Samakal:
2025-08-01@20:10:10 GMT

বিপিএলের চেনাজানা তারা

Published: 27th, February 2025 GMT

বিপিএলের চেনাজানা তারা

বারবার আশা ভঙ্গের ধাক্কায় তারাও এতটাই হতাশ, এখন পাকিস্তান দলকে নিয়ে হাসিঠাট্টায় দুঃখ ভুলছে। তারাও দলের তারকা ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স নিয়ে এতটাই বিরক্ত, তাদের নিয়ে ট্রল করছে। পাকিস্তানের আজ নিউজ টিভির এক টকশোতে যেমন পাকিস্তান-বাংলাদেশ আজকের ম্যাচটিকে দু’দলের জন্য ‘ডু অর ডাই’ বলে মজা করছেন।

সঞ্চালক অতিথির কাছে জানতে চাচ্ছেন– ‘ম্যাচটিতে বাংলাদেশ হেরে গেলে নিশ্চয় আপসেট হবেন?’ উত্তরে অনুষ্ঠানের অতিথি এক ধাপ এগিয়ে মজা নিচ্ছেন– ‘অবশ্যই, বাংলাদেশ ফেভারিট। তাদের পেসাররা অন্তত আমাদের তারকা পেসারদের চেয়ে ভালো বোলিং করেছে। দুই দল যখন আগেই সেমির দৌড়ে ছিটকে গেছে, তখন ম্যাচটিতে জোর লড়াই হবে।’

হাসতে হাসতে কথাগুলো বললেও লড়াইটি নেহাত মন্দ হওয়ার কথা না। দুটি দলের ক্রিকেটাররা একে অন্যের সঙ্গে সাম্প্রতিক বেশ কিছু ম্যাচ খেলেছেন। গত আগস্টেই রাওয়ালপিন্ডিতে টেস্ট সিরিজ জিতে এসেছে বাংলাদেশ দল। তার পর বিপিএলেও চেনাজানা হয়েছে আফ্রিদি-মুশফিকদের সঙ্গে। পাকিস্তান এই দলের অন্তত চার ক্রিকেটার কিছুদিন আগেই বিপিএল খেলে গেছেন। খুশদিল শাহ তো বিপিএলে পারফর্ম করেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে জাতীয় দলের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়েছেন।

বিপিএলে ফরচুন বরিশালের হয়ে খেলে গিয়েছেন শাহীন শাহ আফ্রিদি ও ফাহিম আশরাফ। রংপুর রাইডার্সের হয়ে খুশদিল শাহ আর উসমান খান খেলেছেন চিটাগং কিংসের হয়ে। তাই আজকের ম্যাচে বিপিএলে মোকাবিলা করা শাহীন আফ্রিদিকে খেলতে মেহেদী হাসান মিরাজদের খুব বেশি জড়তা থাকার কথা না। 

খুশদিলের বিপক্ষে নাহিদ রানার বোলিং করার মধ্যেও বিপিএলের অভিজ্ঞতা কাজে লাগতে পারে। জানুয়ারিতে বিপিএল চলাকালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ চলছিল পাকিস্তানের। সেই কারণে রিজওয়ান-বাবরদের অনেকেই বিপিএলে আসতে পারেননি। তবে তারাও অতীতে বিপিএলে নিয়মিত খেলে গিয়েছেন। তাই পাকিস্তান দলের এসব তারকা ক্রিকেটার সম্পর্কে সম্মক ধারণা থাকার কথা নাজমুল শান্তদের।

 তাছাড়া বাংলাদেশ দলের বতর্মান কোচ ফিল সিমন্সের পিএসএলের দল করাচি কিংসের হয়ে কোচিং করানোরও অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাঁর ল্যাপটপেও নিশ্চয়ই পাকিস্তান দল সম্পর্কে অজানা অনেক তথ্য-উপাত্ত রয়েছে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ দলের সঙ্গে তো রয়েছেনই পাকিস্তানের সাবেক কিংবদন্তি লেগ স্পিনার মুস্তাক আহমেদ। তাই প্রতিপক্ষ সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা নিয়েই আজ মাঠে নামবে বাংলাদেশ দল। তাছাড়া পাকিস্তানি চ্যানেলের ওই সঞ্চালক যতই মজা করে বলুন না কেন, আজকের ম্যাচে বাংলাদেশ কিন্তু পাকিস্তানকে ছেড়ে কথা বলবে না।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ল দ শ দল ব প এল

এছাড়াও পড়ুন:

অধ্যাপক ইউনূসের সংস্কারের অঙ্গীকারের এক বছর পরেও কারাগারে সাংবাদিকেরা: সিপিজে

সাংবাদিক ফারজানা রুপা চলতি বছরের ৫ মার্চ ঢাকার একটি জনাকীর্ণ আদালতে আইনজীবী ছাড়াই দাঁড়িয়েছিলেন। বিচারক তাঁর বিরুদ্ধে আরেকটি হত্যা মামলা নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করছিলেন। ইতিমধ্যে অন্য মামলায় কারাগারে থাকা এই সাংবাদিক শান্তভাবে জামিনের আবেদন জানান। ফারজানা বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমার বিরুদ্ধে এক ডজন মামলা দেওয়া হয়েছে। আমি একজন সাংবাদিক। আমাকে ফাঁসানোর জন্য একটি মামলাই যথেষ্ট।’

বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টসের (সিপিজে) এক নিবন্ধে এসব কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, বেসরকারি একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক প্রধান প্রতিবেদক ফারজানা রুপার বিরুদ্ধে ৯টি হত্যা মামলা রয়েছে। আর তাঁর স্বামী চ্যানেলটির সাবেক বার্তাপ্রধান শাকিল আহমেদের নামে রয়েছে আটটি হত্যা মামলা।

এক বছর আগে ছাত্রদের নেতৃত্বে কয়েক সপ্তাহের বিক্ষোভের পর পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই বিক্ষোভ চলাকালে দুজন সাংবাদিক নিহত হন। শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেন নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

অধ্যাপক ইউনূস গণমাধ্যম সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা সরকারের অধীন সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করতে ব্যবহৃত সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু ২০২৪ সালের নভেম্বরে ডেইলি স্টার পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ইউনূস বলেছিলেন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তাড়াহুড়ো করে হত্যার অভিযোগ আনা হচ্ছে। তিনি আরও বলেছিলেন, সরকার তখন থেকে এ ধরনের পদক্ষেপ বন্ধ করে দিয়েছে। মামলাগুলো পর্যালোচনা করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কিন্তু প্রায় এক বছর পর এখনো সাংবাদিক ফারজানা রুপা, শাকিল আহমেদ, শ্যামল দত্ত ও মোজাম্মেল হক বাবু কারাগারে আছেন। হত্যায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে পৃথক মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। বিগত সরকারের প্রতি সহানুভূতিশীল হিসেবে ব্যাপকভাবে পরিচিত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগের বারবার ব্যবহারকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সেন্সরশিপ বলেই মনে হচ্ছে।

এ ধরনের আইনি অভিযোগ ছাড়াও সিপিজে সাংবাদিকদের ওপর শারীরিক হামলা, রাজনৈতিক কর্মীদের কাছ থেকে হুমকি এবং নির্বাসনের ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কমপক্ষে ২৫ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে তদন্ত করছে। এই অভিযোগ সাবেক শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের লক্ষ্যবস্তু করতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

সিপিজের আঞ্চলিক পরিচালক বেহ লিহ ই বলেন, ‘চারজন সাংবাদিককে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ ছাড়াই এক বছর ধরে কারাগারে আটকে রাখা অন্তর্বর্তী সরকারের সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষার ঘোষিত প্রতিশ্রুতিকে দুর্বল করে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রকৃত সংস্কার মানে অতীত থেকে বেরিয়ে আসা, এর অপব্যবহারের পুনরাবৃত্তি নয়। যেহেতু আগামী মাসগুলোতে দেশে নির্বাচন হতে চলেছে, তাই সব রাজনৈতিক দলকে সাংবাদিকদের খবর প্রকাশের অধিকারকে অবশ্যই সম্মান জানাতে হবে।’

আইনি নথি ও প্রতিবেদন নিয়ে সিপিজের এক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এফআইআর নথিভুক্ত হওয়ার অনেক পর সাংবাদিকদের নাম প্রায়ই এতে যুক্ত করা হয়। মে মাসে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, গত বছরের বিক্ষোভের পর ১৪০ জনের বেশি সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

শ্যামল দত্তের মেয়ে শশী সিপিজেকে বলেন, তাঁর বাবার বিরুদ্ধে এখন কতগুলো মামলা চলছে, পরিবার তার হিসাব রাখতে পারেনি। তাঁরা অন্তত ছয়টি হত্যা মামলার কথা জানেন, যেখানে শ্যামল দত্তের নাম আছে। মোজাম্মেল বাবুর পরিবার ১০টি মামলার কথা জানে। ফারজানা রুপা ও শাকিল আহমেদের পরিবার সিপিজেকে জানিয়েছে, তারা পাঁচটি মামলার এফআইআর পাননি, যেখানে একজন বা অন্য সাংবাদিকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এর মানে হলো তাঁদের কেউই জামিনের আবেদন করতে পারছেন না।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম ও পুলিশের মুখপাত্র এনামুল হক সাগরকে ই–মেইল করে সিপিজে। তবে তাঁরা সাড়া দেননি বলে সিপিজের নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ