রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল চট্টগ্রামে বিল-ভাউচার ছাড়া ১০ লাখ টাকার ভুয়া ভ্রমণ বিল আত্মসাতের অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালিয়েছে দুদক। 

রোববার দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর সহকারী পরিচালক সায়েদ আলমের নেতৃত্বে একটি দল অভিযান চালায়। এসময় তারা রেলওয়ের বিভাগীয় বাণিজ্যিক ম্যানেজারের কার্যালয় ও অডিট কার্যালয়ের নথিপত্র যাচাই-বাছাই করে দেখেন।

দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর উপ-পরিচালক সুবেল আহমেদ বলেন, বিল ভাউচার ছাড়া অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পেয়ে দুদকের একটি টিম অভিযান চালিয়েছে। টিমের সদস্যরা আর্থিক অনিয়মের যাবতীয় নথিপত্র পর্যালোচনা করছেন। সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রেলের পরিবহন অডিট অধিদপ্তরের অডিটে ভ্রমণ বিলে এ ধরনের অসঙ্গতি ধরা পড়ে। এ ঘটনায় বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তাকে (ডিসিও) জানানো হলেও বিল-ভাউচার খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ ওঠে।

গত বছরের ১ ডিসেম্বর ডিসিও বরাবরে অডিট মেমো দিয়ে বিল-ভাউচার ছাড়া ভ্রমণ ব্যয় তোলার বিষয়টি জানানো হয়। অডিট মেমোতে উল্লেখ করা হয়, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে বিল-ভাউচার ছাড়াই ভ্রমণ বিল বাবদ ১০ লাখ ৫৮ হাজার ৮৬৮ টাকা তুলে নেওয়া। এতে সরকারের ১০ লাখ ৫৬ হাজার ৮৬৮ টাকা ক্ষতি হয়েছে। 

যদিও চট্টগ্রাম বিভাগের অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান হিসাব অধিকর্তা (ডিএফএ) সুগ্রীব চাকমা বলেন, এটি ভুয়া অভিযোগ। হিসাব বিভাগে এরকম কোনো ঘটনায় ঘটেনি। আমি এরকম কোনো তথ্য পাইনি। হিসাব বিভাগ থেকে এরকম কোনো বিল পাশ হয়নি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ভ রমণ ব

এছাড়াও পড়ুন:

নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।

মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।

এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।  

প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।  কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।

মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।

নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ