গাছে ঝুলছিল দোকানির লাশ, পরিবারের দাবি হত্যা
Published: 23rd, February 2025 GMT
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় গাছের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় এক দোকানির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাঁর নাম আবদুস সাত্তার (৪০)। আজ রোববার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের রফিকপুর গ্রামের ফরাজী বাড়ি এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত আবদুস সাত্তার ওই গ্রামেরই বাসিন্দা। স্থানীয় চৌমুহনী বাজারে একটি কাপড় বিক্রির দোকান রয়েছে তাঁর। পরিবারের অভিযোগ, জমির মাটি কেটে ইটভাটায় নিয়ে যাওয়া নিয়ে এলাকার কিছু মানুষের সঙ্গে আবদুস সাত্তারের বিরোধ ছিল। এই বিরোধের জেরেই তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত আবদুস সাত্তারের ভাই আনোয়ার হোসেন বলেন, গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে তাঁদের জমি থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় ইটভাটার মালিকসহ একটি প্রভাবশালী চক্র। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় একাধিকবার সালিস বৈঠকও হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে ওই চক্রের লোকেরা কৌশলে সাত্তারকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে যান। ভোর পর্যন্ত তাঁর ভাই ঘরে না ফেরায় তাঁদের সন্দেহ হয়। পরে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে তাঁরা দেখেন বাড়ির এক পাশের একটি গাছের সঙ্গে তাঁর ভাইয়ের লাশ ঝুলছে। তিনি বলেন, ‘ওই চক্রের লোকজন পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে হত্যা করে গলায় রশি বেঁধে লাশ গাছে ঝুলিয়ে রেখেছেন। আমরা হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি চাই।’
জানতে চাইলে বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান বলেন, জমির মাটি কেটে নেওয়া নিয়ে আবদুস সাত্তারের সঙ্গে তাঁর চাচাতো ভাইসহ এলাকার কিছু লোকের বিরোধ রয়েছে। আবদুস সাত্তারের মৃত্যুর সঙ্গে এ বিরোধের কোনো সম্পর্ক রয়েছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, নিহত ব্যক্তি শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আবদ স স ত ত র র
এছাড়াও পড়ুন:
অপহরণে বাঁধা দেওয়ায় যুবককে গুলি করে হত্যা, আটক ৩
অপহরণে বাঁধা দেওয়ায় নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে মো. শাকিল (৩১) নামের এক যুবককে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় নিহতের ছোটভাই শুভকেও (২৮) গুলি করলে লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে তিনি প্রাণে বেঁচে যান। পরে তাকে পিস্তলের বাট দিয়ে মাথায় আঘাত করে আহত করে। পুলিশ তাৎক্ষণিক হত্যাকাণ্ডের কোনো কারণ জানাতে পারেনি।
সোমবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার ছয়ানী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের গঙ্গাবর বাজারের ইসলামিয়া মার্কেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শাকিল একই গ্রামের মো. সোলাইমান খোকনের ছেলে এবং পেশায় একজন থাই গ্লাস মিস্ত্রি ছিলেন। ঈদুল আযহার আগে শাকিলের সৌদি আরব যাওয়ার কথা ছিল।
স্থানীয়রা জানায়, রাত ৮টার দিকে শাকিলসহ কয়েকজন ছয়ানীর গঙ্গাবর বাজারের ইসলামিয়া মার্কেটের একটি দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন। ওই সময় এলাকায় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে নয়জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এসে লাবিব নামে এক যুবককে জোরপূর্বক তুলে নিতে চেষ্টা করে। তখন শাকিলসহ আরো কয়েকজন তাদের বাঁধা দিলে সন্ত্রাসীরা শাকিলকে গুলি করে। পিস্তলের গুলি শাকিলের বুকে ও মাথায় বিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
এ সময় তার ছোটভাই শুভ বড়ভাই শাকিলকে বাঁচাতে গেলে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে সন্ত্রাসীর দল কিন্তু গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে তাকে পিস্তলের বাট দিয়ে মাথায় আঘাত করে আহত করে। গুলি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন ধাওয়া করে তিন জনকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে আটক করে রাখে। তবে তাৎক্ষণিক আহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
তাৎক্ষণিক এলাকার লোকজন দুই ভাইকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক শাকিলকে মৃত ঘোষণা করে। নিহতের ছোট ভাই শুভ জানান, আটকসন্ত্রাসীদের সাথে স্থানীয় গঙ্গাবর গ্রামের যুবক লাবিবের সাথে পূর্ব বিরোধ ছিল। ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে বেগমগঞ্জ উপজেলার আগলাইয়ার পুর ইউনিয়নের নয়জন সন্ত্রাসী সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে এসে লাবিবকে গঙ্গাবর বাজারে এসে জোরপূর্বক অপহরণ করে নিতে চেষ্টা করে। এসময় বাজারের লোকজনের সাথে শাকিল ও লাবিবকে রক্ষা করতে এগিয়ে যায়। ওই সময় সন্ত্রাসীরা শাকিলকে লক্ষ্য করে পিস্তল দিয়ে গুলি ছোড়ে। গুলি বুকে ও মাথায় বিদ্ধ হলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এ সময় তিনি তার ভাইকে বাঁচাতে গেলে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে অপহরণকারীরা। পরে স্থানীয় লোকজন তার ভাই ও শাকিলকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
নিহত শাকিল বিবাহিত ছিলেন। তার ৮মাস বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে সে ছিল দ্বিতীয়।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের রেজিস্ট্রার বই সূত্রে জানা যায় রাত ৮ টা ৩৫ মিনিটের দিকে শাকিলকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। তার বুকে ও মাথায় গুলির চিহ্ন রয়েছে।
ঘটনাস্থলে অবস্থানরতম বেগমগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাবীবুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, স্খানীয় এলাকাবাসী অস্ত্রধারী তিনজনকে গণধোলাই দিয়ে আটক করে রেখেছে। তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। আমরা তাদের উদ্ধারে চেষ্টা করছি।