শেরপুর সদর উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার ও অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত বিএনপি নেতার মৃত্যু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে রাজধানী ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এর আগে ওই দিন বিকেলে সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের ভীমগঞ্জ এলাকায় তাঁর ওপর হামলা হয়।

নিহত ব্যক্তির নাম জাকারিয়া বাদল (৪৭)। তিনি সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও শেরপুর সরকারি কলেজের ছাত্র সংসদের সাবেক সহকারী সাধারণ সম্পাদক (এজিএস)। তাঁর বাড়ি উপজেলার ভীমগঞ্জ গ্রামে। এ হামলার ঘটনায় আরও দুজন আহত হন। তাঁরা হলেন ভীমগঞ্জ গ্রামের সোহাগ আলম ও রুহুল আমিন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বেশ কিছুদিন ধরে কামারিয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক লুৎফর রহমানের সঙ্গে বিএনপির নেতা জাকারিয়া বাদলের দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। সম্প্রতি জেলা বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে ওই দুই নেতার মধ্যে আরও বিভেদ বাড়ে। গতকাল বিকেলে জাকারিয়া বাদল ও তাঁর দুই সহযোগী মোটরসাইকেল যোগে ভীমগঞ্জ বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে বিএনপির স্থানীয় নেতা লুৎফরের অনুসারীরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা চালান। জাকারিয়া বাদলসহ তিনজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। এলাকাবাসী ওই তিনজনকে উদ্ধার করে প্রথমে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য শেরপুর থেকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রাত ১২টার দিকে জাকারিয়া বাদল মারা যান।

জেলা পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনার বিষয়ে সদর থানায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এলাকায় যৌথ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ হামলাকারী ব্যক্তিদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র ভ মগঞ জ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না, মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন: সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, 'আমাদের একটা অভ্যাস হয়ে গেছে একটা নেতিবাচক সংবাদ দেখলেই যাচাই-বাছাই না করে শেয়ার করে দেওয়া হয়। অত্যন্ত ভিত্তিহীন সংবাদও আমরা শেয়ার করে দেই।'

সিইসি বলেন, 'দয়া করে সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না। এই মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন। তথ্যটা যেন আগে যাচাই করে তারপরে শেয়ার করেন।'

আজ সোমবার রাজধানীর ভাটারায় আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নে (এজিবি) এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন সিইসি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ভুয়া সংবাদের প্রচার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপপ্রয়োগ রোধে করণীয় সম্পর্কে তিনি এসব কথা বলেন।

থানা আনসার কোম্পানি/প্লাটুন সদস্যদের আনসার মৌলিক প্রশিক্ষণের (৪র্থ ধাপ) সমাপনী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিইসি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো সংবাদ দেখা মাত্রই নাগরিকদের যাচাইবাছাই করতে আহ্বান জানান সিইসি। নিশ্চিত হওয়ার আগে শেয়ার না করতে বলেন তিনি।

জাতীয় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে আনসার ভিডিপির ভূমিকাকে মূল শক্তি বলে উল্লেখ করেন সিইসি। তিনি বলেন, 'এনারাই অধিক সংখ্যায় নিয়োজিত থাকেন। এবং আমাদের হিসেব করতে গেলে প্রথম এদেরকেই হিসেব করতে হয় যে, কতজন আনসার ভিডিপি সদস্য আমরা মোতায়েন করতে পারব। মূল কাজটা আঞ্জাম (সম্পাদন) দিতে হয় কিন্তু আনসার এবং ভিডিপির সদস্যদের।'

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। নির্বাচনকালীন জনগণের নিরাপত্তা, ভোট কেন্দ্রের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা এবং সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণে আনসার বাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছে বলে জানান তিনি। নির্বাচনে দেশজুড়ে প্রায় ৬ লাখ আনসার ও ভিডিপি সদস্য দায়িত্বপালন করবেন বলেন মহাপরিচালক।

অনুষ্ঠানে মহড়ায় ঢাকা মহানগর আনসারের চারটি জোনের অধীন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৩২০ জন আনসার ও ভিডিপি সদস্য অংশ নেন।  আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা টহল, দায়িত্ব বণ্টন ও জরুরি প্রতিক্রিয়া অনুশীলনে অংশ নেন।

মহড়ায় ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জামাদি নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া, ভোটারদের শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে ভোট প্রদানে সহায়তা, জাল ভোট প্রতিরোধ, প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা এবং সেনা, বিজিবি, র‍্যাব ও পুলিশের সঙ্গে দ্রুত সমন্বয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন জোনের অধিনায়ক এবং প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ