Prothomalo:
2025-08-01@09:08:07 GMT

অবকাঠামোয় বিশেষ বরাদ্দ দিন

Published: 24th, February 2025 GMT

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৪ বছর পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয়টি এখনো পূর্ণতা পায়নি। শ্রেণিকক্ষের সংকট, শিক্ষকের সংকট, আবাসন সমস্যা, ল্যাব ও গ্রন্থাগারের অপ্রতুলতা এবং গবেষণার অভাব—এসব সমস্যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে।

বিশেষ করে শ্রেণিকক্ষের সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের খোলা মাঠে পাঠদান করতে হচ্ছে, যা শিক্ষার পরিবেশ ও মানকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এ ছাড়া সেশনজটের কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা বাড়ছে এবং তাঁদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। এই সংকট নিরসনে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সমস্যা হলো অবকাঠামোগত সংকট। বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৫টি বিভাগের জন্য মাত্র ৩৬টি শ্রেণিকক্ষ রয়েছে, যেখানে প্রয়োজন ৭৫টি। এ ছাড়া শিক্ষকসংকটও একটি বড় সমস্যা। ১০ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র ১৬৭ জন শিক্ষক রয়েছেন, যার মধ্যে অনেকে শিক্ষাছুটিতে আছেন।

ফলে পাঠদান কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। ল্যাব, গ্রন্থাগার ও গবেষণার সুযোগ-সুবিধার অভাবও শিক্ষার মানকে প্রভাবিত করছে। প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম একটি গুচ্ছ ভবনে চলছে। এটি কার্যক্রমকে জটিল করে তুলেছে। ক্লাস কম হওয়ায় সিলেবাস ঠিকমতো শেষ করা যায় না, ফলে সেশনজট বাড়ছে। এ ছাড়া গবেষণার সুযোগ না থাকায় শিক্ষার্থীদের জ্ঞানচর্চা ও দক্ষতা উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

এসব সংকট নিরসনে জরুরি ভিত্তিতে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিক্ষক নিয়োগ, সেশনজট নিরসন, গবেষণা ও উন্নয়ন এবং সরকারি ও বেসরকারি সহায়তা নেওয়া প্রয়োজন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ, ল্যাব, গ্রন্থাগার ও গবেষণা কেন্দ্র নির্মাণ প্রয়োজন। একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমের জন্য আলাদা ভবন নির্মাণের উদ্যোগ জরুরি। সেশনজট কমাতে শ্রেণিকক্ষের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি ক্লাসের সময়সূচি আরও নমনীয় ও কার্যকর করা দরকার।

এসব লক্ষ্য অর্জনে বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া উচিত। গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত ফান্ড, ল্যাব–সুবিধা ও আধুনিক প্রযুক্তি সরবরাহ করতে হবে। এতে শিক্ষার্থীদের জ্ঞানচর্চা ও দক্ষতা উন্নয়ন সম্ভব হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকট নিরসনে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায় থেকে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা নেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া স্থানীয় ব্যবসায়ী ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে অংশীদারত্ব গড়ে তুলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে ভূমিকা রাখা যেতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য ইতিমধ্যে সংকট নিরসনে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন। তিনি মন্ত্রণালয়ে গিয়ে সমস্যা তুলে ধরেছেন এবং প্রকল্প অনুমোদনের চেষ্টা করছেন। তবে শুধু উপাচার্যের একার প্রচেষ্টায় এই সংকট নিরসন সম্ভব নয়। এ সমস্যা সমাধানে সরকার, স্থানীয় প্রশাসন, শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য সরক র সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

৮% জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য হয়, প্রশ্ন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনসহ কোনো সংস্কার কমিশনে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি দেখা যায়নি বলে মন্তব্য করেছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন। তাদের প্রশ্ন, ঐকমত্য কমিশনে কোনো রাজনৈতিক দলকেও প্রশ্ন করতে দেখা গেল না যে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীর কোনো প্রতিনিধি না থাকলে বা তাদের বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য গঠন হয়।

‘অভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ৮% জনগোষ্ঠীর অবস্থা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্ন তোলা হয়েছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের লিখিত বক্তব্যে। আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) তরুণ রায়। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের আগে হোক বা পরে, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে এখনো ৮ শতাংশ শুধু রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার জায়গা। তাদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট হতে দেখা যাচ্ছে না কোনো রাজনৈতিক দলকে। সে ক্ষেত্রে এমন অবস্থা চলমান থাকলে ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে ভবিষ্যতে নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্র বয়কটের সিদ্ধান্তও নিতে হতে পারে।

সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা আক্রান্ত হতে থাকেন। তাৎক্ষণিকভাবে গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে সংখ্যালঘুরা জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলেন। সেই আন্দোলন থেকে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠনসহ ৮ দফা দাবি তোলা হয়। সেসব দাবি বাস্তবায়নে তখন অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। কিন্তু গত ১ বছরে ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের আশানুরূপ কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি।

সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেছে, বিগত ৫৩ বছরে কোনো সরকারই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। আগামী দিনের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় ৮ দফার বাস্তবায়ন করতে হবে। ৮ দফা যে দেশের ৮ শতাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রত্যেকের মনের কথা জানান দিতে ২২ আগস্ট ‘জাতীয় সংখ্যালঘু সম্মেলন-২০২৫’ আয়োজন করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক সুস্মিতা কর বলেন, সরকারের ঐকমত্য কমিশনে সংখ্যালঘু প্রতিনিধি নেই। দেশের একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে নিয়ে তো ঐকমত্য গঠন হতে পারে না। গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিজেদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট আছে। সংখ্যালঘুদের সব সংগঠন আট দফা দাবিতে একাত্ম। যদি নির্বাচন–পূর্ববর্তী সময়ে সরকার কিংবা রাজনৈতিক দলগুলো থেকে এসব দাবি বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে না দেখা যায়, তাহলে হয়তো সংখ্যালঘুরা ভোট বয়কট লড়তে পারে।

এই সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের প্রচার সম্পাদক সুব্রত বল্লভ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির আদিবাসী সংগঠক সুমন ত্রিপুরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ