যশোরের শার্শার গোগা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী অগ্রভুলোট গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দু’গ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষে বাড়িঘর ভাঙচুর, গুলিবর্ষণ ও বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার অগ্রভুলোট বাজারে এ ঘটনা ঘটে। 

সংঘর্ষে বিএনপির দুজন নেতাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম জখম করা হয়েছে। আহতরা হল- আতিয়ার রহমান (৫৮) ও শফিকুল ইসলাম (৫৮)। 

সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজনৈতিক পালাবদলের পর এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গোগা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ ও সহ-সভাপতি সরোয়ার হোসেনের মধ্যে দীর্ঘদিন দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এরই জেরে সোমবার রাতে অগ্রভুলোট বাজারে সরোয়ার হোসেনের সমর্থক বাবুল, মিকাইল হোসেন ও একই গ্রামের কবিনূরসহ অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন আব্দুল হামিদ সরদার সমর্থিত আতিয়ার রহমানকে একা পেয়ে পিটিয়ে হাঁটুর হাড় ভেঙে ফেলে। তাকে বাঁচাতে আসলে শফিকুল নামে অপর এক বিএনপি নেতাকেও পিটিয়ে জখম করে। এ সময় কয়েকটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এবং গুলিবর্ষণ করে তারা এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে। পরে স্থানীরা আহতদের উদ্ধার করে যশোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে হামিদ সরদার সমর্থিত নেতাকর্মীরা বাজারে এসে হট্টগোল সৃষ্টি করলে পুলিশ এসে সকলকে ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

এদিকে, মঙ্গলবার সকালে ওই বাজার থেকে একটি তাজা বোমা ও গুলির খোসা উদ্ধার করেছেন স্থানীয় জনতা। 

শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম রবিউল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘‘খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ গিয়ে উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন আছে। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। আহত পরিবার থেকে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’

ঢাকা/রিটন/এনএইচ 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ