গাজীপুরের কালিয়াকৈর হাইটেক রেলস্টেশন এলাকায় শিক্ষার্থীদের রেললাইন অবরোধের কারণে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চলের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিভিন্ন স্টেশনে আটকা পড়েছে অন্তত সাতটি ট্রেন। এ কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈরে অবরোধ শুরুর পরই বিভিন্ন স্টেশনে একাধিক ট্রেন আটকে যায়। এর মধ্যে রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী ‘সিল্কসিটি এক্সপ্রেস’ টাঙ্গাইলে, ঢাকা থেকে বুড়িমারীগামী ‘বুড়িমারী এক্সপ্রেস’ রাজধানী ঢাকার মৌচাকে, রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী ‘বনলতা এক্সপ্রেস’ টাঙ্গাইলের মহেরা স্টেশনে, ঢাকা থেকে দিনাজপুরগামী ‘একতা এক্সপ্রেস’ জয়দেবপুর স্টেশনে, ঈশ্বরদী থেকে ঢাকাগামী ‘কমিউটার এক্সপ্রেস’ মির্জাপুরে এবং দিনাজপুর থেকে ঢাকাগামী ‘দ্রুতযান এক্সপ্রেস’ ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনে আটকে পড়ে। এ ছাড়া এ সময় পর্যন্ত খুলনা থেকে ঢাকাগামী ‘চিত্রা এক্সপ্রেস’ খুলনায় আটকে থাকার খবর পাওয়া গেছে।

স্টেশনগুলোয় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘ সময় ট্রেন আটকে থাকায় যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। জরুরি কাজ থাকায় অনেক যাত্রী বিকল্প পথে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা হাসিনা বেগম বলেন, ‘হঠাৎ পথে ট্রেন আটকে থাকলে যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়বে, এটাই স্বাভাবিক। তবে যাত্রীদের নিরাপদে রাখতে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’

বাংলাদেশ ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি নামকরণের দাবিতে গাজীপুরের কালিয়াকৈর হাইটেক রেলস্টেশন এলাকায় রেললাইন অবরোধ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ সকাল সোয়া ৯টার দিকে রেললাইন অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। এ কারণে ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

প্রেম ছিল না তবু কেন মধুবালাকে বিয়ে করেছিলেন কিশোর কুমার

দিলীপ কুমারের সঙ্গে বিচ্ছেদের কিছুদিন পরই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন অভিনেত্রী মধুবালা। তবে তখন তিনি ছিলেন অসুস্থ। কিশোর কুমার জানিয়েছিলেন, ভালোবাসা থেকে নয়, বরং কথা রাখতেই তিনি এ বিয়ে করেছিলেন।
মধুবালা ও দিলীপ কুমারের প্রেম নিয়ে একসময় মুখর ছিল মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। কিন্তু অভিনেত্রীর বাবার বাধার কারণে সে সম্পর্কে ফাটল ধরে এবং দুজনের বিচ্ছেদ ঘটে। কিছুদিন পরেই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন মধুবালা। তাঁদের এই বিয়ে অনেককে চমকে দিয়েছিল। কারণ, তাঁদের প্রেমের কথা তখনো গোপন ছিল। তবে মধুবালার শরীর তখন ভালো যাচ্ছিল না। বলা হয়, দীর্ঘ রোগভোগের সময় কিশোর কুমার তাঁকে মায়ের বাড়িতে রেখেই চলে যান।

দ্য ইলাস্ট্রেটেড উইকলি অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেছিলেন, ‘বিয়ের আগেই জানতাম, ও খুব অসুস্থ। কিন্তু কথা তো দিয়েছিলাম। তাই সে কথা রেখেই ওকে ঘরে এনেছিলাম স্ত্রী হিসেবে। জানতাম, ওর জন্মগত হৃদ্‌রোগ আছে। তবু ৯ বছর ধরে সেবা করেছি। চোখের সামনেই ওকে মরতে দেখেছি। কেউ বুঝবে না এর যন্ত্রণা, না ভুগলে। ও অসম্ভব সুন্দরী ছিল। আর কত যন্ত্রণায় মারা গেছে, সেটা চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। হতাশায় চিৎকার করত, কান্নাকাটি করত। এত প্রাণোচ্ছল মানুষ নয়টা বছর বিছানায় শুয়ে থাকবে—এ কল্পনাই করা যায় না। ডাক্তার বলেছিল, ওকে হাসিখুশি রাখতে হবে। আমি তা–ই করেছি—ওর শেষনিশ্বাস পর্যন্ত। কখনো হেসেছি, কখনো কেঁদেছি ওর সঙ্গে।’

তবে কিশোর কুমারের এই বক্তব্য নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। কারণ, পরে ফিল্মফেয়ার সাময়িকীতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একেবারে ভিন্ন কথা বলেন তিনি। সেই সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেন, ‘মধুবালার সঙ্গে আমি প্রেমে পড়িনি কখনো। বরং ওর প্রেমিক ছিল আমার বন্ধু দিলীপ কুমার। আমি তো শুধু ওদের বার্তা পৌঁছে দিতাম। বিয়ের প্রস্তাবটা দিয়েছিল মধুবালাই। এমনকি, যখন আমার প্রথম স্ত্রী রুমা তখনো আমার সঙ্গে ছিল, তখনো মধু বলত, “ওকে কখনো ছেড়ো না, না হলে আমি তোমার হয়ে যাব।”’

আরও পড়ুনকিশোর কুমার কি সত্যিই ঘরে কঙ্কাল আর মাথার খুলি নিয়ে ঘুমাতেন২৭ মে ২০২৫

মধুবালার পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, চিকিৎসকেরা তখন বলেছিলেন, অভিনেত্রীর পক্ষে শারীরিক সম্পর্ক কিংবা সন্তানধারণ কোনো কিছুই সম্ভব নয়। সেই বাস্তবতা হয়তো প্রভাব ফেলেছিল কিশোরের সিদ্ধান্তে। এক ঘনিষ্ঠজন বলেন, ‘আমরা বলছি না কিশোরদা ভুল করেছিলেন। ডাক্তার তো স্পষ্ট বলেছিল—শারীরিক সম্পর্ক বা সন্তান কোনোটাই সম্ভব নয়। তবে একজন নারীর তো মানসিক সঙ্গীও দরকার হয়।’
ওই ঘনিষ্ঠজন আরও জানান, কিশোর কুমার তিন মাসে একবার আসতেন মাত্র। বলতেন, ‘আমি এলে তুমি কাঁদবে, আর এতে তোমার হৃদ্‌যন্ত্রের ক্ষতি হবে। তুমি বিষণ্ন হয়ে পড়বে।’ সে সময় মধু অনেক ছোট ছিলেন, ঈর্ষাও ছিল স্বাভাবিক। হয়তো এ দূরত্বই ধীরে ধীরে তাঁকে শেষ করে দিয়েছিল।
১৯৬৯ সালে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান বলিউড অভিনেত্রী মধুবালা

সম্পর্কিত নিবন্ধ