কুষ্টিয়ায় অটোরিকশার বাড়তি ভাড়া চাওয়ার প্রতিবাদ করায় দর্শনার্থীকে মারধর
Published: 27th, February 2025 GMT
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার বাড়তি ভাড়া চাওয়ার প্রতিবাদ করায় এক দর্শনার্থীকে মারধর করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে উপজেলার শিলাইদহ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত কুঠিবাড়ি-সংলগ্ন কাছারিবাড়ি এলাকার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। ওই দর্শনার্থীর দাবি, অটোচালকেরা তাঁকে মারধর করেছেন।
মারধরের শিকার দর্শনার্থীর নাম আনোয়ার হোসেন মাসুম (৪৪)। তিনি ঝিনাইদহ সদরের আদর্শপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও ঝিনাইদহ প্রথম আলো বন্ধুসভার উপদেষ্টা। তিনি শিলাইদহ ইউনিয়ন পরিষদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা নেন। আজ দুপুরে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে তাঁকে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে। এ সময় তাঁর পাশে ছিলেন সফরসঙ্গী অন্য দর্শনার্থীরা।
আহত আনোয়ার হোসেন বলেন, কাছারিবাড়ি থেকে কুঠিবাড়িতে যাওয়ার জন্য ২০ টাকার ভাড়া ৫০ টাকা দাবি করেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালকেরা। এ নিয়ে চালকদের সঙ্গে তর্কাতর্কি হয়। পরে ২০ টাকা মিটিয়ে একটি ভ্যানে উঠে কুঠিবাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন তাঁরা। কাছারিবাড়ি মোড়ে কয়েকটি ব্যাটারিচালিত ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা এসে তাঁদের পথরোধ করে। পরে অটোচালকেরা কাঠের লাঠি দিয়ে তাঁকে মারধর করেন। চালকদের সিন্ডিকেটের কারণে দর্শনার্থীরা প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এ ঘটনায় তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ করবেন।
ঝিনাইদহ প্রথম আলো বন্ধুসভার আরেক উপদেষ্টা সাকিব মোহাম্মদ আল হাসান বলেন, প্রথম আলো ঝিনাইদহ বন্ধুসভার ৪৫ জন সদস্য ঘুরতে আসেন। কাছারিবাড়ি থেকে কুঠিবাড়িতে যাওয়ার পথে বাড়তি ভাড়ার প্রতিবাদ করায় অটোচালকেরা হামলা করেন। এ সময় আনোয়ার হোসেন আহত হন। তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেওয়া হয়।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, ভাড়া নিয়ে অটোচালকদের সঙ্গে দর্শনার্থীদের প্রথমে তর্কাতর্কি হয়। পরে চালকেরা সংঘবদ্ধ হয়ে হামলা চালান। ইজিবাইকচালক ইমরান, ইমান আলীসহ কয়েকজন এই হামলায় জড়িত। ঘটনার পর থেকে তাঁরা পলাতক।
রবীন্দ্র কুঠিবাড়ির কাস্টোডিয়ান মো.
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলায়মান শেখ বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া চাওয়াকে কেন্দ্র করে এক দর্শনার্থীকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ঝ ন ইদহ প রথম ম রধর
এছাড়াও পড়ুন:
গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলায় অপু গ্রেপ্তার
রাজধানীর গুলশানে সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির মামলায় এজাহারনামীয় আসামি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদ্য বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর ওয়ারী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে ওয়ারী থেকে ডিবির ওয়ারী বিভাগের সদস্যরা গ্রেপ্তার করেছেন। তাকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।
গত ১৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে একটি চক্র রাজধানীর গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন জানে আলম অপু ওরফে কাজী গৌরব অপু এবং আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ। এ সময় শাম্মী আহমেদ দেশের বাইরে থাকায় তার স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরকে জিম্মি করে ভয় দেখানো হয়।
চক্রটি বাসায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করে প্রথম ধাপে ১০ লাখ টাকা আদায় করে নেয়। এর মধ্যে ৫ লাখ টাকা ভাগ পান অপু এবং বাকি ৫ লাখ পান রিয়াদ। চাঁদার দ্বিতীয় কিস্তি আনতে ২৬ জুলাই সন্ধ্যায় আবারও গুলশানের ওই বাসায় গেলে চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করে পুলিশ। তারা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ, ইব্রাহীম হোসেন মুন্না, সাকদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব এবং আমিনুল ইসলাম। তাদের সবাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বিভিন্ন পদে ছিলেন। গ্রেপ্তারের পরপরই তাদেরকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এদিকে, চাঁদাবাজির এ ঘটনায় গুলশান থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এজাহারনামীয় ছয় আসামি ও অজ্ঞাত ১০-১২ জন সমন্বয়ক পরিচয়ে ১৭ জুলাই সকালে আমার গুলশান-২ নম্বরের বাসায় আসে। যার মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ ও কাজী গৌরব অপু আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার দাবি করে। তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দেখায়। একপর্যায়ে আমি বাধ্য হয়ে ১০ লাখ টাকা দিই। পরে ১৯ জুলাই রাতে রিয়াদ ও অপু আমার বাসায় এসে ধাক্কাধাক্কি করে, যা আমি পুলিশকে ফোন করে জানাই। এ সময় অভিযুক্তরা সেখান থেকে সটকে পড়ে।
এজাহারে আরো বলা হয়েছে, ২৬ জুলাই শনিবার বিকেলে রিয়াদের নেতৃত্বে আসামিরা আমার বাসার সামনে এসে আমাকে খুঁজতে থাকে। আমি বাসায় না থাকায় বাসার দারোয়ান আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। এ সময় আসামিরা তাদের দাবিকৃত আরো ৪০ লাখ টাকা না দিলে আমাকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানো হবে বলে হুমকি দিতে থাকে।
ঢাকা/এমআর/রফিক