প্রয়াত ক্রীড়া সংগঠক আরাফাত রহমান কোকো স্মরণে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে মাসদাইর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে আয়োজিত ফাইনাল খেলায় মাসদাইর তরুণ সংঘ ২৮ রানে আলফা মার্ট'কে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। চ্যাম্পিয়ন দলকে ২০ হাজার টাকা প্রাইজ মানি এবং রানার্সআপ দলকে ১০০০০ হাজার টাকা প্রাইজ মানি উপহার দেয়া হয়।

নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এইচএম আনোয়ার প্রধানের উদ্যোগে এবং ১৩ নং ওয়ার্ড বিএনপি'র সভাপতি এডভোকেট শেখ আঞ্জুম আহমেদ রিফাতের সার্বিক তত্ত্বাবধানে আয়োজিত টুর্নামেন্টে মোট ১২ টি দল অংশগ্রহণ করে।

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, আজকে একটি সফল টূনামেন্টের পরিসমাপ্তি ঘটলো। প্রায় দুই মাস আগে আমরা এই মাঠে এই টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেছিলাম। পুরো টুর্নামেন্ট শেষ করে আজ ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বিএনপি'র প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কনিষ্ঠপুত্র বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকো স্মরণে এতো সুন্দর একটি টুর্নামেন্ট আয়োজন করায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে আয়োজকদের প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন জানাচ্ছি । এখন থেকেই প্রতিবছর এই আয়োজন করা হবে যেনো কোমলমতি শিশু কিশোর যুব সমাজ মাদক এবং কিশোর গ্যাং থেকে মুক্ত থাকতে পারে।

এডভোকেট সাখাওয়াত বলেন, যার নামে টূর্নামেন্ট সেই আরাফাত রহমান কোকো'কে অত্যাচার করে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা হত্যা করেছে। শহীদ আরাফাত রহমান কোকো কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তিনি ছিলেন একজন ক্রীড়া সংগঠ বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন। ক্রিকেট, ফুটবল থেকে শুরু করে ক্রিড়া ক্ষেত্রের সবগুলো বিভাগে তিনি উন্নতি করতে সক্ষম হয়েছিলেন।

তিনি আরো বলেন, খেলাধুলাকে রাজনীতির মধ্যে ঢুকিয়ে খেলোয়ারদেরকে ধ্বংষ করা হয়েছে। সাকিব আল হাসান, মাশরাফিদের সুন্দর ক্রিকেট ক্যারিয়ার গুলো ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে তাদেরকে রাজনীতির সাথে জড়িত করে। করে। তাই আমি বলতে চাই, খেলাধুলাকে রাজনীতির উর্ধ্বে রাখুন। 

প্রধান বক্তার বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন,  মরহুম আরাফাত রহমান কোকো ছিলেন স্বাধীনতার মহান ঘোষক বীর মুক্তিযোদ্ধা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার আদরের ছোট ছেলে। রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নিও তিনি রাজনীতিবিদ হতে চান নি। তিনি খেলাধুলাকে ভালোবেসে ছিলেন। খেলাধুলাকে ভালোবেসে তিনি ক্রীড়াঙ্গনে উন্নয়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন।

তিনি আরো বলেন, আজকে এই প্রয়াত নেতার স্মরণে ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলায় যারা বিজয়ী হয়েছো এবং যারা বিজয়ী হতে পারোনি, উভয় দলকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।

সেই সাথে আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি তরুণ এবং যুব সমাজকে খেলাধুলায় ফিরিয়ে আনার জন্য কারণ যত বেশি খেলাধুলার আয়োজন করা যাবে সুন্দর করে মাদক মুক্ত সমাজ গঠন করা যাবে। আগামী প্রজন্মকে মাদক থেকে মুক্ত রাখতে হলে এ ধরনের খেলাধুলার আয়োজন নিয়মিত চালিয়ে যেতে হবে।

নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এইচএম আনোয়ার প্রধানের সভাপতিত্বে এবং ১৩ নং ওয়ার্ড বিএনপি'র সভাপতি এডভোকেট শেখ আঞ্জুম আহমেদ রিফাতের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির সভাপতি মাসুদ রানা, জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী রহিমা শরীফ মায়া, মহানগর মহিলা দলের সভানেত্রী দিলারা মাসুদ ময়না, সদর থানা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ সেলিম আহমেদ, আলমগীর খান চঞ্চল, ১৩ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হিরা সরদার, ১৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আল আরিফ, ১৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পলাশ প্রধান, নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট আসমা হেলেন বিথী, সাবেক কার্যকরী সদস্য এডভোকেট আদনান মোল্লা, এডভোকেট সুইটি রহমানসহ ক্রীড়ামোদী সাধারণ মানুষ।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ আর ফ ত রহম ন ক ক ফ ইন ল খ ল র ব এনপ র র জন ত র এডভ ক ট সদর থ ন অন ষ ঠ

এছাড়াও পড়ুন:

কারখানার বর্জ্যে মরছে নদ

ডাইং কারখানার বর্জ্যে মরছে ব্রহ্মপুত্র নদ। প্রকাশ্যে এ দূষণ ঘটলেও দেখার কেউ নেই। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ ভুক্তভোগীদের। পরিবেশ কর্মকর্তা চাইছেন সুনির্দিষ্ট প্রমাণসহ অভিযোগ।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও নরসিংদী সদর উপজেলায় অন্তত ৬০টি ডাইং কারখানা ব্রহ্মপুত্র দূষণের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। নদের তীরে অবস্থিত এসব কারখানায় এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) থাকলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই প্রতিদিন নদে ফেলছে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এ নদের সঙ্গে সম্পর্কিত মানুষজন।
অভিযোগ রয়েছে, নদের তীরে অবস্থিত কারখানাগুলো ইটিপি রাখলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ফেলছে। অনেক কারখানায় ইটিপি থাকলেও খরচ কমাতে বেশির ভাগ সময় তা বন্ধ রাখা হয়। এ ছাড়া বেশকিছু কারখানার ইটিপি প্রয়োজনের তুলনায় ছোট হওয়ায় সঠিকভাবে বর্জ্য পরিশোধন করা সম্ভব হয় না।
পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, নরসিংদী সদর উপজেলায় রয়েছে ছোট-বড় ৫০টি ডাইং কারখানা। আড়াইহাজারে স্পিনিং মিলসহ ডাইং কারখানা রয়েছে অন্তত ১০টি। নরসিংদীর ডাইং কারখানাগুলোর মধ্যে পাঁচদোনা এলাকার আবদুল্লাহ ডাইং ইন্ডাস্ট্রিজ, বাঘহাটা এলাকার ফাইভ অ্যান্ড ফাইভ ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং, সাজেদা ডাইং, আনোয়ার ডাইং, শতরূপা ডাইং, রুকু ডাইং, মেসার্স একতা ডাইং, কুড়েরপাড় এলাকার ব্রাদার্স টেক্সটাইল, ইভা ডাইং, ভগীরথপুর এলাকার এম এমকে ডাইং, নীলা ডাইং, এইচ এম ডাইং, মা সখিনা টেক্সটাইল, মুক্তাদিন ডাইং, পাঁচদোনা এলাকার তানিয়া ডাইং, সান ফ্লাওয়ার টেক্সটাইল প্রভৃতি।
আড়াইহাজারের কয়েকটি কারখানা হলো– ভাই ভাই স্পিনিং মিলস, ছাবেদ আলী স্পিনিং মিল, রফিকুল ডাইং, দিপু ডাইং ও হাজী হাবিবুর ডাইং।
আড়াইহাজার পৌরসভার চামুরকান্দি এলাকার বাসিন্দা মিয়াজউদ্দিন মিয়া বলেন, দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে নদটি। দেশীয় জাতের মাছের অভয়াশ্রম এ নদ থেকে মাছ হারিয়ে গেছে।
আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার ইসমাইল হোসেন জানান, রফিকুল ডাইংয়ের বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে পানির রং কালচে হয়ে গেছে। একই অবস্থা অন্য কারখানাগুলোর। বর্জ্য নদে ফেলার বিষয়ে স্থানীয়রা কথা বলতে গিয়ে উল্টো কারখানা কর্তৃপক্ষের হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
রফিকুল ডাইংয়ের মালিক রফিকুল ইসলাম জানান, তাদের ইটিপি নেই। ডাইংয়ের পানি তারা নির্দিষ্ট পানির ট্যাংকে রাখেন, সরাসরি নদে ফেলেন না। ট্যাংকে জমানো পানি কোথায় ফেলেন জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী সদর উপজেলার শিলমান্দী ইউনিয়নের গনেরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মাহবুব হাসান শুভর ভাষ্য, কুড়েরপাড় এলাকার ডাইং কারখানাগুলোর রং মেশানো বর্জ্য পরিশোধন না করে ব্রহ্মপুত্রে ফেলায় নদটি এখন মৃতপ্রায়। দূষণের কারণে দুর্গন্ধে এর পারে দাঁড়ানো যায় না। স্থানীয়রা অনেকবার প্রতিবাদ করেও প্রতিকার পাননি বলে জানান তিনি।
গত ১৫ এপ্রিল শিলমান্দী ইউনিয়নের কুড়েরপাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ইভা ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং লিমিটেড নামে একটি কারখানা থেকে বর্জ্য এসে পড়ছে নদের পানিতে। ভিডিও করতে দেখে কারখানা কর্তৃপক্ষ বর্জ্য ফেলা বন্ধ করে দেয়।
ইভা ডাইংয়ের ইটিপি ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, বিভিন্ন মহলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে তারা প্রতিষ্ঠানটি চালাচ্ছেন। অনেক কারখানা সরাসরি নদে বর্জ্য ফেললেও তারা নদ দূষণ করেন না। 
একই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফাতেমা ডাইংসহ ব্রহ্মপুত্রের তীরে গড়ে ওঠা কারখানাগুলো থেকেও নদে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। কিন্তু এ নিয়ে এসব কারখানার কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপসহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান জানান, নদে বর্জ্য ফেলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারেক বাবু জানান, ব্রহ্মপুত্রে নদে সরাসরি বর্জ্য ফেলছে ডাইংসহ যেসব কারখানা সেসবের অধিকাংশই নরসিংদী জেলার অন্তর্গত। তাই নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে নদ দূষণমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
আড়াইহাজারের ইউএনও সাজ্জাত হোসেন বলেন, কখনও কখনও কিছু কারখানা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ছেড়ে দেয়। কোন কারখানা নদ দূষণ করছে, স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশবাদী সংগঠন তা জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিস চালু হচ্ছে ১০ মাস পর
  • অটোরিকশার ধাক্কায় ছিটকে বাসের নিচে, দুই বন্ধু নিহত
  • আজমির ওসমান বাহিনীর অন্যতম ক্যাডার মাসুম প্রকাশ্যে. আতঙ্ক
  • মে দিবসের সমাবেশকে সফল করতে মহানগর বিএনপির মতবিনিময় সভা 
  • নারায়ণগঞ্জে বালক (অনূর্ধ্ব-১৫) ফুটবল প্রতিযোগিতা ও প্রশিক্ষণের উদ্বোধন
  • নারায়ণগঞ্জে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে তরুণের মৃত্যু
  • নারায়ণগঞ্জের কদম রসুল সেতুর সংযোগ সড়কের প্রবেশমুখ পুনর্নির্ধারণের দাবিতে স্মারকলিপি
  • জেলা প্রশাসককে ২৪’র শহীদদের স্মারক দিল জামায়াত
  • কমিউনিষ্ট পার্টির হাফিজের বিরুদ্ধে ইসমাইলের সংবাদ সম্মেলন
  • কারখানার বর্জ্যে মরছে নদ