ছয় ইসরায়েলি জিম্মি ও ৬২০ ফিলিস্তিনি মুক্ত
Published: 23rd, February 2025 GMT
হামাসের হাতে আটক অবস্থায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় নিহত শিরি বিবাসের মৃতদেহ নিয়ে সৃষ্ট সংকট কেটেছে। যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে গত সপ্তাহে জিম্মির মরদেহ ফেরত দিলে তেল আবিব জানায়, এটা শিরির মৃতদেহ নয়। তারা যুদ্ধবিরতি ভেঙে হামলার হুঁশিয়ারি দেয়। হামাস জানায়, বিমান হামলার কারণে নিহত শিরিকে শনাক্ত করতে তারা সমস্যায় পড়ে। এ অবস্থায় শুক্রবার রাতে পাঠানো হয় আরেকটি দেহাবশেষ। সেটি যে শিরিরই, তা নিশ্চিত করেছে ইসরায়েল। এতে নতুন করে যুদ্ধ শুরুর শঙ্কা আপাতত কাটল।
গতকাল শনিবার আরও ছয় জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ইসরায়েল তাদের কারাগারে থাকা ৬২০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেয়। আলজাজিরা জানায়, আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হয়। একটি ছবিতে দেখা যায়, মুক্ত এক ইসরায়েলি জিম্মি মঞ্চে হামাসের এক সদস্যের কপালে ‘কৃতজ্ঞতা’য় চুমু খাচ্ছেন। ছবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। জিম্মিদের হাস্যোজ্জ্বল দেখা যায়। আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা রেড ক্রসের কাছে তাদের হস্তান্তর করে হামাস।
এদিকে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনী দুই ফিলিস্তিনি শিশুকে গুলি করে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও বার্তা সংস্থা ওয়াফা। নিহতদের মধ্যে আয়মান নাসের আল হায়মুনির বয়স ১২ বছর। সে হেবরনের বাসিন্দা। অপরজন রিমাস আল আমুরির বয়স ১৩, তার বাড়ি জেনিনে।
হেবরনের দক্ষিণে আত্মীয়ের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার সময় ইসরায়েলি বাহিনী আল-হায়মুনিকে পেটে গুলি করে হত্যা করে। জেনিনে আমুরিকে লক্ষ্য করে পাঁচটি গুলি চালায় ইসরায়েলি সেনারা। গুলিগুলো তার পিঠে লাগে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা
‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’
এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’
প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।