সরকারি দপ্তরে বেড়েছে বাংলা ভাষার ব্যবহার
Published: 21st, February 2025 GMT
সরকারি দপ্তরে নথিপত্র থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজে বাংলা ভাষার ব্যবহার বেড়েছে। অধিকাংশ আইন বাংলায় করা হয়েছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্যও ইংরেজির পাশাপাশি বাংলায়ও দেওয়া হয়। তবে সেই তুলনায় আদালতে বিশেষ করে উচ্চ আদালতের বেশির ভাগ রায় ও আদেশ এখনো ইংরেজিতে লেখা হয়। বাংলা ভাষার ব্যবহারে পিছিয়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও। সাইন বোর্ডে এখনো ইংরেজির ব্যবহার দেখা যায়।
দেশের সর্বত্র বাংলা ভাষা চালুর লক্ষ্যে প্রায় ৩৮ বছর আগে ১৯৮৭ সালের ৮ মার্চ প্রণয়ন করা হয় ‘বাংলা ভাষা প্রচলন আইন’। এতে বলা হয়, ‘এই আইন প্রবর্তনের পর বাংলাদেশের সর্বত্র তথা সরকারি অফিস-আদালত, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বিদেশের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যতীত অন্য সব ক্ষেত্রে নথি ও চিঠিপত্র, আইন-আদালতের সওয়াল-জবাব এবং অন্যান্য আইনানুগ কার্যাবলি অবশ্যই বাংলায় লিখতে হবে।’
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখন সরকারি নথিপত্র, চিঠি, প্রজ্ঞাপন ও অন্যান্য নথি বাংলায় লেখা হচ্ছে। পুরোনো অনেক আইন ইংরেজিতে থাকলেও নতুন আইনকানুন সব বাংলায় লেখা হচ্ছে। এ ছাড়া যেসব আইন ইংরেজিতে ছিল, সেগুলোও পর্যায়ক্রমে বাংলায় করা হচ্ছে।এই আইনে আরও বলা হয়, কোনো কর্মস্থলে যদি কোনো ব্যক্তি বাংলা ভাষা ছাড়া অন্য কোনো ভাষায় আবেদন বা আপিল করেন, তাহলে সেটি বেআইনি ও অকার্যকর বলে গণ্য হবে। শুধু তা–ই নয়, কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী যদি এই আইন অমান্য করেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখন সরকারি নথিপত্র, চিঠি, প্রজ্ঞাপন ও অন্যান্য নথি বাংলায় লেখা হচ্ছে। পুরোনো অনেক আইন ইংরেজিতে থাকলেও নতুন আইনকানুন সব বাংলায় লেখা হচ্ছে। এ ছাড়া যেসব আইন ইংরেজিতে ছিল, সেগুলোও পর্যায়ক্রমে বাংলায় করা হচ্ছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংস্কার ও গবেষণা অনুবিভাগের অধীনে বাংলা ভাষা বাস্তবায়নসংক্রান্ত একটি অধিশাখা আছে। এই শাখার কর্মকর্তারা জানান, অধিকাংশ আইন বাংলায় করা হয়েছে। তাঁরা মূলত আইনের প্রমিতকরণের কাজটি করে দেন। এ ছাড়া সরকারি কাজে বাংলা ভাষা সহজ করে ব্যবহারের জন্য এই দপ্তর থেকে কয়েকটি পুস্তিকা বের করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংস্কার ও গবেষণা অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের এই বিভাগ থেকে আইনকানুনগুলো প্রমিতকরণের কাজটি করা হয়। ইতিমধ্যে অধিকাংশ আইন বাংলায় করা হয়েছে। তিনি বলেন, নিজেদের মাতৃভাষায় তথ্য পাওয়া জনগণের অধিকার। তাই এটি সর্বস্তরে নিশ্চিত করতে হবে। তবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যাতে জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করা যায়, সেই বিষয় বিবেচনায় নিয়ে চাকরিজীবীদের বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি ভাষাতেও যাতে দক্ষতা গড়ে ওঠে, সে বিষয়ে ভাষানীতি হওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আইন ই র জ ত র ব যবহ র ল য় কর সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচনের আগেই পাঁচ ব্যাংক এক হবে: গভর্নর
বেসরকারি খাতের পাঁচ ইসলামী ব্যাংককে একীভূত (মার্জার) করার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের সঙ্গে এই একীভূতকরণের কোনো সম্পর্ক নেই। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমরা আশা করি, আগামী সরকারও এ প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেবে। তবে নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা না করে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই পাঁচটি ইসলামী ব্যাংক একীভূত হবে।’
আজ রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর এ মন্তব্য করেন। এ সময় তিনি ব্যাংককর্মীদের আশ্বস্ত করেন, এই একীভূতকরণের ফলে কোনো কর্মীকে চাকরি হারাতে হবে না।
গভর্নর বলেন, কর্মীদের দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। প্রয়োজনে কিছু শাখা পুনর্বিন্যাস করা হবে। যেসব ব্যাংকের শাখা শহর এলাকায় বেশি, সেগুলোর কিছু শাখা গ্রামাঞ্চলে স্থানান্তরের উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।
এ সময় পাচার করা সম্পদ উদ্ধার করা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন গভর্নর। তিনি বলেন, ‘সম্পদ উদ্ধারের বিষয়টি একটি দীর্ঘমেয়াদি ও ধাপে ধাপে অগ্রসর হওয়ার প্রক্রিয়া। আদালতের চূড়ান্ত রায় ছাড়া এসব অর্থ উদ্ধার সম্ভব নয়। এ জন্য সুনির্দিষ্ট তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহ করে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে।
গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘আমরা চাই, আদালতের মাধ্যমে যাচাই হোক, আমাদের দাবি কতটা সঠিক। আদালতের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই অর্থ উদ্ধারে পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে।’
বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) পদ্ধতির কথা উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, আদালতের বাইরে সমঝোতার মাধ্যমে অর্থ ফেরতের পথও খোলা আছে। সে ক্ষেত্রে উভয় পক্ষের আইনজীবীরা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খুঁজবেন। সরকার যে পথ নির্ধারণ করবে, আদালত কিংবা এডিআর ও বাংলাদেশ ব্যাংক সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়ে আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবে।
গভর্নর আরও বলেন, দেশীয় সম্পদ উদ্ধারে দেশের আদালতে এবং বিদেশি সম্পদ উদ্ধারে সংশ্লিষ্ট দেশের আদালতে মামলা পরিচালনার প্রস্তুতি চলছে।