বাংলার মাটিতে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার ফাঁসি কার্যকর দেখতে চেয়েছেন জুলাই আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়েও মৃত্যুর কোল থেকে ফিরে আসা তরুণ রিকশাচালক ও রায়েরবাগের বাসিন্দা সাকিব।

তিনি বলেছেন, “বাংলার ছাত্রজনতার একটাই দাবি, বাংলার মাটিতে যেন শেখ হাসিনার বিচার হয়। আমরা যেন তার ফাঁসি কার্যকর দেখতে পাই।”

মঙ্গলবার (৪ মার্চ) ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে ২০ দিন ধরে চলমান ছাত্রজনতার গণঅবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। 

আরো পড়ুন:

বাংলাদেশের তরুণদের কাছে সারাবিশ্ব পরিবর্তনের শিক্ষা নিয়েছে: হারমান বেঞ্জামিন

শেষ হলো ঢাবি শিক্ষকদের ১৫ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা

তিনি বলেন, “ছাত্র ভাইয়েরা কেউ শেখ হাসিনার কথা শুনবেন না। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না করে কেউ ঘরে ফিরবেন না। যদি আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে ফিরতে পারে, তাহলে জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের লিস্ট দেখে আমাদের সব আহতদের শাস্তি দেবে।”

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ফ্যাসিবাদী দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ও মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোকে নিষিদ্ধসহ ৫ দফা দাবিতে রাজু ভাস্কর্যের চলমান গণঅবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়।

মঙ্গলবার ছিল কর্মসূচির ২০তম দিন। এদিন গণঅবস্থানের সংগঠকরা অভিযোগ করেন, প্রচণ্ড রোদের মধ্যে লাগাতার অবস্থান চললেও অন্তর্বর্তী সরকার ও প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো এ কর্মসূচিকে অবহেলা করছে। এর মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদ বিলোপের দাবিকে জনপরিসরে কোণঠাসা করে ফেলা হচ্ছে।

সংগঠক ও বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, “ফ্যাসিবাদী দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ও মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোকে নিষিদ্ধের দাবিতে আমরা প্রধান উপদেষ্টা ড.

মুহাম্মদ ইউনূসকে তার কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু সরকার আমাদের কোন জবাব দেয়নি। সার্বিক পরিস্থিতিতে স্পষ্ট যে, সরকার আমাদের অবস্থান কর্মসূচিকে অবহেলা করে আসছে।”

বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের সদস্য সচিব ফজলুর রহমান বলেন, “প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে কোন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে তারা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিরোধী। তাই তারা আমাদের উপেক্ষা করছে।”

গণঅবস্থানে অংশ নিয়ে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইয়েদ কুতুব বলেন, “ফ্যাসিবাদ দলগুলোকে নিষিদ্ধে সরকারের নিষ্ক্রিয়তার কারণে পালিয়ে থাকা ফ্যাসিস্ট খুনী সন্ত্রাসীরা সগৌরবে প্রকাশ্যে ফিরে এসে হত্যাসহ গুরুতর অপরাধে লিপ্ত হচ্ছে। ফলে সারা দেশ ক্রমাগত অরাজক পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। কিন্তু সরকার সমস্যার প্রকৃত সমাধান না করে লোক দেখানো পুলিশি অভিযান চালিয়ে পরিস্থিতি ধামাচাপা দিতে বৃথা চেষ্টা করছে।”

এর আগে, গত রবিবারও (২ মার্চ) গণঅবস্থানে সকাল ৯টা থেকে অংশ নিয়েছিলেন গণঅভ্যুত্থানে আহত রিকশাচালক মো. মোবারক ও মুখলেছ।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণঅবস থ ন আম দ র সরক র আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

উন্নয়ন বৈষম্যের প্রতিবাদে সিলেটবাসীর গণঅবস্থান

সিলেটের উন্নয়ন খাতে বৈষম্য ও বঞ্চনার প্রতিবাদে নগরীর কোর্ট পয়েন্টে অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করেছে সিলেটবাসী। 

রবিবার (২ নভেম্বর) সকাল ১০টা থেকে বিকেল পর্যন্ত চলা এ কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী।

আরো পড়ুন:

জুলাই সনদ জনগণের নয়, কিছু উপদেষ্টার প্রয়োজন: হাফিজ

রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি মামুন, সম্পাদক রিটন

অবস্থান ধর্মঘট চলাকালে সিসিকের পানির গাড়ি কোর্ট পয়েন্টের একটি অংশে রেখে সড়ক অবরোধ করে রাখা হয়। ফলে কিছু সময়ের জন্য যান চলাচল বন্ধ থাকে। তবে পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের সমন্বয়ে পরিস্থিতি পরে স্বাভাবিক হয়।

অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য দিতে গিয়ে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘‘উন্নয়ন বঞ্চিত সিলেট বরাবরই উপেক্ষিত। সরকার দেশের অন্য বিভাগে যে পরিমাণ বরাদ্দ দিচ্ছে, সেই অনুপাতে সিলেটকে দেওয়া হচ্ছে না। আমরা বারবার দাবি জানিয়েছি, কিন্তু কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তাই এবার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে গণঅবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছি।’’

তিনি বলেন, ‘‘আমরা কোনো দলীয় স্বার্থে নয়, সিলেটের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নেমেছি। এটা সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক গণআন্দোলন। উন্নয়ন বৈষম্যের অবসান না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। প্রয়োজনে আমরা বিছানা নিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের বাসভবনের সামনে অবস্থান করব, যতক্ষণ না তারা আমাদের কথা শোনে।’’

তিনি উপস্থিত জনতাকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান।

শনিবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় হজরত শাহজালালের (রহ.) দরগাহ এলাকা থেকে শুরু হয় ‘সিলেট আন্দোলনের’ মশাল মিছিল। মিছিলটি দরগাহ গেট, জিন্দাবাজার, কোর্ট পয়েন্ট, চৌহাট্টাসহ নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। 

মশাল মিছিলে কয়েকশত নেতাকর্মী অংশ নেয়। তাদের হাতে ছিল ব্যানার, প্ল্যাকার্ড ও পোস্টার; যাতে ‘উন্নয়ন চাই, বৈষম্য নয়’, ‘সিলেটের প্রাপ্য, ফেরত দাও’ ইত্যাদি স্লোগান লেখা ছিল।

গত বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাতে নগরীর কুমারপাড়া এলাকার নিজ বাসভবনে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন আরিফুল হক চৌধুরী। সভায় ‘সিলেট আন্দোলন’ নামে সর্বজনীন নাগরিক প্ল্যাটফর্ম গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়। এই প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হয়েছেন সিলেটের রাজনীতিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, আইনজীবী, পরিবহন মালিক-শ্রমিক ও ধর্মীয় সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

তাদের দাবি, সিলেটের অবহেলিত অবকাঠামো উন্নয়ন, রেলপথ সংস্কার, বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা জোরদার ও বিভাগীয় পর্যায়ে সরকারি বরাদ্দে ন্যায্য অংশ নিশ্চিত করা। 

ঢাকা/নুর/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উন্নয়ন বৈষম্যের প্রতিবাদে সিলেটবাসীর গণঅবস্থান