ধামরাইয়ে বিস্ফোরণে বাসভবনের নিচতলা চূর্ণবিচূর্ণ, দম্পতি দগ্ধ
Published: 1st, March 2025 GMT
ঢাকার ধামরাইয়ে গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে বাসভবনের নিচতলা চূর্ণবিচূর্ণ হয়েছে। এতে দগ্ধ হয়েছে আসিফ (২৪) ও শান্তা (২১) নামের এক দম্পতি। তাদের ঢাকার জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে ১২ টার দিকে ধামরাই পৌরসভার কুমড়াইল এলাকায় কুববাত হোসেন নামে এক ব্যক্তির ভাড়া বাসায় নিচতলায় একটি কক্ষে এ বিস্ফোরণ ঘটে।
দগ্ধ আসিফ টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার বাসিন্দা । স্ত্রী শান্তাকে নিয়ে তারা ধামরাইয়ের কুমড়াইলে ভাড়া বাসায় থাকতেন। আসিফ পেশায় একজন রিকশাচালক ও তার স্ত্রী শান্তা একটি কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন।
ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রাত পৌনে ১২ টার দিকে হঠাৎ বিকট আওয়াজে দুই তলা ভবনের নিচতলার একটি কক্ষে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ সময় কক্ষটিতে আগুন লেগে যায়। কিছুক্ষণ পর কক্ষটি থেকে দগ্ধ ওই দম্পতি বেরিয়ে আসেন। তাদের শরীরের বেশিরভাগ অংশ ঝলসানো দেখা যায়। পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
বিস্ফোরণে বাসভবনের নিচতলা চূর্ণবিচূর্ণ হলেও সিলিন্ডারটি অক্ষত
প্রাথমিকভাবে জানা যায়, বাড়িটিতে তিতাসের গ্যাস থাকলেও ওই দম্পতি কক্ষে সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করতেন। সিলিন্ডারটি অক্ষত পাওয়া গেলেও গ্যাস পরিবাহী পাইপ পোড়া দেখা গেছে। বিস্ফোরণে আশপাশের কয়েকটি কক্ষও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ফায়ার সার্ভিসের ধারণা, লিকেজ থেকে জমে থাকা গ্যাস আগুনের সংস্পর্শে এসে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতে পারে।
একই বাড়ির অপর ভাড়াটিয়া রজ্জব আলী বলেন, “রাত পৌনে ১২ টার দিকে বিকট আওয়াজ হয়। শব্দ শুনে এসে আগুন দেখি। তারপর আগুন নেভাই। দেখি একজন নারী, একজন পুরুষ বেরিয়ে এসেছেন। তাদের শরীর ঝলসে গেছে। তাদের রিকশায় করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। শুনেছি গ্যাস বিস্ফোরণে আগুন লাগে।”
সজিব হোসেন নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “রাতে শব্দ শোনার সঙ্গে সঙ্গে আসি। এসে ধোঁয়া দেখি। ঘরের দরজা খুলে স্ত্রী প্রথম বেরিয়ে আসেন, পোড়া অবস্থায়। চুল পুড়ে গেছে। বেরিয়ে পড়ে যাচ্ছিল। পাশের কক্ষ থেকে একজন বেরিয়ে তাকে ধরে। এরপর তার স্বামীও বের হয়। মাথার সব চুল পুড়ে গেছে। চামড়া ঝলসে গেছে। পরবর্তীতে আশপাশের লোকজন এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে।”
ধামরাই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামীম বলেন, “ঘটনাস্থলে এসে দেখি ঘরবাড়ি ভাঙা। দগ্ধদের পাইনি। দগ্ধ শান্তা ও আসিফ টাঙ্গাইল মির্জাপুর উপজেলার বাসিন্দা। প্রাথমিকভাবে জানা যায়, গ্যাস থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।”
ধামরাই ফায়ার সার্ভিসের লিডার জহিরুল ইসলাম বলেন, “এখানে স্বামী-স্ত্রী দুইজন আহত হয়েছেন। তাদের ঢাকার বার্ন ইউনিটে নেওয়া হয়েছে। সিলিন্ডার অক্ষত অবস্থায় রয়েছে।”
ঢাকা/সাব্বির/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতির মেয়ে
ফরিদপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর কমিটি গঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহ্মুদা বেগমের মেয়ে সৈয়দা নীলিমা দোলা।গত মঙ্গলবার এনসিপির সদস্যসচিব আক্তার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ওই চিঠিতে ফরিদপুর অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক করা হয়েছে মো. আব্দিুর রহমানকে এবং সংগঠক করা হয়েছে মো. রাকিব হোসেনকে।
এছাড়া ফরিদপুর অঞ্চলের পাঁচটি জেলা, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী জেলার দু’জন করে ব্যক্তিকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ফরিদপুর জেলার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে যে দু’জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাদের একজন হলেন সৈয়দা নীলিমা দোলা। তিনি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহ্মুদা বেগমের মেয়ে এবং জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোহাম্মদ নাসিরের ভাগনি। দোলার বাবা সৈয়দ গোলাম দস্তগীর পেশায় ব্যবসায়ী।
সৈয়দা নীলিমা ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংগীত বিভাগে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি কিছুদিন একটি মোবাইল ফোন কোম্পানিতে চাকরি করেন। বর্তমানে ‘সিনে কার্টেল’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী।
এ বিষয়ে সৈয়দা নীলিমা দোলা বলেন, ‘আমার পরিবারের সদস্যদের আওয়ামী রাজনীতি করা সংক্রান্ত কিছু পোস্ট আপনাদের সামনে আসতে পারে। আমি নিজে এর একটা ব্যাখ্যা রাজপথের সহযোদ্ধাদের দিয়ে রাখতে চাই। আমি ১০ বছর ধরে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন করছি। নো মেট্রো অন ডিইউ মুভমেন্ট, রামপাল বিরোধী আন্দোলন, ডিএসএ বাতিলের আন্দোলন, সুফিয়া কামাল হলকে ছাত্রলীগ মুক্ত করাসহ অন্যান্য সকল আন্দোলনে আমি পরিচিত মুখ। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমার লেখালেখিও পুরনো। ২০১২ সালে পরিবার ছাড়ার পর রাজপথই আমার আসল পরিবার। জুলাইয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অন্যতম মামলা তাহির জামান প্রিয় হত্যা মামলার একজন প্রত্যক্ষদর্শী আমি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরাসরি ছাত্রলীগ করে অনেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন। আমি কখনও ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না, তাই আমার নাগরিক কমিটির সদস্য হতে বাধা কোথায়? এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা জেনে-বুঝে এবং আমি ‘লিটমাস’ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরই আমাকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করা হয়েছে।’
আওয়ামী লীগ নেত্রীর মেয়ে দায়িত্ব পেয়েছেন জেলার এনসিপি কমিটি গঠনে-এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব সোহেল রানা বলেন, ‘তার (সৈয়দা নীলিমা) পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড আওয়ামী লীগ। আমরা দেখেছি, গত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে তার মামা গোলাম নাসির কিভাবে আমাদের ওপর নির্বিচার গুলি ছুড়েছিল। তার মায়ের কর্মকাণ্ডও আমাদের অজানা নয়।’
সৈয়দা নীলিমা দোলার সঙ্গে আমাদের পরিচয় পর্যন্ত নেই মন্তব্য করে সোহেল রানা বলেন, ‘আসলে দায়িত্ব দেওয়ার আগে সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে নেওয়া হলে ভাল হতো। যাচাই-বাছাই করা হলে এ রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।’