মাসদাইরে আরাফাত রহমান স্মৃতি ক্রিকেট টুর্নামেন্টের পুরস্কার বিতরণ
Published: 28th, February 2025 GMT
প্রয়াত ক্রীড়া সংগঠক আরাফাত রহমান কোকো স্মরণে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে মাসদাইর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে আয়োজিত ফাইনাল খেলায় মাসদাইর তরুণ সংঘ ২৮ রানে আলফা মার্ট'কে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। চ্যাম্পিয়ন দলকে ২০ হাজার টাকা প্রাইজ মানি এবং রানার্সআপ দলকে ১০০০০ হাজার টাকা প্রাইজ মানি উপহার দেয়া হয়।
নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এইচএম আনোয়ার প্রধানের উদ্যোগে এবং ১৩ নং ওয়ার্ড বিএনপি'র সভাপতি এডভোকেট শেখ আঞ্জুম আহমেদ রিফাতের সার্বিক তত্ত্বাবধানে আয়োজিত টুর্নামেন্টে মোট ১২ টি দল অংশগ্রহণ করে।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, আজকে একটি সফল টূনামেন্টের পরিসমাপ্তি ঘটলো। প্রায় দুই মাস আগে আমরা এই মাঠে এই টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেছিলাম। পুরো টুর্নামেন্ট শেষ করে আজ ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিএনপি'র প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কনিষ্ঠপুত্র বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকো স্মরণে এতো সুন্দর একটি টুর্নামেন্ট আয়োজন করায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে আয়োজকদের প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন জানাচ্ছি । এখন থেকেই প্রতিবছর এই আয়োজন করা হবে যেনো কোমলমতি শিশু কিশোর যুব সমাজ মাদক এবং কিশোর গ্যাং থেকে মুক্ত থাকতে পারে।
এডভোকেট সাখাওয়াত বলেন, যার নামে টূর্নামেন্ট সেই আরাফাত রহমান কোকো'কে অত্যাচার করে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা হত্যা করেছে। শহীদ আরাফাত রহমান কোকো কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তিনি ছিলেন একজন ক্রীড়া সংগঠ বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন। ক্রিকেট, ফুটবল থেকে শুরু করে ক্রিড়া ক্ষেত্রের সবগুলো বিভাগে তিনি উন্নতি করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
তিনি আরো বলেন, খেলাধুলাকে রাজনীতির মধ্যে ঢুকিয়ে খেলোয়ারদেরকে ধ্বংষ করা হয়েছে। সাকিব আল হাসান, মাশরাফিদের সুন্দর ক্রিকেট ক্যারিয়ার গুলো ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে তাদেরকে রাজনীতির সাথে জড়িত করে। করে। তাই আমি বলতে চাই, খেলাধুলাকে রাজনীতির উর্ধ্বে রাখুন।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, মরহুম আরাফাত রহমান কোকো ছিলেন স্বাধীনতার মহান ঘোষক বীর মুক্তিযোদ্ধা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার আদরের ছোট ছেলে। রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নিও তিনি রাজনীতিবিদ হতে চান নি। তিনি খেলাধুলাকে ভালোবেসে ছিলেন। খেলাধুলাকে ভালোবেসে তিনি ক্রীড়াঙ্গনে উন্নয়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন।
তিনি আরো বলেন, আজকে এই প্রয়াত নেতার স্মরণে ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলায় যারা বিজয়ী হয়েছো এবং যারা বিজয়ী হতে পারোনি, উভয় দলকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
সেই সাথে আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি তরুণ এবং যুব সমাজকে খেলাধুলায় ফিরিয়ে আনার জন্য কারণ যত বেশি খেলাধুলার আয়োজন করা যাবে সুন্দর করে মাদক মুক্ত সমাজ গঠন করা যাবে। আগামী প্রজন্মকে মাদক থেকে মুক্ত রাখতে হলে এ ধরনের খেলাধুলার আয়োজন নিয়মিত চালিয়ে যেতে হবে।
নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এইচএম আনোয়ার প্রধানের সভাপতিত্বে এবং ১৩ নং ওয়ার্ড বিএনপি'র সভাপতি এডভোকেট শেখ আঞ্জুম আহমেদ রিফাতের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির সভাপতি মাসুদ রানা, জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী রহিমা শরীফ মায়া, মহানগর মহিলা দলের সভানেত্রী দিলারা মাসুদ ময়না, সদর থানা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ সেলিম আহমেদ, আলমগীর খান চঞ্চল, ১৩ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হিরা সরদার, ১৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আল আরিফ, ১৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পলাশ প্রধান, নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট আসমা হেলেন বিথী, সাবেক কার্যকরী সদস্য এডভোকেট আদনান মোল্লা, এডভোকেট সুইটি রহমানসহ ক্রীড়ামোদী সাধারণ মানুষ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ আর ফ ত রহম ন ক ক ফ ইন ল খ ল র ব এনপ র র জন ত র এডভ ক ট সদর থ ন অন ষ ঠ
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি খাল দখল করে চাঁদাবাজি!
সিদ্ধিরগঞ্জের হীরার্ঝিল আবাসিক এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি (ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা) খাল দখল করে দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে। এর ফলে ডিএনডি খালটি ফের সংকুচিত হতে শুরু করেছে। পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা।
এদিকে এই এলাকাটি শিমরাইল পাম্প স্টেশনের নিকটবর্তী এলাকা হওয়ায় দোকানগুলোর কারণে ঠিকমতোন পানি সরবরাহ হতে পারছে না। তবে প্রশাসনের ভাষ্য, খুব শিগগিরই এখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে নাসিক ১নং ওয়ার্ডের হীরাঝিল আবাসিক এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বালু খালপাড় দখল করে হরেক রকমের ছোট-বড় প্রায় ২৫টি দোকান বসানো হয়েছে। হাবিবুল্লাহ হবুলের মালিকানাধীন হাবিবুল্লাহ টাওয়ার থেকে শুরু করে মোক্তার হোসেন সরকারের মালিকানাধীন বিএম ভবন, সিদ্দিকুর রহমানের মালিকানাধীন মমতাজ ভিলা, নূর মোহাম্মদ টাওয়ার, নুরুল হুদা’র বাড়ির সামনে এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।
এর বিনিময়ে প্রতি দোকান থেকে টাকা তুলছেন স্ব স্ব বাড়ির মালিকরা। চাঁদা তোলার বিষয়টি কয়েকজন বাড়িওয়ালা অকপটে স্বীকারও করেছেন।
এদিকে, দোকানগুলোর কারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নির্মিত ওয়াকওয়ে দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে পথচারীদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। পাশাপাশি হীরাঝিল এলাকাবাসীকেও ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, হীরাঝিল আবাসিক এলাকা একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। যানবাহন ও মানুষের চাপ বেশি থাকায় এই এলাকায় সবসময় যানজট লেগেই থাকে। চলাচলের সুবিধার্তে এলাকাবাসী ডিএনডি খালের পাড় দিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যস্থলে যেতেন। কিন্তু কয়েকজন বাড়িওয়ালা এহেন কর্মকান্ডের কারণে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন।
এসব দোকানের কারণে খালের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পানি নিষ্কাশন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং চাঁদাবাজি প্রশাসন বন্ধ করতে না পারলে আগামীতে ফের বন্যা হওয়ার শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। তাই এ বিষয়ে প্রশাসনের দ্রুত প্রদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ‘কাবাব বাড়ি’ ভবনের মালিক মো. রফিক বলেন, আমার বাড়ির সামনে ডিএনডি খাল দখল করে আমি কোনো দোকান বসাই নি। আমি নিজেও চাই এখানে কোনো দোকান না বসুক। কিন্তু আমি যতটুকু শুনেছি টিএইচ তোফা নামের এক ব্যক্তি এই দোকানগুলো বসিয়েছেন। আমি অনেক চেষ্টা করেছে দোকানগুলো সরিয়ে দেওয়ার। আর এখানে দোকান বসিয়ে টাকা তোলার প্রশ্নই উঠে না।
একই অভিযোগ স্বীকার করে মমতাজ ভিলার মালিক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, অন্যসবাই দোকান বসিয়েছে। আমি তা দেখাদেখি ২টি দোকান বসিয়েছি। এটা আমার অপরাধ হয়েছে তা আমি নিজেও বুঝি। আমি মূলত সবার দেখাদেখি দোকান বসিয়েছি।
নুরুল হুদা নামের আরেক বাড়িওয়ালা বলেন, আমি দোকান বসিয়েছি। কিন্তু ওইখান থেকে কোনো অর্থ আদায় করি না। চাইলে এ বিষয়ে তদন্ত করা হতে পারে। আর এখানে দীর্ঘদিন ধরেই দোকান ছিল।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনূর আলম বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়টি আমাদের জানা নেই। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নারায়ণগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুভ আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। তবে অভিযোগ যেহেতু পেয়েছি তাহলে অবশ্যই ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হবে। ডিএনডি খালপাড় থেকে স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রথমে আমরা একাধিকবার তাদের নোটিশ পাঠাবো।
যদি তারা কথা না শোনেন তাহলে আইন অনুযায়ী উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। খাল দখলের বিরুদ্ধে আমরা সবসময় জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন খাল পরিষ্কার করা শুরু করেছি। ডিএনডি খালসহ যেকোনো খাল এভাবে দখল হয়ে থাকলে দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি শিগগিরই এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ৮ ডিসেম্বর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নে ডিএনডি প্রকল্প হাতে নেয় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শুরুতে প্রকল্পের বাজেট ৫৫৮ কোটি টাকা ধরা হলেও তা বাস্তবায়নে সবমোট ১৩০০ কোটি টাকা খরচ হয়।
২০২৫ সালের জুন মাসে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর প্রকল্প বাস্তবায়ন করাকালে তখন খালটি দখল না হলেও প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর পরই হীরাঝিল এলাকার কয়েকজন বাড়িওয়ালা ডিএনডি খাল দখল করে দোকান বসানো শুরু করে।