চট্টগ্রাম বন্দরের বে টার্মিনাল প্রকল্পে নতুন করে গতি এসেছে বলে জানিয়েছেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান। আজ বৃহস্পতিবার বন্দরের শহীদ ফজলুর রহমান মুন্সী মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা জানান।

বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, আগামী মাসে বে টার্মিনালের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) সরকারি অনুমোদন পেতে যাচ্ছে। প্রকল্প উন্নয়ন প্রস্তাব অনুমোদনের পর বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ঋণ চুক্তি সই হবে। এর মাধ্যমে প্রকল্পের মাঠপর্যায়ের কাজ শুরু হওয়ার পথ তৈরি হবে।

গত বছরের জুনে বে টার্মিনাল প্রকল্পের ব্রেক ওয়াটার বা স্রোত প্রতিরোধক তৈরি এবং জাহাজ চলাচলের পথ তৈরি তথা খননকাজের জন্য ৬৫ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ অনুমোদন করেছিল বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পর্ষদ। এখন সরকারি অনুমোদন পাওয়ার পর প্রায় এক যুগ আগে হাতে নেওয়া এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। এরপর পরিকল্পনা অনুযায়ী টার্মিনাল নির্মাণ হবে।

বে টার্মিনালে মূলত জাহাজ থেকে কনটেইনার ও পণ্য ওঠানো-নামানো হবে। খোলা পণ্য সাগরে ওঠানো-নামানো গেলেও টার্মিনাল ছাড়া কনটেইনার ওঠানো-নামানো যায় না। রপ্তানি পণ্যের সিংহভাগ কনটেইনারে ভরে বিদেশে পাঠানো হয়। আবার শিল্পের কাঁচামালসহ মূল্যবান পণ্য কনটেইনারে করে আমদানি হয়।

এই প্রকল্প এলাকা চট্টগ্রাম বন্দরের বিদ্যমান টার্মিনাল এলাকার চেয়ে বড়। বন্দর জলসীমার শেষ প্রান্তে চট্টগ্রাম ইপিজেডের পেছনের সাগরপার থেকে শুরু হবে বে টার্মিনাল প্রকল্পের সীমানা, যা গিয়ে শেষ হবে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের অদূরে রাসমণি ঘাটে। বঙ্গোপসাগরের কোলঘেঁষা প্রকল্প এলাকাটি প্রায় ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার লম্বা।

সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, বে টার্মিনাল প্রকল্প দেশের অর্থনীতির জন্য একটি গেম চেঞ্জার। এই প্রকল্পের জন্য রেলপথ, সড়কপথ এবং নদী যোগাযোগব্যবস্থা নতুন করে নির্মাণের প্রয়োজন নেই। কারণ, সেগুলো ইতিমধ্যে বিদ্যমান।

এই প্রকল্পে মোট চারটি টার্মিনাল গড়ে তোলা হবে। এর মধ্যে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারির (পিপিপি) আওতায় দুটি বিদেশি প্রতিষ্ঠান দুটি টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনা করবে। প্রতিষ্ঠান দুটি হলো সিঙ্গাপুরের পিএসএ ইন্টারন্যাশনাল ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) ডিপি ওয়ার্ল্ড। দুই প্রতিষ্ঠান প্রায় ৩০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে। তাদের বিনিয়োগের প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে।

বাকি দুটি টার্মিনাল নির্মাণের প্রক্রিয়াও এখন চলছে। আবুধাবি পোর্টস মাল্টিপারপাস একটি টার্মিনাল নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছে, যেখানে ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ হতে পারে। এ ছাড়া গ্যাস ও তেল খালাসের টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনার প্রস্তাব দিয়েছে দেশীয় প্রতিষ্ঠান ইস্ট কোস্ট গ্রুপ। বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে ইস্ট কোস্ট গ্রুপ এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। তারা ৩৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ট র ম ন ল প রকল প প রকল প র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সাজেকে নিহত খুবি শিক্ষার্থী রিংকীর মরদেহ নেওয়া হবে গাইবান্ধা

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের সেশনাল ট্যুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকীর মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তার বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে।

এছাড়া শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে। একই সাথে এদিন সকল ক্লাস-পরীক্ষাও বন্ধ রয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাজমুস সাদাত এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীদের সেশনাল ট্যুরের সময় রাঙামাটির সাজেক যাওয়ার পথে গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়। এতে পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকী নিহত হন। দুর্ঘটনায় নিহত রুবিনা আফসানা রিংকির মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তাদের বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে। এই দুর্ঘটনায় আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আহত হয়েছেন। আহতদেরকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনজনকে চট্টগ্রামে স্থানান্তর করা হচ্ছে ।”

তিনি বলেন, “এই শোকাবহ ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে মর্মাহত। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে, সকল ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবানের সিভিল প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। ছাত্রদের সঙ্গে শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত আছেন। তিনি নিজে এবং সহকারী পরিচালকসহ কর্মকর্তারা খাগড়াছড়ি রওনা হয়েছেন।”

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদসহ সকল উপাসনালয়ে নিহত শিক্ষার্থীর আত্মার মাগফিরাত এবং আহতদের সুস্থতার জন্য বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ করেন তিনি। 

এদিকে, সাজেকে শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সব ধরনের সেশনাল ট্যুর অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার কাকলি রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষ ৪র্থ বর্ষ টার্ম-২ এর সেশনাল ট্যুরে অংশগ্রহণরত অবস্থায় সড়ক দুর্ঘটনায় একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন। শিক্ষার্থীর এই অকাল মৃত্যুতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে শোকাহত এবং আহতদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সকল দূরপাল্লার সেশনাল ট্যুর স্থগিত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করেছে কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, রাঙামাটির বাঘাইছড়ির সাজেক পর্যটনকেন্দ্রে যাওয়ার পথে চান্দের গাড়ি পাহাড়ের খাদে পড়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিহত হন। এসময় আহত হয়েছেন আরো ১১ জন। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে সাজেকের হাউসপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

নিহত রুবিনা আফসানা রিংকী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। আহতরা সবাই একই বিভাগের শিক্ষার্থী।

ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ