খুলনায় পৃথক দুর্ঘটনায় শিশুসহ নিহত ২
Published: 26th, February 2025 GMT
খুলনায় ট্রেনের ধাক্কায় রাজিব টিকাদার নামে এক যুবক এবং বালু বোঝাই ট্রলি খাদে পড়ে দুর্ঘটনায় আশিকুল ইসলাম রায়হান (৭) নামে এক শিশু শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) খুলনার সাচিবুনিয়া ও তেরখাদা উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের মোকামপুর গ্রামে আলাদা দুর্ঘটনায় তাদের মৃত্যু হয়।
খুলনার সাচিবুনিয়া এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় নিহত রাজিব টিকাদার বটিয়াঘাটা উপজেলার চক্রাখালী এলাকার পরিমল টিকাদারের ছেলে।
খুলনা রেলওয়ে থানার এসআই এমদাদুল হক বলেন, “বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার বেতনা কমিউটর ট্রেনটি বেনাপোল থেকে মোংলার দিকে যাচ্ছিল। এসময় সাচিবুনিয়া বাজার থেকে হেঁটে রাস্তা পার হচ্ছিলেন রাজিব। এসময় তিনি ট্রেনের ধাক্কায় রাস্তায় পড়ে যান। তার মাথার বাম পাশে, বাম হাতের কনুই, বাম হাতের কব্জি আঘাত প্রাপ্ত হয় এবং বাম পায়ের বৃদ্ধ আঙ্গুলসহ ৩টি আঙ্গুল কেটে পড়ে যায়।
স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় রেলওয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অপরদিকে, তেরখাদার উপজেলায় নিহত শিশু আশিকুল ইসলাম রায়হান মোকামপুর এলাকার আলতাফ কাজীর ছেলে।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বুধবার বিকেলে মোকামপুর গ্রামের শাহাজান শেখের বাড়ির সামনে বালু ভর্তি ট্রলি
নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে পার্শ্ববর্তী খালের পানিতে পড়ে যায়। এসময় স্কুল শিক্ষার্থী আশিকুল ইসলাম রায়হান বালুর নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় এবং গাড়ির ড্রাইভার রুবেল বিশ্বাস আহত হয়। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে ড্রাইভারকে খুলনা মেডেকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় স্থানীয়রা।
তেরখাদা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেহেদী হাসান বলেন, “বালুবাহী ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস