পলাতক আওয়ামী দোসরদের তালিকা প্রকাশ ছাত্রজনতার
Published: 22nd, February 2025 GMT
জুলাই গণহত্যার পর পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ ও দোসর রাজনৈতিক দলগুলোর মন্ত্রী, উপদেষ্টা ও এমপিদের ফ্যাসিবাদী ঘোষণা করে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ফ্যাসিবাদ নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে গণঅবস্থানকারী ছাত্রজনতা এ তালিকা প্রকাশ করেন। গণঅবস্থানের দশম দিন উপলক্ষে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তালিকা ঘোষণা করেন বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের সদস্য সচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফজলুর রহমান।
তিনি বলেন, “ফ্যাসিবাদ বিলোপে আমরা এ গণঅবস্থান থেকে পাঁচ দফা দাবি পেশ করেছি। এর তৃতীয় দফার আলোকে আমরা আজ ফ্যাসিবাদী মন্ত্রী, উপদেষ্টা ও এমপিদের তালিকা প্রকাশ করছি। ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আওয়ামী রেজিমের সব মন্ত্রীসভার সদস্য ও উপদেষ্টাদের ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসী ঘোষণা করছি। তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার ও ফ্যাসিস্ট হিসেবে ৭-১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়ার দাবি জানাই।”
তিনি আরো বলেন, “যারা উগ্র ফ্যাসিস্ট মন্ত্রী ছিলেন, তাদের ১৪ বছরের কারাদণ্ড দিতে হবে। যারা বিতর্কিত নয় এবং তুলনামুলকভাবে কম খারাপ, তারা স্রেফ হাসিনার মন্ত্রীসভার সদস্য হওয়ায় কারণে সাত বছরের কারাদণ্ড ভোগ করবেন। এরা কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। জনপরিসরে, গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে বক্তৃতা করতে পারবেন না।”
ফজলুর রহমান বলেন, “তালিকায় যেসব মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী ও উপদেষ্টার নাম রয়েছে, আমরা তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করে বিচারের দাবি জানাই।”
ফ্যাসিবাদীদের তালিকা প্রকাশের সময় উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সাংগঠনিক প্রধান মো.
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার দুই নেতা মো. ওমর ফারুক ও আবু সাঈদের অনশনের মধ্য দিয়ে রাজু ভাস্কর্যের চলমান কর্মসূচি শুরু হয়। পরে ১৫ ফেব্রুয়ারি অনশনে যোগ দেন বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের নেতাকর্মীরা। ১৬ ফেব্রুয়ারি উত্তরার শহীদ রানা তালুকদারের পরিবার এ কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালানোর আহ্বান জানান। তার অনুরোধে অনশন ভেঙে লাগাতার গণঅবস্থান শুরু হয়।
পরে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ। দাবিগুলো হলো- গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ, তাদের মিত্র ১৪ দল এবং এসব দলের সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনকে নিষিদ্ধ করতে হবে; সব ফ্যাসিবাদী দল, তাদের কার্যালয় ও সব সম্পদ রাষ্ট্রীয়ভাবে অধিগ্রহণ করে তা ফ্যাসিবাদী আমলে নির্যাতিত অসহায় মজলুমদের পুনর্বাসনে ব্যবহার করতে হবে।
অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ২০০৯-২০২৫ পর্যন্ত ফ্যাসিস্ট সরকারগুলোর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সব মন্ত্রীপরিষদ সদস্য, এমপি, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সদস্যকে ডেজিগনেটেড ফ্যাসিস্ট ঘোষণা করে গ্রেপ্তারি পরওয়ানা জারি ও বিচারের মুখোমুখি করতে হবে; ফ্যাসিবাদ ধারণ করে গড়ে ওঠা নব্য ফ্যাসিবাদী বা একই চরিত্রের যেকোনে দল ও সংগঠনকেও নিষিদ্ধ করতে হবে; ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দলকে নিষিদ্ধ করার বিধান সংবিধানে সংযুক্ত করতে হবে।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণঅবস থ ন র রহম ন উপদ ষ ট মন ত র ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন
প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।
শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।
আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেনরাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।
কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।
দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।
২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।
প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।
আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।
সূত্র: এনবিসি নিউজ
আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫