ছাত্রদের নতুন দল গঠন প্রসঙ্গে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান বলেছেন, ক্ষেত তৈরি করলো বিএনপি, বীজ ফেললো বিএনপি, ফসল ফলাইলো বিএনপি আর আপনারা ধান কেটে দাবি করছেন আপনারাই সব করছেন। আপনারা (ছাত্ররা) দল করতে চান ভালো কথা, কিন্তু ক্ষমতায় থেকে কাউকে কিংস পার্টি করতে দেওয়া হবে না।’

সোমবার বিকেলে রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত জেলা বিএনপির বিশাল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সমাবেশে ফজলুর রহমান বলেন, আমরা আগে জাতীয় নির্বাচন চাই। কিন্তু তারা (জামায়াত) স্থানীয় নির্বাচন চান। কোনো দল স্থানীয় নির্বাচন আগে চাইতেই পারে। এটা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু ইউনূস সাহেব, আপনি তো রেফারি। আপনার কি মনে হয় কোন নির্বাচন আগে হওয়া দরকার? আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলন করেছিলাম। কারণ সেই সরকার আমাদের একটি সুন্দর জাতীয় নির্বাচন দেবে, স্থানীয় নির্বাচন নয়।

জামায়াতকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান বলেন, ‘যারা ২০ বছর বিএনপির ডানার মধ্যে ছিল, তারা এখন স্লোগান দেয় দুই সাপের এক বিষ নৌকা আর ধানের শীষ। আপনারা বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল করতে পারবেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি নিয়োগ দিতে পারবেন কিন্তু নির্বাচনে ১০ শতাংশের বেশি ভোট পাবেন না।

তিনি আরো বলেন, এখন নির্বাচন হলে ধানের শীষ ৮০ শতাংশ সিটে পাস করবে। সঠিক সময়ে যেন নির্বাচন না হয় সেজন্য চক্রান্ত চলছে। এই চক্রান্ত বিএনপির নেতাকর্মীদের রাজপথে থেকে প্রতিহত করতে হবে।

সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত। সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম আলীম, ওবায়দুর রহমান চন্দন, রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ র রহম ন ব এনপ র আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

শুধু ঘোষণা নয়, বাস্তবে প্রতিফলিত হোক

রাজধানী শহরসহ দেশের বড় শহরগুলোয় শব্দদূষণের অসহনীয় মাত্রার বিষয়টি কারও অজানা নয়। এটি এখন শুধু শব্দদূষণ নয়, শব্দসন্ত্রাস বলেও অভিহিত হচ্ছে। অতীতে ও বর্তমানে সরকারগুলো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও কার্যকর হচ্ছে না। অতীতের ধারাবাহিকতায় রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী, বারিধারা ও নিকেতনকে ‘নীরব এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সিদ্ধান্তটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। এখন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাই হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ।

শহরের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নীরব এলাকা ঘোষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি অবশ্যই সরকারের সদিচ্ছার প্রকাশ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই ঘোষণা বাস্তবে কার্যকর হবে, নাকি এটিও অতীতের মতো কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে? এর আগে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং এর আশপাশের এলাকাকে নীরব এলাকা ঘোষণা করা হয়েছিল, কিন্তু তার ফল তেমন একটা ভালো পাওয়া
যায়নি। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঘোষণার পর কিছু এলাকায় শব্দ কিছুটা কমলেও সার্বিকভাবে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। এই অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, শুধু ঘোষণা যথেষ্ট নয়, বরং এর কঠোর বাস্তবায়ন অপরিহার্য।

শব্দদূষণের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলতেই হয়। যার কারণে সাউন্ডবক্স বা মাইক বাজানোর বিষয়গুলো তুলনামূলকভাবে কমে এসেছে। তবে গাড়ির হর্ন এতটা বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করছে, যা অকল্পনীয়। এটিই এখন রাজধানীসহ বড় শহরগুলোর শব্দদূষণের সবচেয়ে বড় আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অতিরিক্ত শব্দ হৃদ্‌রোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এটিতে শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়, মেজাজ খিটখিটে হয়, মানুষ অনিদ্রায় ভোগে এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটায়। তাই শুধু অভিজাত এলাকা নয়, পুরো শহরে ধাপে ধাপে কীভাবে নীরব এলাকা ঘোষণা করা যায়, সেই লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে এগোতে হবে।

তবে এ উদ্যোগ সফল করতে হলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কঠোর হতে হবে। হর্ন বাজানোর বিরুদ্ধে আইন আছে। তা যদি আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে প্রয়োগ না করা হয়, এ ঘোষণা কখনোই সফল হবে না। কেবল প্রশাসনের ওপর নির্ভর না করে নীরব এলাকা–ঘোষিত এলাকাগুলোর বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যেমন মসজিদ, মন্দির এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেও এখানে গণসচেতনতার কাজে যুক্ত করতে হবে।

গাড়ির হর্ন বাজানো সীমিত করতে পরিবহনের বিভিন্ন ধরনের সমিতি–সংগঠনগুলোর যুক্ততাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। গাড়ির চালকদের অভ্যাসগত পরিবর্তনের জন্য শব্দদূষণের ক্ষতিকর দিকটি নিয়মিতভাবে তাঁদের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। হাইড্রোলিক হর্নসহ উচ্চমাত্রার যেকোনো হর্ন উৎপাদন, আমদানি ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। এ ব্যাপারে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ