ করুন, না হলে আওয়ামী লীগের মতো অবস্থা হবে।”
ত্রোদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দৃষ্টি রেখে জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। মির্জা ফখরুলসহ দলটির শীর্ষ নেতারা সভা-সমাবেশ করছেন। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা, না রাখা নিয়ে ব্যাপক মতপার্থক্য রয়েছে; সেই সঙ্গে আইনি ঝক্কিও সামনে আসছে।
গণহত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একাধিক মামলায় আসামি করা হয়েছে শেখ হাসিনাকে। এ ছাড়া কয়েক শত ফৌজদারি মামলায় তিনি আসামি। অনেক মামলায় তাকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। তবে ভারতের আশ্রয়ে থাকা শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর কোনো নিশ্চয়তা এখনো তৈরি হয়নি।
গণঅভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ছোট বোন রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। সেদেশে উচ্চনিরাপত্তা শৃঙ্খলে বসবাস করছেন বলে আন্তর্জাতিক সাংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়ে থাকে। সেখান থেকে দেশে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে অনলাইনে তার কথোপকথনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যা নিয়ে অস্বস্তির কথা ভারতকে জানিয়ে রেখে অন্তর্বর্তী সরকার।
ঢাকা/মঈনুদ্দীন/মাসুদ