দুর্বল ব্যাংকগুলোকে পর্যাপ্ত তারল্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, এসব ব্যাংকের পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়াতে পাঁচ থেকে দশ বছর সময় লাগতে পারে।

মঙ্গলবার রাজধানীর ইংরেজি পত্রিকা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের কার্যালয়ে ‘পাথ টু রিকভারি ফর ব্যাংকিং সেক্টর’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি।

গভর্নর বলেন, ‘প্রতিদিনই আমরা দুর্বল ব্যাংকগুলোর ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে বসছি এবং তাদের সবকিছু অবজার্ভেশন করছি। ইতিমধ্যে আমরা তাদের অনেক লিকুইডিটি সাপোর্ট দিয়েছি। তবে সম্পূর্ণ ক্যাপিটেলাইজ হয়ে রিকভার করতে এসব ব্যাংকের ৫ থেকে ১০ বছর প্রয়োজন। আমাদের দেশে যেসব ব্যাংক খারাপ অবস্থা থেকে উঠে এসে ভালো করেছে, তাদেরও মোটামুটি এমন সময়ই লেগেছে।’

আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, বাংলাদেশে এজেন্ট ব্যাংকিং খুবই ভালো করছে এবং শীঘ্রই এ খাতের ৫০ শতাংশ এজেন্ট নারীরা হবেন।

গভর্নর আরও বলেন, ‘আমাদের সরকারের বাজেটের ঘাটতি মেটাতে রেভিনিউ একমাত্র সমাধান। রেভিনিউ বাড়াতে পাড়লে আমাদের আইএমএফের দিকে তাকাতে হবে না। আমি ইতিমধ্যে আইএমএফকে বলেছি আমাদের আইএমএফের টাকা দরকার নেই।’

তিনি বলেন, ‘চলতি অর্থবছরে আমাদের প্রবাসী আয় হবে প্রায় ২৯ বিলিয়ন ডলার। এছাড়া রপ্তানি আয় যদি আমাদের ৫০ বিলিয়নও হয়, তারপরও আমাদের আমদানি বাবদ পরিশোধ করে ১০ বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত থাকবে।’

দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সম্পাদক ইনাম আহমেদের সঞ্চালনায় গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নেন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান শরীফ জহির, ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান এম এ মান্নান, ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ–আল মাসুদ, ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সেলিম আর এফ হোসেন, ইস্টার্ণ ব্যাংকের এমডি আলী রেজা ইফতেখার, সিটি ব্যাংকের এমডি মাসরুর আরেফিন, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, ব্যাংক এশিয়ার এমডি সোহেল আর কে হোসেন, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের এমডি মতিউল হাসান, আইএফআইসি ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মনসুর মোস্তফা প্রমুখ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক র এমড আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার

প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা। 

কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।

মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ। 

এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা। 

কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে। 

কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। 

ঢাকা/ইমরান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ