বনশ্রীতে ব্যবসায়ীকে গুলি করে ‘স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে’ নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল
Published: 24th, February 2025 GMT
রাজধানীর বনশ্রীতে গতকাল রোববার রাতে ব্যবসায়ীকে গুলি করে ‘স্বর্ণালংকার ছিনিয়ের’ ঘটনার একটি ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটির যথার্থতা নিশ্চিত করেছে পুলিশ।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়ানো ভিডিওটি ৩২ সেকেন্ডের। ভিডিওটি ঘটনাস্থলের কোনো ভবনের ওপরের দিক থেকে তোলা বলে মনে হয়।
ব্যাপক চিৎকার-চেঁচামেচি দিয়ে ভিডিওটি শুরু হয়। ভিডিওর পুরোটা সময়জুড়ে চিৎকার-চেঁচামেচি শোনা যায়। ভিডিওর শুরুর দিকে যাঁর চিৎকার বেশি শোনা যাচ্ছিল, তিনি সম্ভবত ‘ভুক্তভোগী’ ব্যক্তি। তিনি ‘ও আম্মা গো’ বলে বারবার চিৎকার করছিলেন।
ভিডিওটিতে দেখা যায়, রাতের বেলা একটি বাসার সামনে এক ব্যক্তির সঙ্গে ধস্তাধস্তি করছেন একজন। তাঁদের একজন নিচে, অপরজন ওপরে। তাঁদের পাশে দাঁড়ানো ছিলেন দুই ব্যক্তি। দুজনেরই মাথায় হেলমেট। একজনের মাথায় কালো রঙের হেলমেট, অপরজনের লাল রঙের হেলমেট। তিনটি মোটরসাইকেল কাছে এসে দাঁড়ায়। তখন তিনটি মোটরসাইকেলে মোট চারজন আরোহী ছিলেন। একটিতে চালকসহ দুজন আরোহী ছিলেন। দুটি মোটরসাইকেল কাছেই দাঁড়িয়ে থাকে। অপরটি একটু সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।
ধস্তাধস্তিতে নিচে পড়া ব্যক্তির হাত থেকে ব্যাগের মতো দেখতে কিছু একটা ছিনিয়ে নেন কালো হেলমেট পড়া ব্যক্তি। একজনের সঙ্গে ধস্তাধস্তির মধ্যে ‘ভুক্তভোগী’ ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে কিছুটা দূর থেকে গুলি করেন লাল হেলমেট পরা ব্যক্তি। তখনো একজনের সঙ্গে ভুক্তভোগীর ধস্তাধস্তি চলছি। গুলির পর ভুক্তভোগী ব্যক্তি তাঁর হাতে ছাড়িয়ে পেছনের দিকে দ্রুত সরতে থাকেন।
ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়া ব্যক্তি কিছু দৌড়ে গিয়ে একদম সামনে থাকা মোটরসাইকেলটির পেছনে চেপে বসেন।
লাল হেলমেট ধারীসহ অন্য দুজন আরেকটি মোটরসাইকেলের পেছনে বসেন। পরে মোটরসাইকেল তিনটি দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়।
মোটরসাইকেল তিনটি চলে যাওয়ার পর ভিডিওতে কাউকে প্রশ্ন করতে শোনা যায়, ছিনতাইকারী.
রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান আকন্দ বলেন, ভুক্তভোগী ব্যক্তির নাম মো. আনোয়ার। তিনি স্বর্ণ ব্যবসায়ী। তাঁর দোকান বনশ্রী ডি ব্লকে। গতকাল রাতে দোকান থেকে বাসায় ফেরার সময় তিনি ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন। একই ব্লকে তাঁর বাসার সামনেই এই ঘটনা ঘটে। ছিনতাইকারীরা তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে, ছুরিকাঘাত করে। তাঁর কাছে থাকা স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নিয়েছেন ছিনতাইকারীরা।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, ছিনতাইকারীরা তাঁর কাছ থেকে ২০০ ভরি স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নিয়েছে।
আহত অবস্থায় আনোয়ারকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁর চিকিৎসা চলছে। হাসপাতাল সূত্র জানায়, আনোয়ারের শরীরে গুলি ও কোপের চিহ্ন রয়েছে।
ওসি আতাউর রহমান আজ সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত বলে মনে করছেন তাঁরা। এই ঘটনায় মোট সাতজন সরাসরি জড়িত। তাঁদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁদের ধরার চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুনবনশ্রীতে বাসার সামনে স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে গুলি, ‘২০০ ভরি স্বর্ণালংকার’ ছিনতাই১১ ঘণ্টা আগেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স বর ণ ল ক র ছ ন য় ধস ত ধস ত ব যবস য়
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করতে কাজ করছে চীন
মাকিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে চুক্তি বাতিলকারী দেশগুলোর জন্য একটি স্পষ্ট বার্তা নিয়ে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বিশ্বজুড়ে কূটনৈতিক প্রচারণা চালাচ্ছেন। আর তার সেই বার্তাটি হচ্ছে- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি দাঙ্গাবাজ দেশ, যাকে বিশ্বাস করা যায় না।
শুল্ক স্থগিতাদেশের সময় চীন ছাড়া সবদেশকে বাণিজ্য চুক্তিতে স্বাক্ষর করার জন্য ট্রাম্প যে ৯০ দিনের সময়সীমা দিয়েছেন, সেই সময়ের মধ্যে চীনা কর্মকর্তারা বিদেশী সরকারগুলোকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ঠেলে দেওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ করছেন। মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট জানিয়েছেন, একবার এই চুক্তিগুলো কার্যকর হয়ে গেলে, তিনি চান মার্কিন মিত্ররা ‘একটি দল হিসেবে চীনের সাথে যোগাযোগ করুক’, যাতে মার্কিন পক্ষ আলোচনায় আরো বেশি সুবিধা পায়।
দক্ষিণ কোরিয়া থেকে শুরু করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন পর্যন্ত মার্কিন মিত্ররা নিরাপত্তার জন্য ওয়াশিংটনের উপর নির্ভর করে এবং অর্থনৈতিকভাবে ট্রাম্পকে সন্তুষ্ট করার জন্য তাদের উৎসাহ রয়েছে। অবশ্য চীন আরো সমান তালে শুল্ক যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ট্রাম্পের শেষ বাণিজ্য যুদ্ধের পর থেকে বেইজিং মার্কিন রপ্তানি থেকে তার অর্থনীতিকে মুক্ত করার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। দেশটিতে নিবেদিতপ্রাণ এবং সক্রিয় সৈন্য সংখ্যার বিচারে বিশ্বের বৃহত্তম সামরিক বাহিনী রয়েছে।
শি ট্রাম্পের সাথে ফোনে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন এবং তার সরকার ‘পাল্টাপাল্টি’ শুল্ক বাতিলের দাবি জানাচ্ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র জোর দিয়ে বলছে যে, অন্য পক্ষ, অর্থাৎ চীনকে উত্তেজনা কমানোর প্রথম পদক্ষেপ নিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের মাধ্যমে, চীন নিজেকে নিয়মভিত্তিক ব্যবস্থার একজন চ্যাম্পিয়ন হিসেবে উপস্থাপন করছে এবং অন্যান্য দেশকে ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে বেইজিংয়ের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছে।
সাংহাইয়ের ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর আমেরিকান স্টাডিজের পরিচালক উ জিনবো বলেন, “এটি কেবল চীন-মার্কিন সম্পর্কে নয়। এটি আসলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে।”
গত বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাজনীতিবিদদের সাথে দেখা করার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেওয়া উ জানান, অন্যান্য সরকারেরও বুঝতে হবে বেইজিংয়ের প্রচেষ্টা তাদের উপকার করেছে।
তিনি বলেন, “যদি চীন আমেরিকার বিরুদ্ধে না দাঁড়াত, তাহলে আমেরিকা কীভাবে তাদের ৯০ দিনের বিরতি দিত। চীনের উপর শুল্ক আরোপের ফলে ট্রাম্প অন্যান্য দেশের উপর শুল্ক আরোপ বন্ধ করার জন্য আবরণ পেয়েছেন। তাদের এটা উপলব্ধি করা উচিত।”
চীনের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ই সোমবার ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত ব্রিকস ব্লকের দেশগুলোকে ট্রাম্পের দাবি প্রতিহত করার জন্য বেইজিংয়ের সাথে যোগ দিতে আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, “আপনি যদি নীরব থাকেন, আপস করেন এবং পিছু হটতে চান, তাহলে এটি কেবল বুলিকে আরো আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে সাহায্য করবে।”
তার এই বক্তব্যের কয়েক ঘন্টা পরে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইংরেজি সাবটাইটেলসহ একটি ভিডিওতে ওয়াশিংটনকে ‘সাম্রাজ্যবাদী’ শক্তি হিসেবে চিহ্নিত করে। সেখানে দাবি করা হয়েছে, গত শতাব্দীতে জাপানি রপ্তানি সীমিত করার মার্কিন পদক্ষেপ তোশিবার মতো কোম্পানিগুলোকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
ওয়াং ই বলেছেন, “একজন ধর্ষকের কাছে মাথা নত করা ঠিক তৃষ্ণা নিবারণের জন্য বিষ পান করার মতো, এটি কেবল সংকটকে আরো গভীর করে তোলে। চীন পিছু হটবে না যাতে দুর্বলদের কণ্ঠস্বর শোনা যায়।”
ঢাকা/শাহেদ