নবগঠিত কমিটি অবাঞ্ছিত ঘোষণা একাংশের
Published: 28th, February 2025 GMT
হবিগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামে করা ছাত্র সংগঠনের নবগঠিত জেলা কমিটি অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন সংগঠনেরই একাংশের সদস্যরা। গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হবিগঞ্জ প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তারা এই ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের একাংশের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি অরাজনৈতিক সংগঠন হলেও নবগঠিত কমিটিতে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির ও ছাত্র অধিকারের সক্রিয় নেতাদের স্থান দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কমিটি গঠন ও অনুমোদন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা রক্ষা করা হয়নি। এ সময় তারা কেন্দ্রীয় পর্যায়ের সমন্বয়ক হাসিবের বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে কমিটির অনুমোদন দেওয়ার অভিযোগও তোলেন।
সংগঠনের অভিযোগকারী অংশের সদস্যদের দাবি, জুলাই বিপ্লবে নিবেদিতভাবে কাজ করা প্রকৃত ত্যাগী ও লড়াকু শিক্ষার্থীদের উপেক্ষা করে পক্ষপাতমূলক একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। যেখানে নিবেদিত সদস্যদের মূল্যায়ণ করা হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের হবিগঞ্জ জেলা শাখার প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক সাকিব। তিনি বলেন, সংগঠনের ৪০ জন সক্রিয় সদস্য এই কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যদি বিতর্কিত কমিটি বিলুপ্ত না করা হয়, তাহলে তারা কঠোর আন্দোলনে যাবেন।
এ সময় উপস্থিত নেতাকর্মীরা বিভিন্ন দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন এবং কেন্দ্রীয় সমন্বয়কের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, নতুন কমিটি ঘোষণার পর থেকেই সংগঠনের একাংশের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে হবিগঞ্জ শহরে ঝাড়ু মিছিল বের হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন নবগঠিত জেলা কমিটির একাধিক সদস্য।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স গঠন র নবগঠ ত সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
শুধু ঘোষণা নয়, বাস্তবে প্রতিফলিত হোক
রাজধানী শহরসহ দেশের বড় শহরগুলোয় শব্দদূষণের অসহনীয় মাত্রার বিষয়টি কারও অজানা নয়। এটি এখন শুধু শব্দদূষণ নয়, শব্দসন্ত্রাস বলেও অভিহিত হচ্ছে। অতীতে ও বর্তমানে সরকারগুলো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও কার্যকর হচ্ছে না। অতীতের ধারাবাহিকতায় রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী, বারিধারা ও নিকেতনকে ‘নীরব এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সিদ্ধান্তটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। এখন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাই হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ।
শহরের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নীরব এলাকা ঘোষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি অবশ্যই সরকারের সদিচ্ছার প্রকাশ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই ঘোষণা বাস্তবে কার্যকর হবে, নাকি এটিও অতীতের মতো কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে? এর আগে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং এর আশপাশের এলাকাকে নীরব এলাকা ঘোষণা করা হয়েছিল, কিন্তু তার ফল তেমন একটা ভালো পাওয়া
যায়নি। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঘোষণার পর কিছু এলাকায় শব্দ কিছুটা কমলেও সার্বিকভাবে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। এই অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, শুধু ঘোষণা যথেষ্ট নয়, বরং এর কঠোর বাস্তবায়ন অপরিহার্য।
শব্দদূষণের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলতেই হয়। যার কারণে সাউন্ডবক্স বা মাইক বাজানোর বিষয়গুলো তুলনামূলকভাবে কমে এসেছে। তবে গাড়ির হর্ন এতটা বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করছে, যা অকল্পনীয়। এটিই এখন রাজধানীসহ বড় শহরগুলোর শব্দদূষণের সবচেয়ে বড় আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অতিরিক্ত শব্দ হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এটিতে শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়, মেজাজ খিটখিটে হয়, মানুষ অনিদ্রায় ভোগে এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটায়। তাই শুধু অভিজাত এলাকা নয়, পুরো শহরে ধাপে ধাপে কীভাবে নীরব এলাকা ঘোষণা করা যায়, সেই লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে এগোতে হবে।
তবে এ উদ্যোগ সফল করতে হলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কঠোর হতে হবে। হর্ন বাজানোর বিরুদ্ধে আইন আছে। তা যদি আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে প্রয়োগ না করা হয়, এ ঘোষণা কখনোই সফল হবে না। কেবল প্রশাসনের ওপর নির্ভর না করে নীরব এলাকা–ঘোষিত এলাকাগুলোর বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যেমন মসজিদ, মন্দির এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেও এখানে গণসচেতনতার কাজে যুক্ত করতে হবে।
গাড়ির হর্ন বাজানো সীমিত করতে পরিবহনের বিভিন্ন ধরনের সমিতি–সংগঠনগুলোর যুক্ততাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। গাড়ির চালকদের অভ্যাসগত পরিবর্তনের জন্য শব্দদূষণের ক্ষতিকর দিকটি নিয়মিতভাবে তাঁদের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। হাইড্রোলিক হর্নসহ উচ্চমাত্রার যেকোনো হর্ন উৎপাদন, আমদানি ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। এ ব্যাপারে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।