হবিগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামে করা ছাত্র সংগঠনের নবগঠিত জেলা কমিটি অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন সংগঠনেরই একাংশের সদস্যরা। গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হবিগঞ্জ প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তারা এই ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের একাংশের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি অরাজনৈতিক সংগঠন হলেও নবগঠিত কমিটিতে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির ও ছাত্র অধিকারের সক্রিয় নেতাদের স্থান দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কমিটি গঠন ও অনুমোদন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা রক্ষা করা হয়নি। এ সময় তারা কেন্দ্রীয় পর্যায়ের সমন্বয়ক হাসিবের বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে কমিটির অনুমোদন দেওয়ার অভিযোগও তোলেন।
সংগঠনের অভিযোগকারী অংশের সদস্যদের দাবি, জুলাই বিপ্লবে নিবেদিতভাবে কাজ করা প্রকৃত ত্যাগী ও লড়াকু শিক্ষার্থীদের উপেক্ষা করে পক্ষপাতমূলক একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। যেখানে নিবেদিত সদস্যদের মূল্যায়ণ করা হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের হবিগঞ্জ জেলা শাখার প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক সাকিব। তিনি বলেন, সংগঠনের ৪০ জন সক্রিয় সদস্য এই কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যদি বিতর্কিত কমিটি বিলুপ্ত না করা হয়, তাহলে তারা কঠোর আন্দোলনে যাবেন।
এ সময় উপস্থিত নেতাকর্মীরা বিভিন্ন দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন এবং কেন্দ্রীয় সমন্বয়কের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, নতুন কমিটি ঘোষণার পর থেকেই সংগঠনের একাংশের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে হবিগঞ্জ শহরে ঝাড়ু মিছিল বের হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন নবগঠিত জেলা কমিটির একাধিক সদস্য।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স গঠন র নবগঠ ত সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।

ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে। 

আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন। 

আরো পড়ুন:

ভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্নের ঘোষণা ট্রাম্পের

ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন। 

অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। 

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।

ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”

প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।

মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”

তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”

মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলি অভিযান সমর্থন করেছিলেন।

গ্যালাপের মতে, মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন দিয়েছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ