‘জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে’
Published: 20th, February 2025 GMT
বরিশালের চরমোনাই দরবারের মাহফিল প্রাঙ্গণে ওলামা-মাশায়েখ মহাসমাবেশে বক্তারা বলেছেন, ‘আগে সংস্কার পরে নির্বাচন, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে। যারা দ্রুত নির্বাচন চায়, তাদের সঙ্গে ভারতের সেনাবাহিনীর যোগসাজশ রয়েছে।’
মাহফিলের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার দুপুরে এ মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন চরমোনাই পীর ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হকসহ আরও কয়েকটি ধর্মভিত্তিক দলের নেতা ও শীর্ষ আলেমরা বক্তৃতা করেন।
চরমোনাই পীর বলেন, আমরা ইসলাম, দেশ ও মানবতার পক্ষের শক্তিগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে আগামী দিনে দেশ গড়ার কাজ করতে চাই। ইসলামের পক্ষে বৃহত্তর ঐক্যের জন্য আমাদের প্রয়াস সফল হবে ইনশাআল্লাহ।
ইসলামী আন্দোলনের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন, আমাদের অন্তরের ঐক্য হলে বৃহত্তর ঐক্য সম্ভব। ইসলামপন্থীদের টেকসই ঐক্যে গড়তে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সর্বোচ্চ ছাড় দিতে প্রস্তুত। মঞ্চে উপস্থিত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে বলেন, যাই হোক না কেন আমরা কেউ আলাদা হবো না। তাহলেই ইসলামকে রাষ্ট্রক্ষমতায় আনা সম্ভব।
খেলাফত মজলিসের মাওলানা মামুনুল হক বক্তব্যে বলেন, ওলামায়ে কেরামের হাতে অনেক বড় সুযোগ এসেছে। এ সুযোগে যদি ইসলামকে বিজয়ী করতে না পারি, তবে আগামী দিনে জাতি আমাদের ক্ষমা করবে না। দেওবন্দের ধারায় প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় দল হলো ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। দেওবন্দি ধারার বাইরে জামায়াতে ইসলামী, সুন্নি এবং আহলে হাদিস আন্দোলনকে নিয়ে আগামী দিনের ভোটে ইসলামের পক্ষে একটি বাক্স হতে হবে।
ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন রাজি বলেন ওলামায়ে কেরামের ঐক্যের প্রয়োজনে আমি আমাদের পরিচয় বিলীন করে দিয়ে ঐক্যের সঙ্গে থাকতে চাই।
মহাসমাবেশে আরও বক্তৃতা করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী ও অধ্যাপক আশারাফ আলী আকন, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমেদ, খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, বুদ্ধিস্ট ফেডারেশন বাংলাদেশের সভাপতি দয়াল কুমার বড়ুয়া, শায়খ জাকারিয়া, ইসলামী রিসার্চ সেন্টারের মহাপরিচালক মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ, মিশর আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড.
আজ তৃতীয় দিন দুপুরে মাহফিল প্রাঙ্গণে ছাত্র মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এ মহাসমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতাদের অংশগ্রহণ করবেন বলে মাহফিল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: চরম ন ই প র আম দ র আম র ম ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
দেশবাসী দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে উত্তরণ চায়: আমীর খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশের মানুষ ২০ বছর ধরে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি এবং নতুন প্রজন্মও ভোট দিতে পারেনি। তাই, তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে উত্তরণ চায়।
সোমবার (১৬ জুন) দুপুরে লন্ডন থেকে দেশে ফিরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিএনপি গণতান্ত্রিক পথেই এগিয়ে যাবে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রামে জনগণের যে ত্যাগ, সে পথেই দেশ অগ্রসর হবে।
প্রধান উপদেষ্টার মতো বিএনপিও রোজার আগে বিচার ও সংস্কারের অগ্রগতি চায় কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে দলটির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, সংস্কারের বিষয়টি ঐকমত্যের ওপর নির্ভরশীল। এ বিষয়ে ড. ইউনূস, তারেক রহমান এবং বিএনপির সকল নেতৃবৃন্দ আগেই বলেছেন।
তিনি মনে করেন, ঐকমত্য হতে এক থেকে দেড় মাসের বেশি সময় লাগার কথা নয়।
বিচার প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এটি চলমান প্রক্রিয়া এবং বিচার বিভাগের ওপর নির্ভর করে। বিচার বিভাগ বিচার করবে এবং বিচারের আওতায় আনারও বিষয় আছে। যারা বিচারের আওতায় আসবে, তার জন্য আরো প্রায় ছয় মাস সময় আছে। আর যারা এর মধ্যে আসবে না, তাদের জন্য তো আগামী সরকার আছে।
সরকারের কি এখন নির্বাচনমুখী কর্মকাণ্ডের দিকে এগিয়ে যাওয়া দরকার আছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন ছাড়া গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক এবং জনগণের সাংবিধানিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার আর কোনো পথ নেই। এ বিষয়ে সবাই ঐকমত্য পোষণ করছেন।
জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির অভিযোগ, একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরকার বিশেষ সম্পর্ক করছে, বিএনপি বিষয়টি কীভাবে দেখছে? এ প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, “আমি একটা জিনিস মনে করি, আমরা যদি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, তাহলে এখানে সবার মতামত নেওয়ার সুযোগ আছে। সুতরাং, সবাই তাদের মতামত দিতে পারে। আমার মনে হয়, এটাই আমাদের গণতন্ত্রের বড় পাওয়া, সবাই নিজেদের মতামত দেবে। এর মধ্যে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।”
বিএনপি এত দিন ডিসেম্বরে নির্বাচনের কথা বললেও এখন কেন ফেব্রুয়ারিতে গেল? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনের জন্য ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনেক সময়। এবং এত সময়ও লাগার কোনো কারণ নেই। বিএনপি আগে ডিসেম্বরের মধ্যেই এসব সমস্যার সমাধান করে নির্বাচনের কথা বলেছে। সুতরাং, ফেব্রুয়ারি আরো দীর্ঘ সময়। তবে, যদি ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হয়, তাতেও কোনো সমস্যা নেই।
আমীর খসরু বলেন, “আমি আগেও বলেছি, যত বেশি ঐকমত্যের মাধ্যমে আমরা নিজেদের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে পারব, সেটা জাতির জন্য তত ভালো। আমরা যে ঐকমত্যের মধ্যে এসেছি, এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় বিষয়।”
তিনি আরো বলেন, “ঐকমত্য থাকার ফলেই আমরা স্বৈরাচারকে বিদায় করতে পেরেছি। সুতরাং, আমরা চেষ্টা করব, যেখানেই সম্ভব ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেব।”
তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ওয়ান-টু-ওয়ান বৈঠকে নির্বাচনে নিরপেক্ষতার বিষয়ে কোনো আলোচনা বা বার্তা আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, যখনই নির্বাচন শুরু হবে, তখনই সরকার নিরপেক্ষতার বিষয়টি নিশ্চিত করবে। কেয়ারটেকার গভর্নমেন্টের ধারণা হলো— একটি নিরপেক্ষ সরকার। সুতরাং, নির্বাচনে সেই নিরপেক্ষতা সরকার নিশ্চিত করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
বৈঠকে সংস্কারের বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমান বলেছেন, এখানে যতটুকু ঐকমত্য হবে, সংস্কারও ততটুকুই হবে। বাকি অংশটা নির্বাচনের মাধ্যমে জাতির কাছে নিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, সংস্কার তো চলমান প্রক্রিয়া। এটি এখানেই শেষ হয়ে যাচ্ছে না, নির্বাচনের পরেও এটি চলমান থাকবে।
ঢাকা/রায়হান/রফিক