বেনজির ও তার স্ত্রী-কন্যাকে আসামি করে মামলা
Published: 20th, February 2025 GMT
ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত ১১ কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা পাচারের অভিযোগে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী দুই কন্যার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ বৃহস্পতিবার দুদকের উপপরিচালক মো.
মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪(৩) ধারা এবং দণ্ডবিধি ১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামি বেনজীর আহমেদ কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি, কর্পোরেট শাখা, ঢাকা থেকে চেকের মাধ্যমে কোটি টাকা, স্ত্রী জীশান মীর্জা তার ব্যাংক একাউন্ট থেকে ১ কোটি করে ২ বার ২ কোটি টাকা, ; বড় মেয়ে ফারহীন রিশতা বিনতে বেনজীর তার একাউন্ট থেকে সাড়ে ১৭ লাখ টাকা উত্তলন করেন। টাকাগুলো তাদের নামে এফডিআর করা ছিল। কিন্তু মেয়াদ উত্তীর্ণের আগেই তারা টাকা তুলে নিয়েছেন। এই টাকার গ্রহণযোগ্য উৎস পাওয়া যায়নি।
বেনজীর আহমেদ র্যাবের মহাপরিচালক ও পুলিশের আইজিপিসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। দায়িত্ব পালনকালে অপরাধমূলক অসদাচরণ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি এই অর্থ অর্জন করেছেন বলে এজাহারে বলা হয়েছে।
অনুসন্ধানে আরো দেখা যায়, জীশান মীর্জা, তাদের ২ কন্যার যৌথ মালিকানাধীন ‘সাউদার্ন বিজনেস ইনিশিয়েটিভ’ নামে সোনালী ব্যাংক পিএলসি, লোকাল অফিস, ঢাকা থেকে সন্দেহজনক লেনদেনের মাধ্যমে ৩ কোটি ৭ লাখ টাকা এবং ‘সাভানা ফার্ম প্রোডাক্ট’ নামে চলতি হিসাব থেকে ১৪ লাখ টাকা তুলেছেন।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, জীশান মীর্জা প্রিমিয়ার ব্যাংক, উত্তরা শাখা থেকে ৬০ লাখ টাকা, তাহসীন রাইসা বিনতে বেনজীর ২০ লাখ টাকা এবং পরবর্তীতে চেকের মাধ্যমে আরো ১৬ লাখ টাকা নগদ তুলেছেন এবং গোপন করেছেন।
সার্বিক পর্যালোচনায় দেখা যায়, তারা এভাবে ৩টি ব্যাংকের ৭টি হিসাব থেকে মোট ১১ কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা ৪ কর্ম দিবসে তুলেছেন। কিন্তু পরে এই টাকা কোথাও বিনিয়োগ করার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এবং তারা টাকা তুলেই বিদেশে চলে যান। যা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং দণ্ডবিধি ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
মামলার তদন্তকালে অভিযোগের সাথে অন্য কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তা আইনের আওতায় আনা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন//
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার
প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা।
কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।
মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ।
এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা।
কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে।
কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে।
ঢাকা/ইমরান/রফিক